• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বক্তব্য প্রত্যাহার করলেন সালমান হত্যার ৭ নম্বর আসামি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৫৫
সালমান শাহ-রুবি
ছবি : সম্পাদিত

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ খুন হননি, তার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত বলে তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সংস্থাটি জানায়, পাঁচটি কারণ সালমান শাহকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

আত্মহত্যার যে পাঁচটি কারণ পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, তা হলো- চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে সালমানের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা; স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ; মাত্রাধিক আবেগপ্রবণ হওয়ায় একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা; মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জীভূত অভিমানে রূপ নেওয়া এবং সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতা।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সংবাদ সম্মেলনে সালমানের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে করা তদন্তের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, পিবিআইয়ের তদন্তকালে ঘটনার সময় উপস্থিত ও ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৪৪ সাক্ষীর জবানবন্দি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। দশজন সাক্ষীর সাক্ষ্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি ঘটনা সংশ্লিষ্ট আলামত জব্দ করা হয়। তদন্তের প্রত্যেকটা বিষয় পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, সালমান শাহ পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। তাকে হত্যার অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি।

বাংলা সিনেমার অমর নায়ক সালমান শাহ মৃত্যুর সময় এভাবে বলা হয়েছিল, ‘সাড়ে ১১টার দিকে আবুল চিত্রনায়কের স্ত্রী সামিরাকে জাগিয়ে বলেন, অনেকক্ষণ আগে ড্রেসিংরুমে ঢুকলেও তার কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। সামিরা দরজার ডুপ্লিকেট চাবি খুঁজতে থাকেন। পৌনে ১২টায় ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে আবুল ও সামিরা ড্রেসিং রুমের দরজা খুলে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আছেন সালমান। সামিরা ও দুই কাজের মেয়ে সালমানকে উঁচু করে ধরেন। পাশের বাসার কাজের মেয়ে দড়ি কেটে সালমানকে নামিয়ে আনেন। দড়িটি ছিল ব্যায়ামের যন্ত্র থেকে বের করা। সালমান ফ্যান পর্যন্ত ওঠেন ঘরে থাকা একটি কাঠের মই দিয়ে। নামানোর পর পাশের বাসার কাজের মেয়েটি বলে, শরীর এখনো গরম। উনি মরেননি। তখন মাথায় ও গায়ে তেল মালিশ করা হয়। এ সময় মে ফেয়ার বিউটি পার্লার থেকে পারিবারিক পরিচিত রুবি আসেন, অংশ নেন সালমানকে বাঁচাতে। হাউজিং কমপ্লেক্সের ম্যানেজারও আসেন।’

চিত্রনায়ক সালমান শাহকে বাঁচাতে আসা রুবিই হত্যা মামলার ৭ নম্বর আসামি হিসেবে অভিযুক্ত। ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা করলে তাতে আপত্তি জানায় পরিবার, সুহৃদ ও অগণিত ভক্ত। এরপর ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ ১১ জনকে সালমান শাহের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে হত্যা মামলা দায়ের করে সালমানের পরিবার। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সামিরার মা লতিফা হক লুসি, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, সহকারী নৃত্যপরিচালক নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহকর্মী মনোয়ারা বেগম।

কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও প্রকাশ করে সালমানের মৃত্যুর রহস্যের নতুন মোড় ঘুরিয়ে দেন সেই রুবি। সেখানে তিনি চিত্রনায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি বলে দাবি করেন। তিন বলেন, সালমানকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই খুনের সঙ্গে জড়িত সালমানের স্ত্রী ও তার বাড়ির লোকজন। খুনের সঙ্গে আরও জড়িত রুবির ছোট ভাই ও তার স্বামী। ভিডিও বার্তায় রুবি অনুরোধ করেন সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীকে, তিনি যেন সালমান খুনের মামলাটি পুনরায় তদন্তের ব্যবস্থা করেন। রুবি নিজে এই খুনের সাক্ষী দেবেন।

আরও পড়ুন : পাঁচ কারণে সালমান শাহের আত্মহত্যা

পিবিআই জানায়, আড়াই বছর পূর্বে রুবির দেওয়া বক্তব্য তিনি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। রুবি এখন অসুস্থ বলে জানা গেছে। অ্যাটর্নি অফিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়েছেন পিবিআইয়ের কাছে।

ওডি/এএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড