অধিকার ডেস্ক ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৪৪
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ‘সদিচ্ছা’ নিয়ে কাজ করতে ধনী দেশগুলো ও বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের যথেষ্ট বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং অর্থায়ন রয়েছে। আমাদের এখন কেবল প্রয়োজন সমাজের সর্বত্র ধনী শ্রেণির ইচ্ছা ও প্রচেষ্টা।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনের একপর্যায়ে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ এজ এ সিকিউরিটি থ্রেট’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এই আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক অব্যাহত উষ্ণতা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তন মানুষের জন্য সত্যিকার এক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে সাইক্লোন, ঝড় জলোচ্ছ্বাস ও মৌসুমি বন্যা মানুষের জীবন জীবিকার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয় কারও কোনো সন্দেহ থাকলে বাংলাদেশে এসে প্রকৃত অবস্থা দেখে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনে কারণে লাখ লাখ মানুষ পৈতৃক ভূমি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। নদী ভাঙন, লবণাক্ত পানি ও ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিকের মিশ্রণের কারণে এসব ঘটছে।
বঙ্গোপসাগরে পানিতে অ্যাসিডিটি বাড়ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যদিও বৈশ্বিক উষ্ণায়নে বাংলাদেশের ভূমিকা সামান্যই।'
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ুর এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিশ্বে চাল ও মাছ উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সবজি উৎপাদনে পঞ্চম ও হর্টিকালচারে শীর্ষ দশের মধ্যে রয়েছে।
বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নতুন রোগ-ব্যাধি বাড়ছে। বাংলাদেশ থেকে ম্যালেরিয়া সফলভাবে নির্মূল করা হলেও সেটি আবার ফিরে আসার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। একই ধরনের রোগ-ব্যাধি বাড়ছে খাদ্যশস্য, পশুসম্পদ ও পোল্ট্রিতে। তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের প্রজননও হুমকির মুখে পড়েছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিশ্বের কাছে জাদুকরী পরিবেশবান্ধব পাটের আঁশ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজস্ব উদ্যোগে বৈরি অবস্থায় টিকে থাকার উপযোগী শস্যের জাত উদ্ভাবন করেছি।'
ব্রিটিশ আবহাওয়া অফিস ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এক দশককে ১৫০ বছরের মধ্যে উষ্ণতম দশক বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে। জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্যে জীবনযাত্রা, আচরণ, পদ্ধতি ও অর্থনীতিতে পরিবর্তনের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব সম্পদ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন তহবিল গঠনের পাশাপাশি অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি বাস্তবায়নে ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফান্ড গঠন করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় জিডিপির ১ শতাংশ ব্যয় করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জার্মানির পোস্টডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট পরিচালক হানস জোয়াকিম। অংশ নেন নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইনে ইরিকসন, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর শেলডন হোয়াইটহাউস, গ্রিনপিস ইন্টারন্যাশনালের কো-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বুন্নি ম্যাকডিয়ারমিড। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডয়চে ভেলের চিফ পলিটিক্যাল করসপন্ডেন্ট বার্লিন ম্যালিন্ডা ক্রেনি রোর্স।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড