অধিকার ডেস্ক
ইফতার অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে ভালো এবং বেশি আইটেমের খাবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাসহ অন্যান্য কমিশনাররা খেলেও তাদের অধীনস্থ সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খেয়েছেন দুর্বল আইটেমের ইফতার।
ইফতার আইটেমে বৈষম্য তৈরি হওয়ায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিলেও এ বিষয় কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দেখা যায়, বর্তমান এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনারসহ বড় কর্মকর্তারা ১৪ আইটেমের ভালো খাবার খেলেও তাদের অধীনস্থ সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেওয়া হয়েছে ১১ আইটেমের ভিন্ন খাবার। অথচ একই ছাদের নিচে ইফতার করেছেন তারা সবাই।
মঙ্গলবার (২১ মে) নির্বাচন ভবনের ফোয়ারা চত্বরে এই ইফতারের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সাবেক অনেক নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তা, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাব প্রধান বেনজীর আহমদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ অনেকে ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সবাইকে নিয়ে ইসির কর্মকর্তারা ভালো ১৪ ধরনের আইটেম দিয়ে ইফতার করলেও অন্যদের জন্য বরাদ্দ ছিল ১১ ধরনের আইটেম।
খাবারের তালিকা থেকে জানা যায়, কমিশনারদের চোখে ‘সাধারণ’ মানুষদের জন্য ট্যাংয়ের শরবত বরাদ্দ থাকলেও তারা সেই শরবতের পাশাপাশি খেয়েছেন পোস্তা বাদামের শরবত। বাড়তি হিসেবে ছিল লাল আঙুর আর চিকেন ভুনা। কিন্তু সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব খাবার পাননি। ভিন্ন মেনুতে তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল ট্যাংয়ের শরবত আর মাটন তেহারির প্যাকেট।
সেই ইফতার পার্টিতে অংশ নেওয়া একযুগেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচন কমিশনের বিট করা কাজী হাফিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই এমনটা সম্ভব। পবিত্র রমজানের ইফতার অনুষ্ঠানে এক ছাদের নিচে বসে আজ সাধারণ খাবারের অতিরিক্ত হিসেবে নিজেরা খেলেন পোস্তা বাদামের শরবত, লাল আঙুর আর চিকেন ভুনা। কমিশন সচিবালয়ের উঁচুপদের কর্মকর্তারাও এই বিশেষ ভোগ থেকে বঞ্চিত হননি। কিন্তু সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারী আর সাংবাদিকরা এসব খাবার পেলেন না। ভিন্ন মেনুতে তাদের জন্য বরাদ্দ ট্যাংয়ের শরবত আর মাটন তেহারির প্যাকেট। নির্বাচন কমিশনার আর কমিশনের উঁচুপদের কর্মকর্তাদের মেনুর সাথে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের মেনুটা পড়লেই বৈষম্যটি বুঝতে পারবেন। সৌভাগ্যবানদের জন্য ১৪টি আইটেম আর হতভাগ্যদের জন্য ১১টি।’
তার এই স্ট্যাটাসের পর একাধিক নেতিবাচক মন্তব্য পড়েছে। সেখানে কাজী তোফায়েল আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, ‘মাত্র তিন আইটেম কম। দিনকে তো রাত করেনি। এরা তো দিনের ভোট রাতের আঁধারে সম্পন্ন করতে পারঙ্গম।’
মশিউর খান নামে একজন লিখেছেন, ‘ধর্ম পালনেও বৈষম্য? এরই নাম ইসি (ছি: ছি:)।’
মাহবুব জুয়েল লিখেছেন, ইফতার নিয়েও তারা এমন অবিবেচকের মতো কাজ কীভাবে করলো!!
মিসবাহ শিমুল নামে একজন ওই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন, ‘আমাদের নির্লজ্জ কমিশন অনেক নিরপেক্ষ, দয়া করে কেউ অপবাদ দিবেন না...।
এস এম নুর মোহাম্মদ নামে একজন লিখেছেন, ‘এটা খুব দোষের বলে মনে হয় না। তারা যে এক ঘণ্টা দেরিতে দেয়নি সেটাই বা কম কিসে। কারণ তারা দিনের ভোট রাতে নেওয়ার নজির স্থাপন করেছে। সেটা মাথায় রাখা উচিৎ।
তবে এসব বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনার ও বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক মাহবুব তালুকদার বলেন, এই ধরনের বৈষম্যের কথা আমার জানা নেই। আর আমি জানতামও না কার কার কী কী ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ধরনের বৈষম্য হয়ে থাকলে সত্যিই তা দুঃখজনক।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড