নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর শরীরের পরিস্থিতি অবনতি হলে সাধারণত আইসিইউ-তে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে যে, বর্তমানে বাংলাদেশে পরিপূর্ণ আইসিইউ ইউনিট রয়েছে মাত্র ১১২টি। এখানে স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিইউ বলতে বোঝানো হয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ নিবির পর্যবেক্ষণ ইউনিটকে।
যেখানে বিশেষ ধরণের শয্যা, কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ভেন্টিলেটর, টিউব, পাম্প, হার্টরেইট, ব্লাড প্রেসারসহ অন্যান্য শারীরিক পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক চিত্র পাবার মনিটরসহ নানা আধুনিক মেডিকেল সরঞ্জাম থাকে। বিশেষজ্ঞ দক্ষ জনবল লাগে আইসিইউ পরিচালনা করার জন্য। যাদের প্রত্যেকের প্রয়োজন বিশেষ সুরক্ষা পোশাক।
বাংলাদেশে যেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, সেখানে প্রশ্ন উঠেছে করোনাভাইরাসে গুরুতর রোগীদের সেবা দেয়ার সক্ষমতা নিয়ে।
সম্প্রতি সিলেটের যে মেডিকেল অধ্যাপক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেষ পর্যন্ত ঢাকায় আনতে হয়।
পরিবার অভিযোগ করছে, সিলেটে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য যে হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার কথা সেখানে আইসিইউ আছে ঠিকই, কিন্তু তার যন্ত্রপাতি কাজ করছে না।
একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের এমন হয়রানির চিত্র ভাবিয়ে তুলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অন্যান্য রোগীর চিকিৎসার নিশ্চয়তাকেও।
গত জানুয়ারিতে এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনুপাতে আইসিইউ বেডের সংখ্যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের চাইতে সবচেয়ে কম।
নেপালে প্রতি এক লাখ মানুষের জন আইসিইউ আছে ২.৮টি, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ২.৩টি, পাকিস্তানে ১.৫টি, মিয়ানমারে ১.১টি সেখানে বাংলাদেশে আছে দশমিক ৭টি। মানে প্রতি এক লাখ মানুষের জন্য একটি আইসিইউ-ও নেই।
চীনে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিতে দুই মাসের বেশি সময় থাকলেও সেটা যথাযথভাবে কাজে লাগানো হয়নি বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক বে-নজির আহমেদ।
তিনি বলেন, এটা নিয়ে প্রস্তুতি আর পরিকল্পনায় আমাদের বিশাল ঘাটতি রয়েছে। যখন প্রস্তুতি নেয়ার সময় ছিল, তখন পুরো ব্যবস্থার নেতৃত্ব দিয়েছে, ছোট একটি প্রতিষ্ঠান, যাদের কোন ক্ষমতা নেই, জনবল নেই, অর্থ নেই। তখন কেন্দ্রীয়ভাবে কিছু পরিকল্পনা করা হয়নি।
তবে শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়ে আসছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। উন্নত দেশের চাইতে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন : ভয়ে পালাল করোনা আক্রান্তের ভাই
বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি ভেন্টিলেটর আমদানির কথা বলেছেন। মন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সাড়ে পাঁচশটির বেশি ভেন্টিলেটর আছে। ক্রয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে ৩৮০টি। কিন্তু আইসিইউ প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনার মতো দক্ষ জনবল গড়ে তোলার ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি।
সূত্র : বিবিসি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড