অধিকার ডেস্ক ০৩ মার্চ ২০১৯, ১০:৪৫
বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস আজ। ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে আন্তর্জাতিক বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদের বাণিজ্য সম্মেলনে ৩ মার্চকে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানানো হয়।
এ দিবসের মূল লক্ষ্য বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদকূলের প্রতি গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা। প্রতি বছর এ দিবস উপলক্ষে প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয় সময়ের সঙ্গে সংগতি রেখে।
এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- 'মানুষ ও পৃথিবীর জন্য জলজ প্রাণী'। (Life below water: for people and planet)
সমুদ্রে প্রাণের প্রথম বিকাশ ঘটায় জলেই ছিল প্রাণের সবচেয়ে বেশি বিচরণ। এই জলরাশির মাঝেই লুকিয়ে আছে মূল্যবান আর সুন্দর অনেক বস্তু।
আমাদের বঙ্গোপসাগরে রয়েছে জলজ ও খনিজসম্পদের স্বর্গরাজ্য। এখানে রয়েছে নীল তিমি থেকে শুরু করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র্র ফাইটোপ্লাঙ্কটন।
অথচ এই সামুদ্রিক পরিবেশ বাঁচিয়ে না রাখতে পেরে দিন দিন আমরা হারাচ্ছি আমাদের অস্তিত্ব। সমুদ্রের পানিতে নানা ধরনের বর্জ্য ফেলায় পানির নিচের প্রাণিরা হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ।
ইউএনডিপির ব্যুরো ফর পলিসি অ্যান্ড প্রোগ্রাম নোট এবং জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাবডুলায়ে মার ডাইয়ে বলেন, 'আমাদের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে সমুদ্র, বেঁচে থাকার জন্য শ্বাসকার্যে ব্যবহৃত মোট অক্সিজেনের অর্ধেক এখান থেকেই উৎপন্ন হয়।'
শুধু তাই নয়, পুষ্টি চাহিদা পূরণে আমাদের প্রধান উৎস এই সামুদ্রিক মাধ্যম। এছাড়াও নির্গত মোট কার্বন ডাই অক্সাইডের ৩০ ভাগ শোষণ আর বিশ্বজুড়ে উৎপাদিত তাপের ৯০ ভাগ নিয়ন্ত্রিত করে এই সমুদ্র।
মহাসাগর আর সামুদ্রিক প্রজাতি রক্ষায় প্রাকৃতিক সমাধানই একমাত্র মাধ্যম জলজ প্রাণিকে বাঁচিয়ে রাখার। এ লক্ষ্যে কাজ করতে হবে দেশের সকল নাগরিককে।
জলজ জীবন রক্ষায় শুধু সামুদ্রিক প্রাণিই নয়, অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে বন্যপ্রাণিরাও।
আন্তর্জাতিক সংস্থা দি এনভায়রনমেন্টাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (ইআইএ) প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় দুই হাজার কোটি ডলার বা ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার অপরাধ সংঘটিত হয় বন্যপ্রাণীকে ঘিরে।
চলতি মাসে ট্রাফিকের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০০৬ সাল থেকে আফ্রিকার ৪১ দেশ থেকে ১৩ লাখ প্রাণি ও উদ্ভিদ এবং ১৫ লাখ চামড়া ও দুই হাজার কেজি মাংস ও অন্যান্য অংশ এশিয়া ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় ১৭ দেশে পাচার হয়েছে। প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে ২০০৬-১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বণ্যপ্রাণী পাচারের বিষয় পর্যবেক্ষণ করে।
বাংলাদেশের প্রাণি পাচারের ক্ষেত্রে ইআইএ জানায়, বাংলাদেশ থেকে প্রতি ধনেশ পাখি ৫০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়। আরও রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় মদনটাক। যার দাম পড়ছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
প্রতিটি বাঘের চামড়া পাচারে দর ধরা হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা। পাচারে বাঘের হাড়ের কেজি ৩৫ হাজার টাকা ও হাড়ের গুড়া বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা কেজি দরে। রয়েছে বাঘের চোখ জোড়াও। যার দর দাম ২০ হাজার টাকা। এর পাশাপাশি মেছো বাঘ ও বনবিড়ালের চামড়া বিক্রি হয় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দরে।
এই সকল পাচার রোধ না করা গেলে স্থল প্রাণিরাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। অস্তিত্ব সংকটে পড়বে মানব জাতি। এ সংকট থেকে পরিত্রাণ পেতে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে সকলকে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড