• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রাণ-আড়ং-মিল্কভিটাসহ ৭ কোম্পানির দুধে ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিক

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ জুন ২০১৯, ১৮:৫৪
এন্টিবায়োটিক
এন্টিবায়োটিক উপস্থিতি রয়েছে এমন কয়েকটি দুধের মোড়ক (ছবি : সংগৃহীত)

মানবচিকিৎসায় ব্যবহৃত ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিক লেভোফ্লক্সসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ও এজিথ্রোমাইসিনের উপস্থিতি রয়েছে প্রাণ-আড়ং-মিল্কভিটাসহ ৭ কোম্পানির দুধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার ও ফার্মেসি অনুষদের গবেষণায় ফরমালিন ও ডিটারজেন্টও পাওয়া গেছে দুই কোম্পানির দুধের নমুনাতে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে অবস্থিত ফার্মেসি লেকচার থিয়েটারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সেন্টারের পরিচালক ও ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে দুধসহ সরিষার তেল, ফ্রুট ড্রিংকস, ঘি, গুঁড়া মশলা, শুকনা মরিচ, হলুদ, পাম অয়েলের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।

অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, আমরা সংগৃহীত নমুনার ফলাফল প্রকাশ করেছি। আমরা যে ফলাফল দিয়েছি তা নমুনার ফলাফল। তার মানে এই না যে ওইসব কোম্পানির সব পণ্যই এ রকম। আমরা কিন্তু থাকব না মরে যাব, যদি এভাবে যত্রতত্র এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার করা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের পরীক্ষায় পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার সবগুলোতেই মানবচিকিৎসায় ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক লেভোফ্লক্সসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ও এজিথ্রোমাইসিনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়াও অপাস্তুরিত দুধের একটি নমুনাতে ফরমালিনও পাওয়া মিলেছে। অন্য একটিতে পাওয়া গেছে ডিটারজেন্ট।

পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনা হলো- প্রাণ, আড়ং, মিল্কভিটা, ফার্ম ফ্রেশ, ইগলু, ইগলু চকোলেট ও ইগলু ম্যাংগো। রাজধানীর পলাশী, গাবতলী ও মোহাম্মদপুর বাজার থেকে এসব দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

বিএসটিআই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী দুধে ৩ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি ফ্যাট ইন মিল্ক থাকতে হবে। গবেষণায় পাস্তুরিত দুধের সাতটি নমুনার মধ্যে ছয়টিতেই এই পরিমাণে ফ্যাট ইন মিল্ক ছিল না। দুধে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশের বেশি সলিড নট ফ্যাট থাকতে হবে। কিন্তু বিশ্লেষণে এসব দুধের সবগুলোতেই ছিল কম। এছাড়া পাস্তুরিত দুধের একটি ও অপাস্তুরিত দুধের তিনটি নমুনাতে অতিরিক্ত এসিডিটি এনালাইসিস পাওয়া গেছে। পাস্তুরিত দুধের সবগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল টোটাল ব্যাকটেরিয়া কাউন্ট। আর নিয়ম অনুযায়ী স্টেফাইলোকক্কাস স্পেসিজ শূন্য থাকার কথা থাকলেও পাস্তুরিত দুধের পাঁচটিতেই ছিল অধিক জীবাণু। বিএসটিআই মানদণ্ড এসব দুধের সবগুলোই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মানোত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ।

ফ্রুট ড্রিংকসে বিএসটিআই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কৃত্রিম মিষ্টিকারক সাইক্লামেট ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও ১১টি পণ্যের সবগুলোতেই এর ব্যবহার ছিল অতিমাত্রায়।

যেসব ম্যাংগো ড্রিংকস নিরাপদ নয়- স্টারশিপ ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক, সেজান ম্যাংগো ড্রিংক, প্রাণ ফ্রুটো, অরেনজি, প্রাণ জুনিয়র ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক, লিটল ফ্রুটিকা ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক, সানড্রপ, চাবা রেড অ্যাপল, সানভাইটাল নেকটার ডি ম্যাংগো, লোটে সুইডেন্ড অ্যাপল ড্রিংক।

সয়াবিন তেলে বিএসটিআই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী অতিরিক্ত অ্যাসিড ভ্যালু, স্যাপনিফিকেশন ভ্যালু, পারক্সাইড ভ্যালু পাওয়া গেছে। আয়োডিন ভ্যালু আটটি নমুনার চারটিতে কম ও একটিতে বেশি পাওয়া গেছে। আটটি নমুনাতেই অতিরিক্ত জলীয় উপাদান পাওয়া গেছে।

যেসব সয়াবিন তেল নিরাপদ নয়- রূপচাঁদা, ফ্রেশ, পুষ্টি, তীর, এসিআই পিওর, ভিওলা, মুসকান ও মিজান।

ঘিয়ে বিএসটিআই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী জলীয় উপাদান ও আয়োডিন ভ্যালু যতটুকু থাকার কথা রয়েছে তার চেয়ে অধিক উপস্থিত রয়েছে। তিলের তেলের কোনো উপস্থিতি না থাকার কথা থাকলেও এসব পণ্যের সবগুলোতেই এর উপস্থিতি ছিল। যেসব ঘি নিরাপদ নয়- বাঘাবাড়ি, প্রাণ, মিল্কভিটা, মিল্কম্যান।

ওডি/আরএডি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড