• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মঙ্গল শোভাযাত্রার খরচের জোগান হয় কীভাবে?

  নাবিলা বুশরা

০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১২:১১
চারুকলা
নতুন বছর বরণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় চলছে প্রস্তুতি

প্রতি বছর বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে আয়োজিত নতুন বর্ষবরণ উৎসবের নাম ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। রাজধানীর শাহবাগ-রমনা এলাকায় প্রতি বাংলা বছরের প্রথম দিন এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ বিভাগ। শোভাযাত্রায় বহন করা হয় বিভিন্ন ধরনের প্রতীকী শিল্পকর্ম। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর এই 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে। কিন্তু প্রতি বছর এত বড় একটি আয়োজনের জন্য কীভাবে অর্থ সংগ্রহ করা হয়? কীভাবে নির্ধারণ করা হয় এই শোভাযাত্রার জন্য নির্দিষ্ট বাজেট?

চারুকলা

এই বিষয়ে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় জানা গেলো, পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট বাজেট নেই। এমনকি এই আয়োজনের জন্য তারা সরকারের কাছ থেকেও কোনো অনুদান নেন না। বৈশাখের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই আয়োজনের জন্য কখনও কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কারও মুখাপেক্ষী হননি। তাদের নিজেদের পরিশ্রমেই জোগান হয় এই শোভাযাত্রার সকল খরচ। বৈশাখকে কেন্দ্র করে তৈরি করা মাটির পটচিত্র আর নানা পণ্য বিক্রি করে ফান্ডে টাকা জমানো হয়। কখনই কোনো বাণিজ্যিক উদ্যোগ থেকে নয়, বরং নিতান্তই মনের খোরাকের জন্য এই কাজ করেন তারা।

চারুকলা

এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগান হচ্ছে- ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে’। এই স্লোগানকে সামনে রেখেই আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চারুকলার শিক্ষার্থীরা।

চারুকলা

জানা যায়, প্রতি বছর এই আয়োজনের জন্য একটি ব্যাচ দায়িত্ব পায়। এবারের আয়োজক চারুকলার ২১তম ব্যাচ। তবে আয়োজন একটি ব্যাচের দায়িত্বে থাকলেও অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে শোভাযাত্রার বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।

চারুকলা

কথা হচ্ছিল ২৩ তম ব্যাচের মিমের সাথে। আয়োজক দলে না থাকলেও গত কয়েকদিন ধরেই তিনি মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য বানানো জিনিসের কাজ করে যাচ্ছেন। কাজগুলো নিতান্তই ভালোবাসার জায়গা থেকে করা বলে জানান মিম।

চারুকলা

সরেজমিনে দেখা যায়, মুখোশ বানানো, রং করা থেকে শুরু করে নানান কাজে শিক্ষার্থীরা এ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। হাতে আঁকানো মাটির পটচিত্র, মুখোশ, কাগজের পাখি, পাখা ইত্যাদি ইতোমধ্যে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া মুখোশের সঙ্গে বানানো হচ্ছে পেঁচা, বাঘ-সিংহ, ময়ূর, ইঁদুর, হাঁস, ষাঁড়, প্রজাপতি, সূর্য ইত্যাদি প্রতীকও।

স্টলে সবকিছু দেখাশোনা করার জন্য আছেন চারুকলা অনুষদের প্রিন্ট মেকিং বিষয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অদ্রিয়ন্তী রায় ঊর্মি। বিক্রি বিষয়ে তিনি জানান, 'বিক্রি খুব বেশি পরিমানে না হলেও শুরু হয়েছে। আর ২-১ দিনের মাঝেই বিক্রির পরিমাণ বাড়বে। শেষ মুহূর্তে আশানুরূপ বিক্রি হয় সবকিছু।'

চারুকলা

চারুকলার একজন সাবেক শিক্ষার্থী জানান, মনের আনন্দেই এই রঙের কাজ করা। মনের ভাব আমরা তুলে ধরি মাটির পটে। চারুকলায় সবাই মনের আনন্দে কাজ করে। এখানে কাজের জন্য বাধাধরা কোনো নিয়ম নেই। শুধু মূল থিম নির্ধারণের জন্য একটি নির্দিষ্ট ব্যাচের কমিটি থাকে। তাদের নেতৃত্বে বাকি কাজ হয়। সবাই সানন্দে সেটি মেনে নেয়। অনেক শিক্ষার্থী নিজের পকেট থেকেও টাকা দেয়। তবে সরকার বা অন্য কোনো জায়গা থেকে অনুদান নেওয়া হয় না কখনোই। এমনটি হলে এই আনন্দের মাঝে রাজনীতি চলে আসবে। আর সেটি চায় না এখানকার সাথে সংশ্লিষ্ট কেউই।

প্রতি বছরের মত এবারের চাওয়াও সকল অমঙ্গল কেটে গিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা মঙ্গল বয়ে আনুক সবার জন্য।

ওডি/এএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড