• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সড়কে অসহায় ঈদে ঘরমুখো মানুষ

রুটি-কলা খেয়ে গাড়িতে কাটল ১৬ ঘণ্টা

  সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ

১১ আগস্ট ২০১৯, ১৮:০০
মহাসড়কে ধীরে ধীরে চলছে গাড়ি
মহাসড়কে ধীরে ধীরে চলছে গাড়ি, ঈদে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কা (ছবি- দৈনিক অধিকার)

রাত সাড়ে ১০ টায় ঢাকা থেকে বাসে উঠে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় পৌঁছেছেন রাজশাহীর যাত্রী মারিয়া সুলতানা। রাত পোহালেই ঈদ এমন অবস্থায় তিনি জানেন না আর কতো সময় লাগবে ঘরে ফিরতে। তিনি জানান, খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় শুধু রুটি-কলা খেয়ে টানা ১৬ ঘণ্টা গাড়িতে বসে থেকেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো- টয়লেটের ব্যবস্থা নেই।

এদিকে সড়কে এমন অসহায় অবস্থার শিকার ঈদে ঘরমুখো দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে নারী যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে।

জানা যায়, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জ মহাসড়ক। এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তর-দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ২২ জেলার মানুষ ঈদে ঘরে ফেরে। প্রতিবছরই মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। এতে ভোগান্তি পড়তে হয় যাত্রীদের। ঢাকা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ফোরলেন হওয়ায় ওই অংশটুকুতে দ্রুতগতি যানবাহনগুলো এলেঙ্গা এসে একলেনে ঢুকে পড়ে। এতে একলেনে গাড়ির চাপ বেড়ে গিয়ে গাড়ির গতি কমে যায়।

সিরাজগঞ্জের নলকা ও হাটিকুমরুল এলাকার দুটি ঝুঁকিপূর্ণ সরু সেতুতে ওঠার সময় গাড়ির গতি একেবারে কমাতে হয়। এ কারণে যানবাহনগুলো বাম্পার টু বাম্পার লেগে কচ্ছপ গতিতে চালাতে হয়। এছাড়াও ছোট কোনো দুর্ঘটনা হলে গাড়ি মহাসড়কের দুপাশে আটকে যায়। ফলে দীর্ঘযানজট দেখা দেয়।

যানজটে স্থবির মহাসড়ক (ছবি- দৈনিক অধিকার)

রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে কখনো ধীরগতি আবার কখনো থেমে থেমে চলে যানবাহন। এ ছাড়াও রোদে পুড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস-ট্রাকের ছাদে ও পিক-আপে বাড়ি ফিরতে দেখা যায় যাত্রীদের। সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় রয়েছে নারী শিশুরা। না আছে খাবারের ব্যবস্থা, না আছে টয়লেটে যাওয়ার কোনো সুযোগ। ট্রাকে যাত্রীদের অনেককে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা গেছে। সঙ্গীরা তাদের মাথায় পানি ঢেলে এবং হাতপাখার বাতাস দিয়ে যাচ্ছেন।

মহাসড়কের সয়দাবাদ মুলিবাড়ি চেকপোস্ট এলাকায় কথা হয় নাবিল পরিবহনের সুপার ভাইজার তৌহিদুর রহমান, ডিপজল পরিবহনের আব্দুল মমিন, ট্রাকচালক জাহাঙ্গীর আলমসহ বেশ কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকের সঙ্গে। তারা বলেন, শনিবার রাত ১১ টায় ঢাকা থেকে গাড়ি ছেড়েছি। বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপাড় পুরো যানজটের মধ্য দিয়ে আসলেও সেতু পার হওয়ার পর যানজট কিছুটা কম। তবে একেবারেই ধীর গতিতে চলছে গাড়ি।

ট্রাকের ছাদে ও পিকআপে বাড়ি ফিরছেন মানুষ (ছবি- দৈনিক অধিকার)

এনা পরিবহনের যাত্রী মমনিুর রহমান জানান, রাত ৮ টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসে উঠেছি, যাব বগুড়ায়। এখন মাত্র সিরাগঞ্জের সয়দাবাদ এলাকায় আসছি। এখানে এসেও যানজটের মধ্যে আছি।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী জানান, মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। মহাসড়কে যানবহনের চাপ বেশি থাকায় ধীরগতিতে যান চলাচল করছে। পুলিশ-র‌্যাব কর্মীরা যানজন নিরসনের পাশাপাশি ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ যেন কোনো ভোগান্তিতে না পড়ে সে জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ওডি/এসএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড