• বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বেসরকারি চাকরিজীবী-বস্তিবাসীরাও পাবেন ফ্লাট-জমি : প্রধানমন্ত্রী

  অধিকার ডেস্ক

১৫ জুলাই ২০১৯, ১৬:৫২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি : পিআইডি)

পরিকল্পিতভাবে রাস্তা ঘাট ভবন তৈরি করতে পারলে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মানুষের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এবং সরকারি, বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বস্তিবাসীরাও ফ্লাটে বসবাস করার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহছাড়া থাকবে না। প্রতিটি মানুষ ঘর পাবে, জমি পাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই না সব শ্রেণির মানুষের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই উদ্যোগ নিয়েছি।’

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডে ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

এ সময় তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় গণপূর্ত অধিদফতরের ৪টি এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩টিসহ মোট ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

বস্তিতে বসবাসকারীদের জন্যও ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বস্তিতে মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করে কিন্তু এতেও উচ্চ হারে ভাড়া দিতে হয়। সেখানে অনেক বেশী টাকা ভাড়া দিয়ে খুব খারাপ অবস্থায় তাদের থাকতে হয়। কাজেই ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে বস্তিবাসীদের সেখানে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এই ভাড়াটা তারা প্রতিদিন হিসাবেও দিতে পারবে, সাপ্তাহিক হিসাবেও দিতে পারবে, মাসিক হিসাবেও দিতে পারবে। সে ধরনের ব্যবস্থা রেখেই বস্তিবাসীর জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করে তারা যাতে ফ্ল্যাটে ভাড়ায় থাকতে পারে, সেইভাবে একটা ব্যবস্থা আমরা করব।’ ইতোমধ্যে মিরপুরে ৫৩৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। আরও সাড়ে ১৬ হাজারের বেশী ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

দেশিদের অনুকরণে নয় বরং নিজ দেশের পরিবেশের কথা ভাবনায় নিয়ে ফ্ল্যাট ও ঘরবাড়ি নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু বিদেশিদের অনুকরণ করলে হবে না। আমাদের ঘন বৃষ্টির দেশ, আমাদের হিউমিডিটি বেশি, সেগুলো মাথায় রেখেই আমাদের মত করে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে ফ্ল্যাট বা বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা উচিত।

এসময় ঢাকার যানজট কমানোসহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘এই উন্নয়নটা শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক না। আমরা একেবারে প্রত্যেকটি মহানগর জেলা, উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ফসলি জমি রক্ষা করতে হবে। বাচ্চাদের খেলার মাঠ রাখতে হবে। চিত্ত বিনোদনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। আবার আবাসন সুবিধা গড়ে তুলতে হবে। শুধু টাকা হলেই যে যেখানে একখানা বিল্ডিং বানাবে বা কোথাও একটা ইন্ড্রাস্ট্রি বানাবে সেটা আমরা করতে দিতে চাই না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।’

এ লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলাসহ বিসিক শিল্প নগরীগুলোকে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এভাবে শিল্পায়নটাও পরিকল্পিতভাবে করা হবে। আর স্কুল-কলেজ যেগুলোই হোক না কেন, সেগুলি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে হতে হবে।’

ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা একটা বিরাট সমস্যা। যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসি, সচিবালয়ে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হল। সেই পানি যাওয়ার জায়গা নেই। কারণটা হল ঢাকা শহরে যতগুলি খাল ছিল অধিকাংশ খাল কিন্তু ভরাট করে ফেলা হয়েছে অথবা সেখানে বক্স কালভার্ট করা হয়েছে। এক-একজন মিলিটারি ডিটেকটর যখন ক্ষমতায় আসে, তারা দুইটি কাজ করে। একটা হল জলাশয় ভরাট করা অথবা বক্স কালভার্ট আর গাছ কাটা। এই ঢাকা শহরে একসময় প্রত্যেকটা আইল্যান্ডে গাছ ছিল। ফুলে ভরা থাকত। সেগুলো একেক জন একেকবার এসে কেটে ফেলেছে। মতিঝিলে বিশাল ঝিল ছিল, ওই ঝিল আমরা নৌকায় পাড়ি দিয়েছি। কিন্তু সেই ঝিল নামে কিন্তু ঝিলের কোন অস্তিত্ব নাই।’

তাই আমাদের দেশের আবহাওয়া জলবায়ুর কথা চিন্তা করে জলাশয়গুলি ভরাট করা চলবে না বলে জানান তিনি। ফ্ল্যাট বা ঘরবাড়ি নির্মাণের সময় পরিবেশগভাবে ও স্বাস্থ্যগত দিকগুলোর দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ারদের অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে দারিদ্র্যমুক্ত হবে, উন্নত হবে এবং সমৃদ্ধশালী হবে। আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব। এরই মধ্যে দেশকে ক্ষুধামুক্ত করেছি, আমরা দারিদ্র্যমুক্তও করতে চাই। যেন বাংলাদেশ এই অঞ্চলের সব থেকে সমৃদ্ধশালী উন্নত বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে উঠবে।’

এসময় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে যারা আবাসিক হিসাবে বসবাস করবেন তাদেরকে ফ্ল্যাটগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ যত্ন সহকারে নিজ নিজ দায়িত্বে রাখার অনুরোধ করেন এবং ভবনগুলোর অসম্পন্ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানান তিনি।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারসহ অন্যরা।

ওডি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড