• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

করোনা ভেঙে দিয়েছে কারাগারের ঐতিহ্য  

  অধিকার ডেস্ক

০২ আগস্ট ২০২০, ১৭:৫১
করোনা
ছবি : সংগৃহীত

ইদের তিন দিন কারাগারে বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকেন বন্দিরা। এরমধ্যে রয়েছে— বাড়ি থেকে পাঠানো পরিবারের তৈরি খাবার ও নতুন কাপড় গ্রহণ এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ। আইনি নিয়ম না হলেও ইদের সময় কারাপ্রথা হিসেবে চলে আসছে এটি।

দেশের সব কারাগারের বন্দিরাই এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে এবারই ঘটলো দীর্ঘ ঐতিহ্যের ব্যতিক্রম। করোনা মহামারির কারণে ইদের সেই বিশেষ সুবিধা মেলেনি কোনও বন্দির।

কারা অধিদফতর জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে বন্দিদের সঙ্গে সব ধরনের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ। তাই পরিবারের তৈরি খাবার বন্দিদের সরবরাহ করা হয়নি। বন্দিরা কারাগারের তৈরি বিশেষ খাবার খেয়েছেন। এছাড়াও ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন।

কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। এই কারাগারে বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার বন্দি রয়েছেন। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দিদের সঙ্গে তাদের পরিবারের সদস্যদের দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে। তাই ইদেরর খাবারও সরবরাহ করা হয়নি।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘কারাগারে বন্দিদের করোনার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কারা অধিদফতর বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো— বন্দিদের দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ। এছাড়াও ঈদের দিন বিশেষ সুবিধা হিসেবে বন্দিরা পরিবারের কাছ থেকে যে খাবার পেতো, গত ইদুল ফিতর থেকে আমরা বাইরের খাবার প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছি। তাই এবারের ইদেও পরিবারের খাবার সরবরাহ করা হয়নি।’

তিনি জানান, বন্দিরা সবাই কারাগারে তৈরি বিশেষ খাবারই খেয়েছেন। ইদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তৈরি খাবারের মধ্যে সকালের মেন্যুতে ছিল— পায়েস ও মুড়ি, দুপুরে ভাত, রুইমাছ ও আলুর দম এবং রাতে ছিল— পোলাও, মুরগি ও গরুর মাংস। এছাড়াও রাতে মিষ্টি ও পান দেওয়া হয়েছে।

জেলার মাহবুবুল বলেন, ‘আমরা বন্দিদের জন্য কারাগারের ভেতরে বিশেষ দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করানোর চেষ্টা করেছি। বন্দিরাও সহযোগিতা করেছেন। করোনাভাইরাসের মহামারিতে সব কিছুতেই প্রভাব পরেছে। তাই কারাগারে থাকা বন্দিদের ওপরও তার প্রভাবে পড়েছে। তাদের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ বন্ধ হলেও মোবাইল ফোনে সপ্তাহে একজন বন্দি একবার কথা বলতে পারেন। পাঁচ মিনিট করে একজন বন্দি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৫টি মোবাইল ফোন দিয়ে বন্দিরা স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে থাকেন। প্রতিদিন অন্তত দুইশ’ বন্দি মোবাইল ফোনে কথা বলেন।

আরও পড়ুন : ৮ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

ঐতিহ্যগতভাবেই বিশেষ দিনগুলোতে পরিবার পরিজন বন্দিদের জন্য কারাগারে বিশেষ খাবার নিয়ে যেতে পারতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমনাসহ জাতীয় নেতারা যখন দেশের কারাগারগুলোতে বন্দি থাকতেন, তখন পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে দেখা করার বিশেষ সুবিধা পেতেন। বাসার তৈরি খাবারও জাতীয় নেতাদের জন্য নিয়ে যেতো পরিবারগুলো। বিভিন্ন বই পুস্তকে এই ঐতিহ্য বা প্রথার কথা জানা যায়। তবে সেই রীতি এবার ভেঙে দিয়েছে করোনাভাইরাস। নির্দিষ্ট করে কারা অধিদফতর এই ঐতিহ্যের বয়স কত বছর তা জানাতে পারেনি, তবে বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে থেকেই এই প্রথা চলে আসছে বলে অনুমান করে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ওডি/

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড