• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

চার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে 

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জুন ২০২০, ১১:২৬
পানি
পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে (ছবি: সংগৃহীত)

পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তায় অব্যাহতভাবে পানি বাড়ছে। এসব নদ-নদীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। এর প্রভাবে দেশের অন্তত আটটি জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

এই কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, বহ্মপুত্র ও যমুনার পানি আগামী ১০ দিন বাড়তে পারে। এ ছাড়া আজ শনিবার কুড়িগ্রামের উলিপুর ও চিলমারী পয়েন্টে বহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। রবি ও সোমবার যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে গাইবান্ধার ফুলছড়ি, জামালপুরের বাহাদুরাবাদ, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও টাঙ্গাইলের এলাসিন পয়েন্টে।

কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া গণমাধ্যমকে জানান, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী ও মুন্সীগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যা দেখা দিতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল পয়েন্ট এবং রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপত্সীমা অতিক্রম করতে পারে। এই দুটি জেলায়ও স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকার আশপাশের নদ-নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন আরিফুজ্জামান।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, ভারি বর্ষণের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

সিরাজগঞ্জ : যমুনায় পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের ফসলি জমিসহ গোচারণ ভূমি। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ১৭ সেন্টিমিটার। গতকাল বিকেলে তা বিপত্সীমার ৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হাবিবুল ইসলাম জানান, পাঁচটি উপজেলার অন্তত ৩৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

ধুনট (বগুড়া) : উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে পানি বেড়েছে ২৮ সেন্টিমিটার। তবে পানির প্রবাহ এখনো বিপত্সীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আসাদুল হক জানান, যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যা হতে পারে।

পীরগাছা (রংপুর) : সেখানে তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে গতকাল সকাল ৯টায় বিপত্সীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এ অবস্থায় ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে পীরগাছা এলাকার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। তবে পানি দ্রুত কমে যাবে বলে জানিয়েছেন রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান।

কুড়িগ্রাম : এরই মধ্যে অনেক এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ দুটি নদীর অববাহিকার দুই শতাধিক চরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। শুক্রবার বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ধরলার পানি বিপত্সীমার ১৩ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপত্সীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে তিস্তা ও দুধকুমারেও। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এসব এলাকার পাট, সবজি ও বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা।

লালমনিরহাট : তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সকালে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপত্সীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। বিকেলে তা আরো দুই সেন্টিমিটার বেড়েছে।

গাইবান্ধা : জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহিত হয় বিপত্সীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। এর ফলে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি ডুবে গেছে। পানি উঠতে শুরু করেছে চর ও নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘরবাড়িতেও।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড