• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

'গাড়ি ছেড়ে সাইকেল চালাও, নয়তো হাঁটো'

  সৈয়দ মিজান

১৯ জুন ২০১৯, ২০:৫৫
কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স
আন্তর্জাতিক কারফ্রি সিটিস এলায়েন্সের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজন করা হয় র‍্যালির (ছবি : সংগৃহীত)

ঢাকা শহরে দিন দিন জ্যামের পরিমাণ বাড়ছেই। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত মানুষ আর গাড়ির চাপ নিতে পারছে না এই শহরটি। ফ্লাইওভার বা নতুন ধরনের ট্রাফিক ব্যবস্থা দিয়েও কূল পাওয়া যাচ্ছে না। বেড়েই চলেছে জ্যাম। শহরের জ্যাম কমানোর জন্য গাড়ির বিকল্প বাহন হতে পারে সাইকেল। এই চিন্তাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ১৯ জুন বুধবার রাজধানীতে হয়ে গেল আন্তর্জাতিক কারফ্রি সিটিস এলায়েন্সের শুভ উদ্বোধন।

বুধবার সকাল ১১টায় আন্তর্জাতিক কারফ্রি সিটিস এলায়েন্সের উদ্বোধন উপলক্ষে আবহানী মাঠের সামনে থেকে ১৬টি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য সাইকেল ও রিকশা র‍্যালি আয়োজন করা হয়। 'গাড়ি ছেড়ে সাইকেল চালাও, নয়তো হাঁটো', 'ব্যক্তিগত গাড়ি নয়, প্রবেশগম্য গণপরিবহণ চাই' লেখা ব্যানার এবং ফেস্টুন নিয়ে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ এই র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করে।

এ সময় বিশাল একটি ব্যাক্তিগত গাড়ির ছবি কেটে র‍্যালির যাত্রা শুরু করে। আইডাব্লিউবির নির্বাহী পরিচালক দেবরা ইফরইমসনের সভাপতিত্বে র‍্যালির পূর্বে সংক্ষিপ্ত পথসভার আয়োজন করা হয়। পথসভায় বক্তব্য রাখেন- ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ রহমান, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা রেহেনা আক্তার এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।

দেবরা ইফরইমসন বলেন, 'ব্যক্তিগত গাড়ি শুধু ঢাকার মানুষের জীবনকে দূর্বিষহ করছে না, সারা পৃথিবীতে ব্যক্তিগত গাড়ির মাত্রারিক্ত ব্যবহার মানুষের নানা সমস্যা তৈরি করছে। ফলে দেশে দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে আন্দোলন জোরালো হচ্ছে। এ বাস্তবতায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে পৃথিবীর ১২ দেশের বিভিন্ন সংগঠন একযোগে কাজ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক কারফ্রি সিটিস এলায়েন্সের যাত্রা শুরু করল।'

তিনি আরও বলেন, 'দেশে দেশে সরকার ব্যক্তিগত গাড়িবান্ধব অবকাঠামো তৈরিতে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। কিন্তু সরকারের উচিত হেঁটে চলাচল, নৌপথ যাতায়াত ব্যবস্থা, গণ পরিবহন, পরিবেশবান্ধব সাইকেল ও রিকশায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে বেশি বিনিয়োগ করা। কারণ ব্যক্তিগত গাড়ি কোনোভাবেই নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে পারে না। বরং পরিবেশ দূষণ, যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। তাই নিরাপদ শহর গড়তে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ এখন সময়ের দাবি।

আলোচনায় মারুফ রহমান বলেন, 'ঢাকায় মাত্র ৯ ভাগ যাতায়াত হয় ব্যক্তিগত গাড়ির মাধ্যমে। কিন্তু শহরের মোট রাস্তার ৭০ ভাগ দখল করে নিয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি। যদিও বলা হয়ে থাকে যানজটের অন্যতম কারণ রিকশা। এটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে।'

তিনি জানান, 'ঢাকার যে সকল রাস্তায় রিকশা বন্ধ করা হয়েছে, সে সকল রাস্তায় গাড়ির গতি আগে থেকে অনেক কমেছে। যেমন মিরপুর সড়কে রিকশা বন্ধের আগে গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় ১৭.৪ কিমি। এখন তা মাত্র ৫ কিমি থেকে ৭ কিমি।'

বক্তারা আলোচনায় বলেন, ঢাকার বাস্তবতায় ব্যক্তিগত গাড়ি আদর্শবাহন নয়। ব্যক্তিগত গাড়ি যানজট বৃদ্ধি, পরিবেশ দূষণ ও সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি করছে। সারা পৃথিবীতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে, গণপরিবহনের মান উন্নয়ন করা হচ্ছে। নিরাপদ শহর গড়তে বাংলাদেশেও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তারা।

বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর ১২ দেশে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কারফ্রি সিটিস এলায়েন্সের যাত্রা শুরু হয়েছে। দেশগুলো হলো- ভারত, নেপাল, ভিয়েতনাম, অস্টেলিয়া, নেদারল্যান্ড, কানাডা, উগান্ডা, তানজেনিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্স, আমেরিকা। বাংলাদেশে ঢাকা ছাড়াও ২০ জেলায় আন্তর্জাতিক কারফ্রি সিটিস এলায়েন্সের পক্ষ থেকে র‍্যালি, পথসভা, অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

ওডি/এসএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড