অধিকার ডেস্ক ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৫৫
নাগরিক সেবা আরও বৃদ্ধি করার জন্যে ঢাকা জেলা প্রশাসনকে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম এই চার ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনকে বিভক্ত করার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। নাগরিক সেবা বৃদ্ধি করার জন্য এর আগে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।
চিঠি পাওয়ার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রকিব হোসেনের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২৮ এপ্রিল এই কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন করে প্রতিনিধি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চারটি অনুবিভাগের প্রধান উপস্থিত থাকবেন। তারা বিভক্তকরণের রূপরেখা চূড়ান্ত করে প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) ফারুক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে যথাযথভাবে নাগরিক সেবা দিতে নানা জটিলতা এবং সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া সহজ করতে ঢাকা জেলা প্রশাসনকে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কর্তপক্ষ জানায় এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ঢাকা জেলার বাসিন্দারা নির্ধারিত পয়েন্টে গিয়ে সহজেই নাগরিক সেবা ও সুবিধা পাবেন। চার অঞ্চলে বিভক্ত করার পর প্রতিটি পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি অন্যান্য দপ্তর ও সংস্থার সেবাও মিলবে সহজে।
প্রত্যেক পয়েন্ট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি)। চার পয়েন্টের সমন্বয়ক ও প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে থাকবেন ঢাকার জেলা প্রশাসক (ডিসি)। এ জন্য পর্যাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের পাশাপাশি স্থাপন করা হবে ১৫-২০ তলা কমপ্লেক্স ভবন।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য ১৯ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মো. শাফায়াত মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে ঢাকা জেলা প্রশাসনকে ভাগ করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়েছে- বর্তমানে ঢাকা জেলার মোট জনসংখ্যা (ভাসমানসহ) প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ। এই জনসংখ্যা দেশের সবচেয়ে ছোট জেলা মেহেরপুরের ২০ গুণ। গাজীপুর জেলার পাঁচ গুণ, কুমিল্লা ময়মনসিংহের তিন গুণ, চট্টগ্রামের দুই গুণ। বেশিরভাগ জেলার ক্ষেত্রে ১০-১৫ গুণ। অথচ মেহেরপুরসহ উল্লিখিত জেলাগুলোতে জনগণকে সরকারি সেবা প্রদানের জন্য যে সব সুবিধা রয়েছে ঢাকা জেলায় তার চেয়ে কিছুটা বেশি সুযোগ-সুবিধা থাকলেও জনসংখ্যানুপাতে তা যথেষ্ট নয়।
এ ছাড়া দেশের অন্য যে কোনো জেলার চেয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাজের পরিধি অনেক বেশি। ফলে এই বিপুল জনসংখ্যাকে নির্ধারিত ও অনির্ধারিত সেবা দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা হিমশিম খাচ্ছেন। সেবার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে পুলিশের জনবল ও অবকাঠামো যথেষ্ট পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বিপুল জনসংখ্যার সেবা নিশ্চিত করতে হলে ভূমি রাজস্বসহ অন্যান্য সরকারি সেবা-সংশ্নিষ্ট জনবল ও অবকাঠামো বৃদ্ধি করা একান্তই আবশ্যক। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদানের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে পরিবর্তন এনে ঢাকা জেলাকে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম পয়েন্টে ভাগ করা যেতে পারে।
এদিকে মন্ত্রিপরিষদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, অন্য সব জেলার চেয়ে কাজের পরিধি ও জনবল বিবেচনায় ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাজের চাপ অনেক বেশি। প্রতিনিয়ত এই চাপ আরও বাড়ছে। তাই ঢাকা জেলা প্রশাসনের জনবল ও অবকাঠামো দ্রুত বৃদ্ধি করা জরুরি।
ওডি/এসএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড