• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গুজবে প্রাণ গেল ৫ জনের, আহত ২২ 

  অধিকার ডেস্ক

২১ জুলাই ২০১৯, ১৮:১১
গলা কাটা
ছবি : সংগৃহীত

‘পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে, এমন গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালকের পক্ষ থেকে এ ধরনের গুজবে কান না দিতে দেশবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে। তারপরও সাধারণ মানুষের আতঙ্ক কমেনি।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এলাকায় অপরিচিত কাউকে দেখলেই পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে সারাদেশে ২১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। আহত ২২ জন।

শনিবার(২০ জুলাই) রাজধানীর বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানকে ভর্তি করতে প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে যান মা তসলিমা বেগম রেনু। সেখানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান মা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণপিটুনির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় পুলিশ। তদন্ত করা হচ্ছে গণপিটুনির ইন্ধনদাতাদের শনাক্তে।

ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত মা তসলিমা বেগম রেনু (ছবি : সংগৃহীত)

এদিকে একই দিনে গণপিটুনিকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ উল্লেখ করে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। যেকোনো মূল্যে এই বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে কাজ করছে তারা।

এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল গণমাধ্যমকে রানা বলেন, একটি গুজব ছড়ানোকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে মর্মান্তিকভাবে কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজের শামিল। একই সঙ্গে গণপিটুনি দিয়ে মৃত্যু ঘটানো ফৌজদারি অপরাধ। এ পর্যন্ত যতগুলো নিহতের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে গণপিটুনি দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার আহ্বান জানান এআইজি সোহেল। তিনি বলেন, গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কাউকে ছেলেধরা সন্দেহ হলে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিন।

সারা দেশের প্রতিনিধিদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কুসম্বা ইউনিয়নের বুড়িদহ এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ছয় জেলেকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা।

টাঙ্গাইলে রবিবার (২১ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের কান্দিলা বাজারে ছেলে ধরা সন্দেহে অজ্ঞাত এক যুবককে গণপিটুনি দিয়েছে জনতা।

ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার অজ্ঞাত যুবক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

শনিবার (২০ জুলাই) বিকালে রাজশাহীর তানোরে ছেলেধরা সন্দেহে পৃথক স্থানে দুই যুবককে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী।

শনিবার (২০ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে গণপিটুনির পর পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।

শনিবার (২০ জুলাই) রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ছেলেধরা সন্দেহে রাসেল মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনির পর পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। আটক রাসেলের দাবি, তিনি ফুল ব্যবসায়ী। রাত সাড়ে ৯টায় ফতুল্লার শিহারচর লালখাঁ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

শনিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে পাবনার চাটমোহরে ছেলেধরা সন্দেহে রাসেল রানা (৩২) নামে এক যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।

আটক রাসেল (ছবি : দৈনিক অধিকার)

এছাড়া নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয়রা। এতে একজন যুবক নিহত ও আরেক নারী আহত হন। তবে তাদের গণপিটুনির পরও তারা ছেলেধরা কি-না সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

একই দিন সাভারের ফল ব্যবসায়ী রাসেল মিয়াকে, পাবনায় এক যুবককে, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এদিন সাভারের তেঁতুলঝোড়া এলাকায় এক শিশুকে বিস্কুট খাওয়ানোর সময় এক নারীকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়।

১৬ জুলাই চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকায় অপরিচিত হওয়ায় তিন ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেয়া হয়। ১১ জুলাই চাঁদপুরে মনু মিয়া (৪০) নামের একজনকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয়া হয়। পরে তদন্তে পুলিশ জানতে পারে মনু মিয়া মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। চালচলনে সন্দেহ হওয়ায় তাকে গণপিটুনি দেয়া হয়।

ওডি/আরএডি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড