• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জবি সমাবর্তন

শিক্ষকরা নকল করতে সহযোগিতা করছে : রাষ্ট্রপতি

  ক্যাম্পাস ডেস্ক

১১ জানুয়ারি ২০২০, ১৬:১৫
জবি
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ (ছবি : পিআইডি)

বর্তমান সমাজের স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন পরীক্ষাগুলোতে নকলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি শিক্ষকরা নকল করতে সহযোগিতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম সমাবর্তনে এসব কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, 'জীবনে অনেক পরীক্ষায় ফেল করেছি, তবে কখনো পাস করার জন্য নকলের মতো অনৈতিক পথ অবলম্বন করিনি। এমনকি পাশের কাউকে জিজ্ঞেসও করিনি।'

তিনি আরও বলেন, 'উপাচার্যগণ হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনাদের সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। আপনারা নিজেরাই যদি অনিয়মকে প্রশ্রয় দেন বা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন, তা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা কী হবে, তা ভেবে দেখবেন।'

নিজের জীবনের স্মৃতিচারণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচন করি। সে নির্বাচনে আমি ছিলাম গোটা পাকিস্তানে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী। সত্তরের ৭ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলাম। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের পার্লামেন্টে যেতে পারিনি।’

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার সমালোচনা করে আবদুল হামিদ বলেন, 'এক শ্রেণির শিক্ষক রয়েছেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিটাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। অনেক সময় সান্ধ্যকালীন কোর্স ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে সপ্তাহব্যাপী অতি ব্যস্ত সময় কাটান। এ সমস্ত কাজ কর্মে তারা খুবই আন্তরিক।'

এ সময় রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে সকলকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘প্রায় সাত বছর ধরে জেলখানারই মতোই বঙ্গভবনে আছি। রাস্তায় স্বাধীনভাবে হেঁটে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে টেলিভিশনে দেখি, ওভারপাস আছে অথচ রিস্ক নিয়ে সমানে নিচ দিয়ে মানুষ পারাপার করছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ডিসিপ্লিন না মানলে কোনো জাতি উন্নতি করতে পারে না। তোমাদের অনুরোধ, মানুষকে এ ব্যাপারে বোঝাও। এভাবে যত্রতত্র রাস্তা ক্রস করা ঠিক না। যেখানে ব্যবস্থা নেই সেখানে অন্য কথা। সবাইকে নিজে সচেতন হতে হবে এবং অন্যদেরও সচেতন করতে হবে।’

এই সমাবর্তনে ১৩ ব্যাচের প্রায় ১৯ হাজার গ্র্যাজুয়েট অংশ নিচ্ছেন। এ উপলক্ষে নান্দনিক সাজে সাজানো হয় গোটা ক্যাম্পাস। এতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে।

সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বক্তব্য রাখেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.কামাল উদ্দিন আহমেদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এই সমাবর্তনে স্নাতক ১১ হাজার ৮৭৭ জন, স্নাতকোত্তর ৪ হাজার ৮২৯ জন, এম.ফিল ১১ জন, পিএইচডি ৬ জন, ইভিনিংয়ের ১ হাজার ৫৯৪ জন শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

পদক প্রদানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও সমাবর্তন বক্তা হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ইমেরিটাস ড. অরুণ কুমার বসাক সমাবর্তন বক্তব্য দেন।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন : জার্মান ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রতিষ্ঠার ২০০৫ সাল থেকে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল, পিএইচডি ও সন্ধ্যা কোর্সের শিক্ষার্থীরা যারা অন্ততপক্ষে একটি ডিগ্রি জবি থেকে অর্জন করেছেন, তারা এতে অংশগ্রহণ করছেন।

এর মধ্যে স্নাতক রয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৭ জন। এছাড়া স্নাতকোত্তর ৪ হাজার ৮২৯ জন, এমফিল ১১ জন, পিএইচডি ছয়জন এবং ইভিনিং প্রোগ্রামে এক হাজার ৫৭৪ জন রয়েছেন।

ওডি/এমআরকে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড