সাহিত্য ডেস্ক
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে স্মার্টফোন আমদানির ওপর আরোপ করা বাড়তি ১৫ শতাংশ বর্ধিত কর প্রত্যাহার চেয়েছে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। জাতীয় প্রেসক্লাবে বুধবার (১৯ জুন) ২০১৯-২০ সালের প্রস্তাবিত বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরে বিএমবিএ সভাপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু।
তিনি বলেন, ‘নতুন আমদানি শুল্ক ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে বাধা তৈরি করবে। অবৈধভাবে স্মার্টফোন আমদানি উৎসাহিত হবে। এতে করে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়বে।’
নতুন শুল্ক কাঠামো বাস্তবায়ন হলে বছরে প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকার অর্থপাচার হওয়ার শঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে বিএমবিএ সভাপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু বলেন, কেবল অর্থ পাচার নয় সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে যাবে। বছরে প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে সরকার। যেখানে আমদানি শুল্ক কমালে সরকারে বাড়তি ১,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ হলো প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী সরকার যে হারে আমদানি শুল্ক নিবে এতে করে অবৈধভাব স্মার্টফোন আমদানি আরও বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ মোবাইলফোন ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা বক্তব্যে বলা হয়েছে, ‘মূল্যবৃদ্ধির ফলে স্মার্টফোন ক্রেতাসাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির সুযোগ হাতছাড়া হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্মার্টফোনের মাধ্যমে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা বৃদ্ধির গতি হবে শ্লথ। সরকারের চালু করার নতুন প্রযুক্তি (ফোরজি, এলটিই) সেবা থেকে বঞ্চিত হবে নগর থেকে গ্রাম- সবখানের মানুষ। এটি সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে বিরাট অন্তরায়'।
বর্তমানে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্কের কারণে স্মার্টফোন আমদানিতে মোট করের পরিমাণ ৩২ শতাংশ। প্রস্তাবিত ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়ন করলে সর্বমোট করের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫৭ শতাংশ। এতে করে আমদানি করা স্মার্টফোনের মূল্যবৃদ্ধি পাবে। আমরা আশঙ্কা করছি, মূল্যবৃদ্ধির ফলে স্মার্টফোন ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাবে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যাও ক্রমাগত হ্রাস পাবে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পথে বড় অন্তরায়। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী সংখ্যা ২০ শতাংশ। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এর গড় ৫১ শতাংশ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রদেয় স্মার্টফোন কর ৩১.৭৫ শতাংশ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী কর হবে ৫৭.৩১ শতাংশ; যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি এবং বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি।
সেখানে আরও বলা হচ্ছে, আমদানি নির্ভর মোবাইল শিল্পের সাথে দেশের প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও লক্ষাধিক পরিবার পরোক্ষভাবে জড়িত। স্মার্টফোন আমদানীর ওপর অতিরিক্ত ২৩ শতাংশ করারোপের ফলে এসব পরিবারের ভবিষ্যৎ ও জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
বাংলাদেশে ৯০ শতাংশেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। মোবাইল ফোনের সঙ্গে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন, শিক্ষাব্যবস্থা, কৃষি উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, ই-কমার্স, রাইড শেয়ারিংসহ অনেক সেবা জড়িত। এ অবস্থায় যদি স্মার্টফোন আমদানির উপর অতিরিক্ত শুল্ক ও কর আরোপ করা হয়, তাহলে পুরো শিল্পই হুমকির মুখে পড়বে।
ওডি/টিএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড