রহমান জিল্লুর
শীতের মোহর
হৃদাকাশে ভেসে বেড়ায় একখণ্ড মেঘের কুণ্ডলী। ক্রুশবিদ্ধ যীশুর কষ্টের মতো মাটির বুকে অহরহ ঝরে পড়ে জলজ ফসিল।
ভাবছি, শ্রম আর ঘামের - ন্যায্যতা ফিরে পাবো এবার, শূন্যতায় পরি-পূর্ণ করে নিবো গোলাঘর।
অতঃপর, যারা বেদনা উল্লাসে গৃহত্যাগী সন্যাস হয়ে এসেছে ফিরে মদ আর আফিমের শহর ছেড়ে। এবং
সময়ের - অতল ছুঁয়ে জেনেছে যারা, জীবন মিথ্যে কভু প্রেম-বাক্য মিথ্যে নয়।
তাদের সকলের দু’হাত ভরে হৃদয় নিংড়ে ঢেলে দিবো শীতের মোহর।
তৃষ্ণা
এখনও সুগন্ধ ছড়ায় স্মৃতির বকুল প্রজাপতির স্বপ্ন ওড়ে চোখের আঙিনায়।
এখনও লোমশ বুকে ইতস্তত চলে ফিরে প্রণয় আঙুল।
এখনও মেঘের গভীরে ডুবে যেতে চায়, জলের শরীর।
এখনও প্রবাহিত- রক্তকনায় ভাঙনের তীব্র চিৎকার।
হে- নির্জন দুপুরী, এখনও অক্লান্ত সাঁতরাতে- ইচ্ছে করে অতল জলধি তোমার।
সহজ নিয়তি
বরং ভুলেই যাও, আঙুল থেকে ঝেড়ে ফ্যালো সব দেনা-পাওনার হিসেব, বিগত লেনদেন।
যেটুকু সৌরভ ছড়িয়ে আছে অসুখের ডালে রোজকার রোদ্দুরে পোড়ে খুঁজে নেবো পরিমিত অক্সিজেন।
স্মৃতির পাতায় রাঙাবো মরাল জীবন।
বরং ভুলেই যাও, চিরতরে মুছে ফ্যালো দুঃস্বপ্ন ভেবে,
সময়ের লিপস্টিকে ঢেকে নাও চুম্বনের ক্ষত।
আমি'তো ভালোবেসে শর্তহীন সঁপেছি হৃদয়। ওতে আমার কোন মালিকানা নেই এখন সমস্তটাই তোমার দখল।
চিরকালই কপাল পোড়া আমি-
কিছুদূর পথ হেঁটে হারিয়ে ফেলেছি তোমাকে।
অদৃশ্য বুনো বেড়াল
জলের দামে জীবন পোহাতে রাত খরচ করে যে নারী, বহু রোদ্দুর পথ পাড়ি দিয়ে তার- অস্তিত্ব ছুঁয়েছি।
প্রবাহমান রাত্রিসঙ্গমে জানতে চেয়েছি বীজের মধ্য থেকে কীভাবে জন্ম নেয় অরণ্য
জলকণা থেকে নভোনীল সাগর!
শিশির নিঃসৃত ভোরে খুব কাছে থেকে- দেখেছি, পণ্যজাত বাজার রাত্রিখোর জোনাকের উৎসব, অল্পমূল্যে বিক্রিত মাছের নগ্ন দেহ।
অতঃপর, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি... আড়ালে ওত পেতে আছে অদৃশ্য বুনো বেড়াল।
নিমন্ত্রণ
এসো, পুনর্বার বশী-ভূত করো প্রণয় মন্ত্রণায় মুখে পুরে দাও পিয়ালা বিষের।
কী যে দুঃসহবাসে দিন গ্যাছে আমাদের! ঝরে যাওয়া সময় থেকে মৃত্যুর- গন্ধ আসে আজও...
শোকের মাতমে ফেটে যায় কুসুম-হৃদয়।
এসো, পুনর্বার জাগিয়ে তুলো প্রলয় আসক্তি ভঙ্গুর করোটিতে বেড়ে উঠুক রক্তশ্বাস।
কী যে দুর্বিষহ শীতকাল আমার ভেতরে- অন্তরে, বৃত্তাকার ধেয়ে আসে- স্তব্ধ কুঁয়াশা...
এসো,
দেখে যাও স্মরণ আর সহানুভূতিতে এই মন্হর জীবন থেকে আমাকে মুক্তি দাও।
উপাসনা
হৃদয় মনোনীত একমাত্র উপাসনা তুমি। আমি দ্বীন প্রেমিক, গত জন্ম ধরে অপেক্ষায় জেগে আছি মৃত্যুদ্বীপে...
অকম্পিত বাতাসে ভেসে গেছে আমার জাহাজ, স্বপ্নের পাল ছিঁড়ে অসীম সমুদ্রে...
কিনারাহীন ভেসে ভেসে আর কতোদূর আর কতোটা জন্মান্তর পেরিয়ে পোতাশ্রয় ফিরে পাবো?
এই ভেবে, নিদ্রার গভীরে চিৎকার করে একটি ডাহুক। কুঁয়াশার প্রাচীর- ভেঙে পালাতে চায়...
ঠা ঠা রোদ্দুরে, ভরা ফসলের মাঠে বাঁকা আলপথ হেঁটে হেঁটে আঙুল ছুঁতে চায়- জলের চিবুক।
শুধু একবার, প্রীতি উদ্বেলিত- চোখ খুব কাছে থেকে তোমাকে দেখুক।
আরও পড়ুন : ভাদ্রের তুলোমেঘে উড়ে যায় সময়
ওডি/এসএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড