• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাঁচ কারণে সালমান শাহর আত্মহত্যা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৪:৩৯
সালমান শাহ
চিত্রনায়ক সালমান শাহ (ফাইল ছবি)

জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ খুন হননি, তার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত বলে তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সংস্থাটি জানায়, পাঁচটি কারণ সালমান শাহকে আত্মহননের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

আত্মহত্যার যে পাঁচটি কারণ পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, তা হলো- চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে সালমানের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা; স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ; মাত্রাধিক আবেগপ্রবণ হওয়ায় একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা; মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জীভূত অভিমানে রূপ নেওয়া এবং সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতা।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সংবাদ সম্মেলনে বাংলা সিনেমার অমর নায়কের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে করা তদন্তের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

তদন্তের প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তুলে ধরে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, পিবিআইয়ের তদন্তকালে ঘটনার সময় উপস্থিত ও ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৪৪ সাক্ষীর জবানবন্দি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। দশজন সাক্ষীর সাক্ষ্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি ঘটনা সংশ্লিষ্ট আলামত জব্দ করা হয়। তদন্তের প্রত্যেকটা বিষয় পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, সালমান শাহ পারিবারিক কলহের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। তাকে হত্যার অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি।

চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। সে সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

পরে সালমান শাহর বাবা ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই অপমৃত্যুর মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান। আদালত সিআইডিকে অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন।

পরে সিআইডি গত ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ঢাকার সিএমএম আদালতে ২৫ নভেম্বর উক্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন।

আদালত ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায়। এরপর প্রায় ১৫ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান এবং ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে নারাজির আবেদন দাখিল করেন।

নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।

এরপর মামলাটি তদন্তের জন্য দেওয়া হয় র‌্যাবকে। তবে র‌্যাবের দ্বারা তদন্তের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করে। ২০১৬ সালের আগস্টের ২১ তারিখে ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন এবং র‌্যাবকে মামলাটি আর তদন্ত না করতে রায় দেন। তারপর মামলাটির তদন্তভার যায় পুলিশের বিশেষায়িত একটি দল নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের আদলে তৈরী পিবিআইয়ের হাতে।

চলতি মাসের ১৮ তারিখে এ মামলার পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার কথা ছিল। পিবিআই ওই তারিখে প্রতিবেদন জমা করতে না পারায় ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ পুনঃতদন্ত প্রতিবেদনটি ১৮ মার্চ দাখিল করা আদেশ দেন।

আরও পড়ুন : ঢাকার নির্বাচনেও ইসি সামর্থ্য প্রমাণে ব্যর্থ : সুজন

আদালতের ধার্য করা সেই তারিখ আসার আগেই আজ ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত ও ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরল সংস্থাটি।

ওডি/এএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড