নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
সোমবার (২৭ মে) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার সাইট ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, আইএস ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। সাইট ইনটেল গ্রুপের অ্যাকাউন্ট থেকে এ দায় স্বীকারের কথা জানিয়ে টুইট করা হয়েছে।
রবিবার রাতের ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন নারী সহকারী উপপরিদর্শক ও একজন রিকশা চালক আহত হন।
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল রাজধানীর গুলিস্তানে ককটেল বিস্ফোরণে তিন পুলিশ আহত হওয়ার দায়ও স্বীকার করেছিল আইএস। আইএস এর দাবির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছিল। তবে ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই গতরাতে মালিবাগে আবারও পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা হামলার ঘটনা ঘটল।
এদিকে সোমবার সকালে ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, একটি স্বার্থানেষী মহল জনমনে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এ ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে এটি সাধারণ ককটেলের চাইতে শক্তিশালী। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বোমাটি গাড়িতে পেতে রাখা হয়েছিল। সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত রিকশাচালক লাল মিয়াকে দেখার পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এর আগে রবিবার (২৬ মে) রাতে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে নাশকতার উদ্দেশ্যে হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না এমন কথা জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে। বিস্তারিত দেখার পর এক্সপার্টরা বলতে পারবে, বিস্ফোরকটি ছুড়ে মারা হয়েছে, নাকি আগে থেকেই পুঁতে রাখা ছিল।
যেখানে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে এটি পুলিশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান এমন কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে পাশেই রয়েছে সিটি এসবি অফিস ও সিআইডি অফিস। এই মোড়ে সবসময় পুলিশের গাড়ি স্ট্যান্ডবাই থাকে৷ রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিস্ফোরণটি ঘটে। পাশে ট্রাফিক পুলিশের একজন নারী সদস্য ঘটনাস্থলে ডিউটিতে ছিলেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন পুলিশ সদস্য ও একজন রিকশা চালক আহত হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মালিবাগ মোড়ের ঘটনায় কারা জড়িত ছিল তা সুনির্দিষ্টভাবে এখনো বের করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এই ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা ঠিক হবে না।
উল্লেখ্য, রবিবার রাত ৯টায় মালিবাগ মোড়ে সিএনজি পাম্পের বিপরীতে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব (সবুজবাগ) বিভাগের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা খাতুন, রিকশাচালক লাল মিয়া আহত হন।
ট্রাফিক পুলিশের পূর্ব বিভাগের (সবুজবাগ) সার্জেন্ট এনামুল হক জানান, মালিবাগ মোড়ে দায়িত্বরত অবস্থায় পুলিশের গাড়ির পাশে একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এতে পাশে থাকা এএসআই রাশেদা ও রিকশাচালক আহত হন। রাশেদার বাঁ পায়ে ও রিকশাচালকের মাথায় আঘাত লেগেছে।
আহত রাশেদা জানান, তিনি রাস্তায় দায়িত্বরত ছিলেন। এ সময় একটি ককটেল তার পাশেই বিস্ফোরিত হয়। এতে তার পায়ে আঘাত লাগে। পাশে পুলিশের গাড়ির পেছনে কিছুটা আগুন ধরে যায়।
এদিকে মালিবাগে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলার ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। আগুন ধরে যাওয়া পুলিশের গাড়ির চালক কনস্টেবল শফিক বলেন, ফ্লাইওভারের ওপর থেকে কে বা কারা কী যেন ছুড়ে মারে। এতে মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ধরে যায়। এ সময় আশপাশের দালানের গ্লাসও ভেঙে গেছে।
আহত রিকশাচালক লাল মিয়া জানান, তার বাসা তেজকুনিপাড়ায়। রিকশা নিয়ে মালিবাগ মোড়ে বসেছিলেন। এমন সময়ে বিস্ফোরণ হয়। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে। তবে কাউকে দেখেননি তিনি।
ওডি/এআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড