বঙ্গবন্ধু থেকে শিশুদের শিক্ষা নিতে হবে : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে জাতীয় শিশু আইন -১৯৭৪ প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি শিশুদের অনেক ভালবাসতেন। শিশুকাল থেকেই জাতির পিতা দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতেন ও তাদের সাহায্য করতেন। এমনকি তিনি একজন গরিব লোককে তাঁর পরনের শার্ট খুলে দিয়েছিলেন এবং শার্ট ছাড়াই বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা শিশুদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন। তিনি অত্যন্ত সাহায্যকারী এবং অসামান্য নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন। তোমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।

বুধবার (১২ জুন) বিকালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা-২০১৯’ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি ২৩৭ জন বিজয়ীর ৩০ জনের মাঝে পুরস্কার ও পদক বিতরণ করেন।

অভিভাবকদের উদ্দেশে আব্দুল হামিদ বলেন, শিশুদের পড়াশুনা অথবা অন্যান্য কোন বিষয়ে চাপ দেবেন না। তাদের প্রতিভা বিকাশের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করুন। শুধুমাত্র জিপিএ-৫ এর পিছনে না ছুটে শিশুদের জন্য প্রকৃতি থেকে শিক্ষা লাভের এবং প্রয়োজনীয় মানবিক মূল্যবোধের সাথে বেড়ে উঠার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলেই শিশুরা দেশ ও জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে।

রাষ্ট্রপ্রধান ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই শিশুদের মাঝে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ ঘটানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, তোমাদের (শিশু) অবশ্যই দেশকে ভালবাসতে শিখতে হবে। কখনো অন্যায় ও অসত্যের সাথে আপোষ করবে না। যদি তুমি সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চল, তবে জীবনে সফল হতে পারবে।

রাষ্ট্রপতি হামিদ ২০২১ সালে দেশের স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি ও ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কথা উল্লেখ করে শিশুদের কাছে দেশের স্বাধীনতা ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে উৎসাহিত করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।

শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ও সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য জ্যেষ্ঠ নাগরিক, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামী থেকে মুক্ত থাকতে পাঠ্যসূচির মাধ্যমে শিশুদের মাঝে সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকের শিশু আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। তারা দেশশ্রেম, বাংলা ভাষা, মুক্তিচিন্তা ও মানবিক নৈতিক মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে বাঙালী সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, বিশিষ্ট সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর পরিচালক আনজির লিটন। মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ শেষে রাষ্ট্রপতি বিজয়ীদের সঙ্গে ছবি তোলেন।

ওডি/ আরএইচএস