কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রচণ্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদ উল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
বুধবার (৫ জুন) শোলাকিয়ায় ১৯২তম পবিত্র ঈদ উল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১০টায়। ইমামতি করেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
প্রবল বৃষ্টি মাথায় নিয়েই মুসল্লিরা ঈদগাহে প্রবেশ করেন। সবমিলে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া অপেক্ষা করেই মুসল্লিরা খোলা আকাশের নিচে নামাজ আদায় করেছেন।
এদিকে ঈদের জামাত নির্বিঘ্ন করতে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তা বলয়ে প্রথম বারের মতো ছিল স্নাইপার রাইফেল, ড্রোন ক্যামেরাসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জাম।
কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বপাশে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ৬ একর জমির ওপর ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের অবস্থান। প্রায় আড়াই’শ বছরের পুরনো এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন শহরের হয়বতনগরের তৎকালীন জমিদার বাড়ির লোকজন।
শোলাকিয়া ঈদগাহে বড় জামাতে লাখো মুসল্লির সাথে ঈদের নামাজ আদায় করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। এই প্রত্যাশায় প্রতি বছর ঈদের সময় এখানে ঢল নামে দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লির। অনেকে বংশ পরম্পরায় ঈদের নামাজ পড়ে আসছেন এ মাঠে। দূরের মুসল্লিদের অনেকে চলে আসেন ঈদের আগেই। ঈদগাহে লাইন টানা, দেয়ালে চুনকাম,ওজুখানা মেরামতসহ শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। ঈদগাহ কমিটির পক্ষ থেকে দূরের মুসল্লিদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে থাকা-খাওয়ার।
২০১৬ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে এবার নেয়া হয়েছে, নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিপুল সংখ্যক র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হবে ৫ প্লাটুন বিজিবি। নিরাপত্তার স্বার্থে জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু সাথে নিতে পারবেন না মুসল্লিরা।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, মুসল্লিদের নিরাপত্তায় কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ঈদের দিন শুধুমাত্র জায়নামাজ ছাড়া মুসল্লিরা অন্য কিছু সাথে নিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন।
তিনি জানান, মাঠের সাধারণ প্রস্তুতি ছাড়াও দফায় দফায় সভা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।র্যাব-পুলিশ ছাড়াও ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি আরও জানান, এবারও তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজে অংশ নেবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশ নেয়ার জন্য দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, ঈদগাহের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, পুলিশের ৩২টি নিরাপত্তা চৌকি ছাড়াও ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকছে স্ট্রাইকিং ফোর্স। চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে হবে । ঈদগাহ ও আশপাশের আকাশে নজরদারি করবে শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরা।
এদিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ঢল নামে। বৃষ্টির কারণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিছুটা দেরিতে। সকাল ৬টা থেকে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা।
ঈদের প্রধান এই জামাতে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মন্ত্রিসভার সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা। নামাজে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমের জ্যৈষ্ঠ পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।
ওডি/এআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড