নিজস্ব প্রতিবেদক
বাবা ও মাকে হত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ঐশী রহমান আছেন কারাগারে। আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এক সময় ঐশী খুবই উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন। কারাগার সংশ্লিষ্টরা জানান, কারাগারে আজকে যে ঐশীকে দেখা যাচ্ছে, তিনি সেই ঐশী নন। তিনি আর আগের মতো আচরণ করছেন না, অনেকটাই পাল্টে গেছেন। মাঝে মধ্যেই অনুশোচনায় নিস্তব্ধ ও নির্বাক থাকেন। কনডেম সেলে তাকে প্রায়ই ফুপিয়ে কাঁদতে দেখা যায়। তিনি এখন নামাজ আদায় করেন।
কারাসংশ্লিষ্টরা আরও জানান, কলঙ্কিত নেশা এখন ঐশীর জীবন হতে অনেক দূরে, তার মধ্যে আর নেশার প্রভাব নেই, মেয়েটির জীবনের নেশার সমাপ্তি ঘটেছে। তিনি বর্তমানে বেশ স্বাভাবিক। কারাগারে নাওয়া-খাওয়ার ব্যাপারে প্রথম দিকে থাকা নাক ছিটকানো ভাবটাও নেই, খাবারের বিষয়ে বিশেষ মনোযোগীও না। তিনি এখন কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত। প্রায়ই অন্ধকার কারা প্রকোষ্ঠে তার চোখে অশ্রু ঝরে।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান ঢাকার চামেলীবাগে নিজ বাসায় খুন হন। এ মামলায় সাজা পেয়ে তাদের মেয়ে ঐশী এখন স্থায়ীভাবে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে বাসিন্দা।
অপরদিকে, বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেফতার নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বর্তমানে জেলার কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
জানা গেছে, কারাগারে মিন্নির জায়গা হয়েছে নারী ওয়ার্ডে। সেখানে মিন্নি ছাড়াও রয়েছেন ১৪ নারী বন্দি। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অন্য ১৩ আসামিও রয়েছেন একই কারাগারের বিভিন্ন সেলে। সেল ভিন্ন হলেও দিনের বেলায় তাদের দেখা হয়। কারাগারটি পরিসরে ছোট হওয়ায় আসামিদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। মিন্নি এটা নিয়ে অনেকটাই বিব্রত। যারা চোখের সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তারাই এখন সামনে ঘুর ঘুর করছে। বিষয়টি তাকে ভীষণভাবে কষ্ট দেয়।
এদিকে সোমবার (১২ আগস্ট) সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ মানে আনন্দ-খুশি। বিশ্বের মুসলিমরা ঈদের দিনটি আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করেন। কারাবন্দিদের জন্য দিনটি অন্য দিনের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম। বন্দিদের আনন্দ দিতে প্রতি বছরই নানা আয়োজন করে কারাগারগুলো। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মিন্নি-ঐশীসহ দেশের সব কারাগারের বন্দিদের জন্য খাবারসহ আনন্দের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা সূত্র জানায়, বন্দিদের ঘরের অনুভূতি দেওয়ার জন্য সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল সাতটায় তাদের স্ব স্ব সেলে মুড়ি, পায়েস আর সেমাই পাঠানো হয়। এরপর সকাল আটটায় কারাগারের ভেতরের ময়দানে ঈদুল আজহার একমাত্র জামাতে অংশ নেন কারাবন্দিরা। নারীদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। কারাগার মসজিদের নিয়মিত ইমাম ঈদ জামাতের ইমামতি করেন। জামাতের পরপরই তারা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। হাসি ঠাট্টায় মেতে ওঠেন। বন্দিদের জন্য দুপুরের মেন্যুতে রয়েছে সাদা ভাত, রুই মাছ আর আলুর দম। রাতের বিশেষ আয়োজনে তারা পাবেন পোলাও, কোরবানির গরুর মাংস (যারা গরুর মাংস খান না তাদের জন্য খাসির মাংস) ডিম, মিষ্টান্ন ও পান-সুপারি। রাতের খাবারের পর তাদের জন্য মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথাও রয়েছে। একইভাবে দেশের অন্য কারাগারগুলোতেও বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, ঈদ উপলক্ষে বন্দিরা কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পরিবারের আনা খাবার খেতে পারবেন।
ওডি/এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড