• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে ফের রেজুলেশন

  নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ নভেম্বর ২০২০, ১৪:২০
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প (ছবি: সংগৃহীত)

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে টানা চতুর্থবারের মতো রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত রেজুলেশন গ্রহণ করা হয়। বুধবার বিপুল ভোটে রেজুলেশনটি গৃহীত হয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী প্রতিনিধির অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক জাতিসংঘ রেজুলেশনটিকে ধারাবাহিকভাবে সমর্থন জানানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে রেজুলেশনটি উত্থাপন করে, যাতে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে ১০৪টি দেশ। এটি মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ অন্যান্য সহিংসতার শিকার নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিম ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি জাতিসংঘের বিপুল সংখ্যক সদস্য রাষ্ট্রের শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও অকুণ্ঠ সমর্থনেরই বহিঃপ্রকাশ।

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের সাময়িক আদেশ, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের তদন্ত শুরুর বিষয় এবং রোহিঙ্গা ও অন্য সংখ্যালঘুদের মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে বঞ্চিত করার মতো নতুন বিষয়গুলো উঠে এসেছে এবারের রেজুলেশনটিতে।

এছাড়া রেজুলেশনটিতে মিয়ানমারকে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে। বিষয়গুলো হলো−রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানসহ সমস্যাটির মূল কারণ খুঁজে বের করা, প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা, প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির পদক্ষেপ হিসেবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার বাস্ত্যুচুত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও আশ্রয়দানের ক্ষেত্রে যে অনুকরণীয় মানবিক দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে রেজুলেশনটিতে।

এছাড়া কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মতো বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বড় আশ্রয় শিবিরে কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তার রোধে বাংলাদেশ সরকারের সফল প্রচেষ্টার স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে এতে। বাংলাদেশ গৃহীত মানবিক প্রচেষ্টায় সমর্থন প্রদানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে রেজুলেশনটিতে।

এই রেজুলেশন বাংলাদেশসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারকে নতুনভাবে চাপ সৃষ্টি করবে মর্মে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে চলমান বিচার ব্যবস্থা এবারের রেজুলেশনের ফলে আরও বেশি আন্তর্জাতিক সমর্থন পাবে মর্মেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘এক মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয়দানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজছে। যা নিহিত রয়েছে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মধ্যে।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, রোহিঙ্গা সংকটের জরুরি সমাধানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানকে রেজুলেশনটি জোরদার করবে, যে সংকটের শেকড় সম্পূর্ণভাবে মিয়ানমারেই নিহিত।

রেজুলেশনটি ভোটে দেওয়ার আগে এর সমর্থনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে জার্মানের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ওআইসি’র পক্ষে সৌদি আরবের স্থায়ী প্রতিনিধি বক্তব্য প্রদান করেন।

আরও পড়ুন : 'ব্লু ইকোনমি' দেশের অন্যতম ...

তারা আশা প্রকাশ করেন, রেজুলেশনটি মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দীর্ঘকাল ধরে চলমান দুর্দশা মোকাবিলায় অবদান রাখবে; নিজ বাসভূমিতে নিরাপদভাবে এবং নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করবে এবং মিয়ানমারকে চ্যালেঞ্জসমূহ কাটিয়ে উঠতে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ ঘটাতে সাহায্য করবে। তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব ইস্যু সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড