নির্বাচন জটিল অসুখে আক্রান্ত: ইসি মাহবুব

নির্বাচন এখন কতিপয় জটিল অসুখে আক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

তিনি বলেন, এমন ​জটিল অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গণতন্ত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন। একক ডাক্তারের পক্ষে একে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব নয়।

রবিবার (১০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের নিজ কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার বলেন, মৃত্যুপথযাত্রী গণতন্ত্রকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো এখন একান্ত অপরিহার্য। এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা গণতন্ত্রহীন নির্বাচন চাই কিনা।

ইসি মাহবুব তালুকদার বলেন, গত ৭ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচন আমি নিজে পরিদর্শন করেছি। ইভিএমে ভোট গ্রহণে এখানে ২০ ভাগ ভোট পড়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ থাকলেও ভোটের টার্ন আউট এত কম হওয়ায় জনগণের নির্বাচন বিমুখতা আমাকে হতাশ করেছে। অপরদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ৭০ ভাগ ভোট পড়েছে। এ বৈষম্য কেন হলো এর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা দরকার।

তিনি বলেন, এখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিভিন্ন জনের তর্ক-বিতর্ক তুঙ্গে রয়েছে। গত ৫০ বছরে সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন প্রণয়ন করা হয়নি। এটা বাধ্যতামূলক হলেও সব ক্ষমতাসীন সরকার এটা লঙ্ঘন করে গেছে। সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা থাকলে এই আইন করা অনস্বীকার্য। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সব দলের সমঝোতা ছাড়া এ ধরনের আইন করা অসম্ভব। এছাড়াও শুধু আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়। আইন প্রণয়ন নির্বাচনের অন্যতম বা প্রধান সোপান হলেও অবশ্যই তা সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।

আরও পড়ুন: করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যু আরও কমল

তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতার পূর্বশর্ত ছিল গণতন্ত্র। সংবিধানের ৪টি মূলনীতিতে গণতন্ত্র সন্নিবেশিত হয়েছে। স্বাধীনতার ৫ দশক পরেও আমরা যদি অন্ধকার ঘরে একটি কালো বিড়ালের মতো গণতন্ত্রকে খুঁজে ফিরি, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? একজন ভোটার বাড়ি থেকে বেরিয়ে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ইচ্ছামতো ভোট প্রদান করে নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসবেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র কি এই আকাঙ্ক্ষাটুকু পূরণ করতে পারবে না?

ওডি/ আজীম