নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রূপন ভূঁইয়ার আরও টাকা ভর্তি সিন্দুকের সন্ধানে নেমেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। দ্বিতীয় দফা অভিযানে এই দুই ভাইয়ের ৫টি সিন্দুক থেকে নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধারের পর বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায়, পুরান ঢাকার ওয়ারী এলাকার এই জুয়াড়ি পরিবারের ক্যাশিয়ার শিপলু ছাড়াও আরও অন্তত ১০ জনের খোঁজ করা হচ্ছে। বিপুল পরিমাণ টাকা ও একাধিক সিন্দুক বিভিন্ন গোপন আস্তানায় সরিয়ে তারা গা ঢাকা দিয়েছে।
শিপলুর তত্ত্বাবধানেই গোপন আস্তানাগুলোতে বিপুল অর্থের মজুদ করে রাখা হয়। এনু-রূপন গ্রেপ্তার হওয়ার পরই তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত চালানো এ অভিযানে ওয়ারীর ১১৯/১ নম্বর বাড়ির নিচতলা থেকে এনু-রূপনের পাঁচটি সিন্দুক উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব সদস্যরা।
ওই বাসার ৫টি সিন্দুকে থাকা নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা, সোয়া ৫ কোটি টাকার এফডিআরের বই, ১ কেজি সোনা, ৯ হাজার ২০০ ইউএস ডলার, ১৭৪ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ৩৫০ ভারতীয় রুপি, ১ হাজার ৫৯৫ চায়নিজ ইউয়ান, ১১ হাজার ৫৬০ থাই বাথ ও ১০০ দিরহাম জব্দ করে র্যাব। এছাড়াও সেখান থেকে বেশ কিছু ক্যাসিনো সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
এ অভিযানের পর বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ওয়ারী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে এনু-রূপনকে আসামি করে ওয়ারী থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে। এরপর র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম জব্দ করা টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামাল থানা পুলিশকে বুঝিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে ওয়ারী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার র্যাবের অভিযানে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও মুদ্রা পাচার আইনে দুটি মামলা হয়েছে। এসব মামলার আলামত হিসেবে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার বুঝে রাখা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, এনু-রূপনের টাকার ভাণ্ডার দেখে তারা হতবাক। তাদের দুই ভাইয়ের টাকা ভর্তি আরও সিন্দুক রয়েছে, বিভিন্ন মাধ্যমে এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেসব সিন্দুক কোথায় আছে ও সেখানে কী পরিমাণ টাকা রয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া, নারিন্দাসহ আরও বিভিন্ন এলাকায় এনু-রূপনদের অসংখ্য বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সব বাড়ি বা ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গেলে আরও বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক রাকিবুল হাসান বলেন, আমরা কয়েকজনের খোঁজ করছি। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে অনেক তথ্য জানা যাবে।
আরও পড়ুন : দুই মাসের বেশি জেল হবে না, থানায় বসেই হুমকি!
গত বছর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়া আলোচনায় আসেন। শুরু থেকেই তারা পলাতক ছিলেন।
ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়ার মালিকানাধীন বাড়ি থেকে পাঁচ কোটি টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধার করে র্যাব-৩। এরপর তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়। সেই মামলা তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তারা এখন কারাগারে আছেন।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড