• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দুই ঈদে সড়কে ৩৬৯ জনের প্রাণহানি  

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ আগস্ট ২০১৯, ১৭:৪৪
সড়ক দুর্ঘটনা
সড়ক দুর্ঘটনা (ছবি : প্রতীকী)

পবিত্র ঈদুল আজহার নয় দিনের ছুটিতে সারা দেশে ১৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৮৫ জন নিহতসহ আহত হয়েছেন আরও ৩৫৫ জন। চলতি আগস্ট মাসের ১০ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ঈদুল ফিতরের চেয়ে ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। ঈদুল ফিতরে দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ১২৭টি। এতে নিহত হন ১৮৪ এবং আহত হন ৩৩২ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে দুই ঈদে সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬৯ জন।

শনিবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীম আলম দীপ সড়ক দুর্ঘটনার এই সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন।

বিভিন্ন পত্রিকা, পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ, স্বতন্ত্র অনলাইন নিউজ পোর্টাল, সংবাদ সংস্থা ও টেলিভিশন চ্যানেলের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে সারা দেশে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের ১২০টি শাখা সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাধ্যমেও সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

শামীম আলম দীপ জানান, ঈদুল ফিতরে সড়কপথে ঈদযাত্রা ছিল যতটা স্বস্তিদায়ক ঈদুল আজহায় এসে সেই ঈদযাত্রা ভোগান্তিতে পরিণত হয়। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে মানুষকে ঈদযাত্রায় বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। লম্বা সময়জুড়ে সড়কে যানবাহনকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

নিরাপদ সড়ক চাইয়ের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলা হয়, ঈদে উত্তরবঙ্গের সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে তিনটি সেতু (কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী) খুলে দেয়ায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামসহ পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যানজট হয়নি বললেই চলে এবং সড়ক দুর্ঘটনা এসব অঞ্চলে তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। তবে খুলনা ও যশোর অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনা কমেনি বরং বেড়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় ঈদুল ফিতরে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেশি থাকলেও এবার তা কমেছে বলে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ বিষয়ে বলা হয়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা কমলেও বাস দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এখনো সড়কে মোটরসাইকেল বিধ্বংসী বাহন হয়ে উঠেছে চালকের খেয়ালিপনাসহ নানা কারণে।

সড়কে যখন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার সমন্বিত উদ্যোগ চলছে তখন মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য এবং চালকদের বেপরোয়া হয়ে ওঠায় ভাবতে হবে সব মহলকে। বিশেষ করে অভিভাবকদের মোটরসাইকেল সন্তানের হাতে তুলে দেয়ার আগে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে ভাবতে হবে, সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলেরও ভাবতে হবে।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, এবার ৪০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ জন (চালক ও আরোহী)। ঈদুল ফিতরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ৪৫ এবং নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৮।

উবার ও পাঠাওয়ের মতো ইন্টারনেটভিত্তিক রাইড শেয়ারিং করা বাহনগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে এমন তথ্য তুলে ধরে শামীম আলম বলেন, অ্যাপসের কলিংয়ে সাড়া না দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী বহনের প্রবণতা তাদের মাঝে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এসব স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ এবং মনিটরিংয়ের আহ্বান জানাচ্ছি। নিসচা মনে করে, যদি এসব স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করা না হয় তাহলে সিএনজিচালকদের মতো এরাও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। এতে যাত্রীদের বিড়ম্বনাও বেড়ে যাবে।

তবে নৌপথে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াও ঈদযাত্রা ছিল অনেকটা স্বস্তিদায়ক বলে জানিয়ে তিনি বলেন, নৌপথে বেশকিছু নতুন লঞ্চ বহরে যুক্ত হয়। এবারও ঈদের আগের দিন সদরঘাট টার্মিনালে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এসব বিষয়ে আগামীতে নজর দিলে নৌপথ আরও যাত্রীবান্ধব হয়ে উঠবে।

রেলপথের বিষয়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রেলপথে বেশ কয়েক জোড়া নতুন বগি সংযুক্ত হলেও রেলপথে শিডিউল বিপর্যয় টিকিট কালোবাজারির কারণে যাত্রী হয়রানি বেড়েছে। অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে এবারও প্রযুক্তিগত সমস্যা ও শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে রেলের যাত্রীদের বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।

শামীম আলম দীপের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আয়ুবুর রহমান খান, সংগঠনটির উপদেষ্টা ম. হামিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদ হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মিরাজুল মইন জয়, যুগ্ম মহাসচিব বেলায়েত হোসেন খান নান্টু, প্রমুখ।

ওডি/এআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড