• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বন্ধ হচ্ছে সরকারি পাটকল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ জুন ২০২০, ১৯:২৮
অধিকার
ছবি : সংগৃহীত

সরকারি পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এগুলো পরবর্তীতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় চলবে।

রবিবার (২৮ জুন) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

তিনি জানান, সরকারি ২৫টি পাটকলে এই মুহূর্তে ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। তাদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসর দেওয়া হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিও পাওয়া গেছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের পাওনা পরিশোধ করা হবে বলেও জানান পাটমন্ত্রী। তিনি আন্দোলনরত পাটল শ্রমিকদের ঘরে ফিরে যাওয়ারও অনুরোধ করেন।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, সরকারি পাটকল বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাটকলগুলো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে। সরকারের পক্ষে বছরের পর বছর পাটকলের এত লোকসান বহন করা সম্ভব নয়। পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, গত ৪৮ বছরে সরকারকে এই পাট খাতে ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, ২০১৪ সাল থেকে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের (৮,৯৫৪ জন) প্রাপ্য সকল বকেয়া, বর্তমানে কর্মরত শ্রমিকদের (২৪,৮৮৬ জন) প্রাপ্য বকেয়া মজুরি, শ্রমিকদের পিএফ জমা, গ্র্যাচুইটি এবং সে সঙ্গে গ্র্যাচুইটির সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ হারে অবসায়ন সুবিধা একসঙ্গে শতভাগ পরিশোধ করা হবে। এজন্য সরকারি বাজেট থেকে প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। অবসায়নের পর মিলগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে পিপিপি/যৌথ উদ্যোগ/জিটুজি/ লিজ মডেলে পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। নতুন মডেলে পুনরায় চালু হওয়া মিলে অবসায়নকৃত বর্তমান শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবেন। একইসঙ্গে এসব মিলে নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।

ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, বেসরকারি খাতে মাসিক মূল মজুরি ২৭০০ টাকার বিপরীতে উৎপাদনশীলতা ও মজুরি কমিশন ২০১৫ বাস্তবায়নের পর বিজেএমসি’র পাটকলগুলোতে তা ৮৩০০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ফলে সরকারি মিলে ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচে মজুরির অংশ ৬০-৬৩ শতাংশ, যা বেসরকারি খাতের প্রায় তিনগুণ।

উল্লেখ্য, বিজেএমসির অধীন ২৬টি পাটকলের মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ২৫টি। এর মধ্যে ২২টি পুরোদমে পাটকল ও ৩টি ননজুট ইন্ডাস্ট্রি। একটি পাটকল বন্ধ রয়েছে। পাটকলগুলোয় বর্তমানে স্থায়ী শ্রমিক আছেন ২৪ হাজার ৮৮৬ জন। এছাড়া তালিকাভুক্ত বদলি ও দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। জানা গেছে, ২০১৫ সালের মজুরি কমিশন অনুযায়ী এই মুহূর্তে একজন স্থায়ী শ্রমিককে বিদায় করতে হলে তাকে একসঙ্গে পাঁচ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পাওনা পরিশোধ করতে হবে। পাশাপাশি ওই শ্রমিক চাইলে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী একই প্রতিষ্ঠানে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজও করতে পারবেন। এই সুযোগও রাখা হয়েছে।

সরকারের মালিকানায় থাকা জুট মিলগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ জুট মিলস লি. ঘোড়াশাল, পলাশ, নরসিংদী। বাগদাদ-ঢাকা-কার্পেট ফ্যাক্টরি লি. নর্থ কাট্টলী, চট্টগ্রাম। করিম জুট মিলস লি. ডেমরা, ঢাকা। কেএফডি, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম। লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস লি. ডেমরা, ঢাকা। কার্পেটিং জুট মিলস লি. রাজঘাট, নোয়াপাড়া, যশোর। ইউএমসি জুট মিলস লি. নরসিংদী। যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লি., রাজঘাট, নোয়াপাড়া, যশোর। রাজশাহী জুট মিলস লি.শ্যামপুর, রাজশাহী। ইস্টার্ন জুট মিলস লি. আটরা শিল্প এলাকা, খুলনা। জাতীয় জুট মিলস লি. রায়পুর, সিরাজগঞ্জ। আলীম জুট মিলস্ লি. আটরা শিল্প এলাকা, খুলনা। আমিন জুট মিলস লি. ও ওল্ড ফিল্ডস লি., ষোল শহর, চট্টগ্রাম। ক্রিসেন্ট জুট মিলস লি. টাউন খালিশপুর, খুলনা। গুল আহমদ জুট মিলস লি. কুমিরা, বারবকুন্ড, চট্টগ্রাম। প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস লি. টাউন খালিশপুর, খুলনা। হাফিজ জুট মিলস লি. বার আউলিয়া, চট্টগ্রাম। খালিশপুর জুট মিলস লি. টাউন খালিশপুর, খুলনা। এম এম জুট মিলস লি. বাঁশবাড়িয়া, চট্টগ্রাম। দৌলতপুর জুট মিলস লি. টাউন খালিশপুর, খুলনা। আর আর জুট মিলস লি. বাঁশবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, স্টার জুট মিলস লি. চন্দনী মহল, খুলনা।

ননজুট মিলগুলো হলো জুটো ফাইবার গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লি. রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। গালফ্রা হাবিব লি. , নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম। মিলস ফার্নিসিং লি., নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম। একটি সরকারি পাটকল এই মুহূর্তে বন্ধ রয়েছে সেটি হলো মনোয়ার জুট মিলস লি. সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড