• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্বাধীনতার ৪৮ বছরে কেমন বাংলাদেশ চাই?

  রাকিবুল হাসান তামিম

২২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:৪২
বাংলাদেশ
লাল সবুজের বাংলাদেশ (ছবি : সংগৃহীত)

১৯৭১ থেকে ২০১৯ সাল, এক কথায় ৪৮ বছর হয়ে গেল বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার। স্বাধীনতার ৪৮ বছরে সবুজের রঙে আলোকিত প্রিয় বাংলাদেশের অর্জন কম নয়। শিক্ষা, অর্থনীতি, শিল্প-বাণিজ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ সব সেক্টরে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের আবির্ভাব যেমন ছিল যুগান্তকারী ঘটনা, তেমনি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে এখন পর্যন্ত দেশকে বদলে দিতে মানুষের লড়াই অবিরাম অন্তহীন চলছে।

দেশের জনসংখ্যার বড় একটি অংশ তরুণ প্রজন্ম। এই তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভাবনাকে ধারণ করার শপথ শিখতে হবে আগামি দিনের দেশ গড়ার কাণ্ডারিদের। পাশাপাশি দেশটাকে সুন্দর করতে সার্থকভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মানসিকতা ধারণ করতে হবে অন্তরে।

স্বাধীনতার ৪৮ বছরে কেমন বাংলাদেশ চাই?

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের বিভিন্ন শ্রেণিতে অধ্যায়নরত তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে দৈনিক অধিকারের এমন প্রশ্নের উত্তরে ওঠে এসেছে তাদের মতামত আর স্বপ্নের কথা।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক অধিকারের ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান তামিম.....

ফৌজিয়া ইসলাম সুমি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় :

হাঁটি হাঁটি পা পা করে পেরিয়ে গেছে স্বাধীনতার ৪৮টি বছর, কিন্তু সময়ের সমান্তরালে স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা পূর্নতা পায়নি। এই দেশের নাগরিক হিসেবে আমারও কিছু চাওয়া আছে, আছে নিজস্ব কিছু ভাবনা, যা আমি মনে করি সামগ্রিক তরুণ সমাজেরই ভাবনা। আমি এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে সবুজের ওপর নিশ্চিন্তভাবে দেশের প্রতিটি মানুষ হেঁটে বেড়াবে। স্বপ্ন দেখি মানুষের নিরাপত্তায় আমার বাংলাদেশ প্রথম। সেই বাংলাদেশ চাই যেখানে ক্ষুধিতের কান্না কেউ শুনবে না কখনও। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তরুণদের কাঁধে ভর করে এগিয়ে যাবে আমার দেশ।

এ দেশের মানুষের একতা , দেশপ্রেম হবে উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার। এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে অস্ত্র কী তা কেউ বুঝবে না, শিক্ষাই হবে একমাত্র চালিকাশক্তি। এমন একটি দেশ যেখানে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না, মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করাই হবে মানুষ হিসেবে সবার দায়িত্ব। এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে বেকারত্বের মতো অভিশাপকে মুছে ফেলা হবে। বেকারত্ব একটি দেশের বিষফোঁড়া। দেশের প্রতিটি বেকার প্রাণের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করলেই কেবল প্রকৃত মুক্তি সম্ভব। প্রাণ ভরে শ্বাস নেবার ক্ষমতা থাকবে কেবলএকটি দেশেরই। আর ঐ বাংলাদেশই চাই আমি, আমরা সবাই।

বাংলাদেশ

ফৌজিয়া ইসলাম সুমি

এইচ এম হামিদুর রহমান, ঢাকা কলেজ :

বিজয়ের ৪৮ বছরে আমার ভাবনা হলো ১৭ বছরে বাংলাদেশের যেটা হতে পারতো তা ৪৮ বছরেও হয়নি বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে। এখন আমরা সেই অপূর্ণতা পূরণ করতে চাই। দেখতে চাই বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ সিস্টেমের দ্বারা পরিচালিত হতে। দেখতে চাই ঢাকা শহরকে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকার ওপরের দিকে, কিন্তু আজও ঢাকা শহর বসবাস অযোগ্য শহরের তালিকার ২য় অর্থাৎ শীর্ষে বলা যায়। দেখতে চাই বাংলাদেশের শিক্ষার মানের উন্নতি। আমাদের স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে, কিন্তু শিক্ষার গুণগত মানের উন্নতি হয়নি। আমাদের দেশের মানবসম্পদকে কর্মদক্ষ করে বিভিন্ন কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু সহজলভ্য ও বাধ্যতামূলক করতে পারেনি। পরিশেষে বলতে চাই, উপরোক্ত চাওয়া বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশভাগ। একটি পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি।

বাংলাদেশ

এইচ এম হামিদুর রহমান

আয়েশা খাতুন, মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট :

স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল। স্বাধীন হলাম। একের পর এক বছর অতিক্রম হতে হতে আজ বিজয়ে ৪৮ বছরে দাঁড়িয়েছে আমাদের বাংলাদেশ। সুন্দর আর স্বপ্নের যে বাংলাদেশের স্বপ্ন শহীদেরা দেখেছেন সম্ভবত তার ধারে কাছেও আমরা যেতে পারিনি। দেশের সার্বিক উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হলো বেকারত্ব। দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শিক্ষিত যুবকদের বেকারত্ব। কর্মমুখী আর যুগোপযোগী শিক্ষার অভাবে দেশে দিনের পর দিন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলছে। অনুন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষার অভাব, দুর্বল ইংরেজী জ্ঞান যা সৃষ্টি করছে নানা রকম সামাজিক সমস্যা।

এক্ষেত্রে কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে-

  • ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে হবে
  • ঘরে ঘরে বসে থাকা শিক্ষিত মহিলাদের ব্যাপকভাবে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত করার মাধ্যমে তাদেরকে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম করে তুলতে হবে
  • বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য খণ্ডকালীন কর্মস্থানে সুযোগ তৈরি করতে হবে। যাতে ভবিষ্যৎ এ কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড এ কাজ করতে পারে
  • বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজেগুলোতে ইংরেজী মাধ্যমে অনার্স চালু করতে হবে। পাশাপাশি সেমিস্টার পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার নতুন মাত্রা যোগ করতে হবে
  • অ্যাকাডেমি শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্যান্য বিষয়ে যেমন, ইন্টার পার্সনাল ও এনালাইটিক্যাল স্কিল বাড়াতে হবে
  • বাংলাদেশ বিভিন্ন অঞ্চলের পলিটেকনিক, কলেজগুলোতে প্রকৌশল শিক্ষার গুণগত মান ও দক্ষতা বাড়াতে হবে

সর্বোপরি কর্মমুখী কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ

আয়েশা খাতুন

সাদ কবির, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় :

বিজয়ের ৪৮ বছরে বাংলাদেশ এগিয়েছে বহুদূর। স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব দেশ হিসেবে সামনের দিনগুলোতে আরও আলোক উজ্জল পাখায় ভর করে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা করি। যেমনটি স্বপ্ন দেখতো বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী নেতার সেই বাংলাদেশের জন্যে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে। শিক্ষা, দক্ষতার মাধ্যমে উন্মোচিত করতে হবে সম্ভাবনার দ্বার। তবেই দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত বিজয় হবে।

বাংলাদেশ

সাদ কবির

সাবিত মিয়া, ঢাকা কলেজ :

পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ। কালে কালে বেলা গড়িয়েছে অনেক। ১৯৭১ থেকে ২০১৯। সেই তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি, কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে ধনী-গরিব সকল জনসাধারণের চিন্তার বিষয় হলো ঢাকাসহ অন্যান্য শহরাঞ্চলের যানজট। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই দুর্বলতার কারণে প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের মূল্যবান সময় হারাচ্ছি। যা খুব ভালো করেই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, আমরা সময়কে কতটুকু মূল্যয়ন করছি।

বাংলাদেশ

সাবিত মিয়া

সুতরাং আমি একটি যানজট মুক্ত বাংলাদেশ চাই, যেন জনসাধারণের মূল্যবান সময় যাত্রাপথে নষ্ট না হয়। আমার মতে, এতে দেশের উন্নয়ন আরো অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে যদি সময়ের অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়।

লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড