• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আরিফুলের শরীরে সুলতানার যত আঘাত

  নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ মার্চ ২০২০, ২১:০০
সাংবাদিক
সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের শরীরে আঘাতের চিহ্ন (ছবি : সংগৃহীত)

জামিনে মুক্তির পর অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন আরিফুলকে দেখতে তার পরিবারের সদস্যরা কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যান। পরে তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

রবিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সাংবাদিক আরিফকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তাকে দেখতে আসেন তার স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতুসহ পরিবারের সদস্যরা। এ সময় আরিফুল ইসলামের হাত-পা, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে একাধিক লাঠির আঘাতের চিহ্ন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জেষ্ঠ্য কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক) উত্তম কুমার রায় বলেন, আমরা সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখিত আকারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু মোহাম্মদ জাকিরুল ইসলামের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু মোহাম্মদ জাকিরুল ইসলাম বলেন, আমি তাকে (আরিফুল ইসলাম) চিনি ও তার সম্পর্কে জানি। আমরা শুনেছি আরিফুল ইসলামকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল একটি মোবাইল কোর্ট। একজন মানুষকে কীভাবে লাঠিপেটা করে এভাবে জখম করা হয়। এই রকম দৃশ্য আগে কখনো দেখিনি ও শুনিনি। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বিপ্লব বলেন, আমরা অনেক ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখেছি। কিন্তু, একজন ব্যক্তিকে এভাবে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়, তা কখনো শুনিনি ও দেখিনি। সাংবাদিক আরিফ একটি কলেজের শিক্ষক। ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে নির্মমভাবে আঘাত করা হয়েছে। এটা কেমন ভ্রাম্যমাণ আদালত? আমরা সাংবাদিক আরিফের বিরুদ্ধে করা মামলাও প্রত্যাহার চাই। পাশাপাশি ডিসির শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন : বিভাগীয় শাস্তি পাচ্ছেন ডিসি সুলতানা

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাদকবিরোধী অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় আরিফুলের ঘর থেকে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম অধূমপায়ী।

এ ঘটনায় স্যোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠলে শনিবার (১৪ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্ব দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানাকে।

এ দিকে, মধ্যরাতে সাংবাদিক নির্যাতন ও কারাদণ্ডের ঘটনায় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীনসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ডিসি সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করা হবে, একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। রবিবার (১৫ মার্চ) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

ওডি/টিএএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড