ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকুন, এসএসএফকে প্রধানমন্ত্রী

দেশি-বিদেশি যেকোনও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে এসএসএফ অফিসার্স মেস-এ এসএসএফ-এর ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসের ধরণ পাল্টে যাচ্ছে, নতুন প্রযুক্তি উন্নয়নের যাত্রাপথকে গতিশীল করার পাশাপাশি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, অসামাজিক কাজসহ নানা অপরাধে সম্পৃক্তদের ক্ষেত্রেও নতুন সুযোগ তৈরি করছে। অপরাধীদের নতুন প্রযুক্তিগত দক্ষতা মোকাবিলায় এসএসএফ সদস্যদের আরও পারদর্শী ও যুগোপযোগী হতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের কারণে দেশের মানুষের জীবন-মান উন্নত হচ্ছে। এ প্রযুক্তি জীবনযাত্রা ও উন্নয়নের ধারাকে অগ্রগামী করছে, পাশাপাশি বিভিন্ন ঝুঁকিও সৃষ্টি হচ্ছে।

সরকারপ্রধান এসএসএফ সদস্যদের আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠে এ প্রযুক্তিকে যারা মন্দ কাজে ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এসএসএফকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। এ বাহিনীতে নতুন প্রযুক্তির সন্নিবেশন ঘটানোর পাশাপাশি প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় অপরাধের পরিবর্তীত অবস্থার বিষয়েও প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। এর জন্য যেকোনও অবস্থা মোকাবিলার সরঞ্জামাদিও প্রয়োজন। যখন যা দরকার সেটির ব্যবস্থা করছি, অনেক ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েও করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা, আন্তর্জাতিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে দেশি ও বিদেশি যেকোনও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে এসএসএফ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর ১৯৮১ সালে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফেরার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেদিন দেশের মাটিতে পা রেখেছি; সেদিনই আমি মৃত্যুকে হাতে নিয়ে এসেছি। বলতে গেলে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই এসেছি। যেকোনও মুহূর্তে হয়ত আমাকে হত্যা করা হতে পারে, মারা যেতে পারি, সেটা জেনেই কিন্তু আমি এসেছি।

তিনি বলেন, কেন এসেছি, তার কারণ হচ্ছে একটি স্বপ্ন, যে স্বপ্নটা জাতির পিতা দেখেছিলেন দেশের মানুষকে ঘিরে, যে বাংলাদেশের মানুষকে তিনি সুখী-সমৃদ্ধশালী করবেন। তাদের জীবন উন্নত করবেন। দুঃখ দারিদ্র্যের হাত থেকে তাদের মুক্তি দেবেন। সেই চিন্তাটাই তিনি করেছিলেন। তার সেই স্বপ্ন পূরণ করা কর্তব্য হিসেবে আমি নিয়েছি।

দেশে ফিরে আসার পর বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হওয়ার কথা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সময়টুকু আমি পাব; দেশের জন্য কাজ করব। এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয়ও করি না।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএসএফ এর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান। তিনি বক্তব্যে বাহিনীর নানা কর্মকাণ্ড বিস্তারিত তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, তিনবাহিনী প্রধান, মুখ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা,পদস্থ সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং এসএসএফ-এর সদস্যরা।

ওডি/এমআর