মসজিদে এসি বিস্ফোরণ, লাশের মিছিল বেড়ে ১৭

এশার নামাজ চলাকালে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বিস্ফোরণের ঘটনায় রাসেল (৩৪) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৭ জনের মৃত্যু হলো।

শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাসেলের মৃত্যু হয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ২০ জন।

এর আগে একই দিন বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. নয়ন (২৭) ও কাঞ্চন হাওলাদার (৫৩) নামে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

বিকালে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত অন্যরা হলেন- রিফাত (১৮), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮), সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপরী (৭২), হুমায়ুন কবির (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), জুয়েল (৭), জয়নাল আবেদিন (৪০) ও মাইনুদ্দিন (১২)। নিহত ১৭ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম মৃত্যু হয় জুয়েল নামের এক শিশুর। এরপর রাতে ও সকালে অন্যদের মৃত্যু হয়। মৃতের তালিকায় রয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিনও।

এর আগে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে এশার নামাজ চলাকালে শহরের তল্লা বাইতুস সালাম মসজিদে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা ৩০ থেকে ৪০ জনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তাদের অনেকেই দগ্ধ ও আহত ছিলেন। আহতদের শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল ও ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

ভর্তির পর রাতেই ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, এখন পর্যন্ত ৩৭ মুসল্লিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবারই ডিপ বার্ন রয়েছে। তবে শতাংশের হিসেবে কোন রোগীর কতটুকু বার্ন হয়েছে তা তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, কেউ শঙ্কামুক্ত নন।

আরও পড়ুন : বিস্ফোরণের ঘটনায় কেউ শঙ্কামুক্ত নয় : ডা. সামন্ত লাল

এ দিকে, প্রাথমিকভাবে তদন্ত শেষে এসি নয় বরং গ্যাসলাইন থেকে মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি একথা জানান।

ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের ঘটনায় এরই মধ্যে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস একটি, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ একটি ও জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।