মাহবুব নাহিদ
কৃষি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিশেষ করে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দিন দিন কৃষি ব্যবস্থা বিভিন্ন কারণে হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। কমে যাচ্ছে কৃষি জমির পরিমাণও। নগরায়ণের তো অনেক উচ্চ পর্যায়ে আমরা পৌঁছে গেছি। নিশ্বাস নেয়ার জায়গাটুকুও যেন এখন নেই আর। আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস এখন দূষিত। বিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্রহণ করে বেঁচে থাকা এখন দ্বায় হয়ে গেছে।
বাচ্চাদের খেলাধুলার জায়গা খুঁজে পাওয়াও এখন দ্বায়। কৃষি জমি ধ্বংস করে তৈরি হচ্ছে রাস্তাঘাট, কল-কারখানা ইত্যাদি। তাই খাদ্যের নিশ্চয়তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে অনেক ভালোভাবেই। আর এমনভাবে চলতে থাকলে একদিন আমরা নিশ্বাস নেয়ার মতো অক্সিজেনটুকুও হারাব। একটু হাওয়া খাওয়ার জন্য বাগান থাকবে তবে তা হবে কনক্রিটের বাগান। খেয়ে যদি বাঁচতে হয় তাহলে কৃষিকাজ চালিয়ে যেতেই হবে। কিন্তু আমরা কি একবারও ভেবেছি যে নগরায়ণের মাঝেও লুকিয়ে আছে নিজের উদ্যোগে কৃষিকাজ করার সুযোগ?
আমাদের শহরের ছাদগুলোকে আমরা বিনাকাজে ফেলে না রেখে সেখানেই তো আমরা বাগান করে ফেলতে পারি। এতে করে কৃষিজমির অভাব অনেকটাই কমে যাবে। ইহাকে বাণিজ্যিকভাবে করা যাবে না, তবে যে বাসায় করা হবে তাদের তো নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা হবে। শুধু খাদ্য নয় অক্সিজেনের জোগান দিবে এই ছাদ বাগান। আর গাছপালা থাকলে নিজেদের মন-মানসিকতাও ভালো থাকে। ছাদে বাগান করার জন্য খুব বেশি পরিশ্রমের প্রয়োজন হবে না। শুধুমাত্র মাটি জোগাড় করাটাই একটু কষ্টের কাজ। এছাড়া অন্য সব কিছুই অনেকটা সহজ হবে। সবচেয়ে বড় কথা সকালে কিংবা বিকালে একটু মুক্ত বাতাস নিতে আসার ফাঁকে হয়ে যেতে পারে গাছে পানি দেওয়া। ছাদে শাক-সবজির পাশাপাশি ফুল বা ছোটখাট ওষুধি গাছ থাকতে পারে। একটা নিম গাছ থাকতে পারে যা আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান দিবে। বিভিন্ন ধরনের ছোটবড় সবজির গাছ লাগিয়ে নিজেদের খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে। ছাদে বাগানের ব্যবস্থাপনাও খুব সহজ।
ছাদকৃষি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ছাদকৃষির সাথেই আরেকটি নাম উঠে আসছে, সেটা হচ্ছে বনসাই। ছাদে রোপনের জন্য বনসাই সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। একটি বাসার ছাদেই হাজার হাজার বনসাই লাগানো যেতে পারে। বনসাই এখন মানুষ নিজেরাই তৈরি করতে পারছে। বনসাই করার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। অনেকেই আবার নিজের বাসার ছাদকে বানিয়ে ফেলেছে একটি সম্পূর্ণ কৃষিক্ষেত্র, একটি পরিপূর্ণ বাগান। যেখানে সব ধরনের গাছপালাসহ তৈরি করা হচ্ছে পুকুরও। সকালে ও বিকালে নিজে কাজ করলে শারীরিক ভালো ব্যায়ামও হবে। মূল ব্যাপার হচ্ছে বাজার থেকে কেনা সবজি বা তরকারিতে যে পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ দেয়া থাকে তা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়ার সুযোগ থাকে এই পদ্ধতিতে চাষ করলে। সবুজ রং দেখলেই মনে একটা প্রশান্তি আসে, আর আমরা যারা শহরে আছি তাদের জন্য সবুজ অনেকটা কল্পনার মতো। তাই বাড়ির ছাদেই একটা সবুজ দেখার জায়গা করে নিলে মন্দ হয় না। আসলে, সমস্যা অনেক আসবে কিন্তু সেগুলোকে মোকাবিলা করার মতো ব্যবস্থাও আছে। আমাদের শুধু একটু ভাবতে হবে আর সদিচ্ছা থাকতে হবে। তাহলেই সকল কিছুকে মোকাবিলা করা সম্ভব। তাই ইট পাথরের এই পৃথিবীতে কংক্রিটের বাগানের ওপরেই সবাই গড়ে তুলুক সবুজের সমারোহ।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড