• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বঙ্গোপসাগরের কোনও দ্বীপে জায়গা হতে পারে মাদক আসামিদের : বেনজীর  

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ জুলাই ২০১৮, ২২:০৮
র‌্যাব ডিজি

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, সময় এসেছে মাদক মামলায় বন্দিদের জন্য বিশেষ কারাগার করার। বঙ্গোপসাগরের কোনও দ্বীপ বা বিচ্ছিন্ন কোনও স্থানে সেই কারাগার হতে পারে। এতে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাটাও সহজ হবে।

রবিবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত ‘মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন রোধে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা জানান।

৩৭ হাজার বন্দির ধারণক্ষমতার জেলখানায় ৯০ হাজার বন্দি রয়েছে, যাদের ৪৪ ভাগই মাদক মামলার আসামি উল্লেখ করে বেনজীর বলেন, ৪ মে থেকে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে র‍্যাবের প্রায় ২ হাজার মামলা হয়েছে। এসব মামলার নিষ্পত্তি হতে অনেক দিন লেগে যাবে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়টি বিবেচনায় এনে মাদক মামলার বিচারে প্রতি জেলায় বিশেষ আদালত গঠন করা যেতে পারে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের দিয়ে প্রতি জেলায় একটা করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ আদালত করা যেতে পারে।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমরা যখন ৩ মে থেকে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি সে সময় অনেকেই সমালোচনা করেছেন। এখন তারা চুপ হয়ে গেছে। আমরা স্পষ্ট কথায় বলে দিচ্ছি কারও কোনো সমালোচনায় আমরা ধার ধারি না।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই মাদকের বিস্তার রয়েছে। তাই বলে সেটি জাতিকে ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াবে এটা সহ্য করা হবে না। সব দেশেই মাদক সহনশীল অবস্থায় থাকলে আমাদের দেশেও তা সম্ভব। আর সে জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

র‍্যাব মহাপরিচালক আক্ষেপ করে বলেন, ‘কক্সবাজারের ইয়াবা নিয়ে গত দশ বছরে সংবাদপত্রে কোনো খবর প্রকাশ করেনি। খোঁজ নিয়ে জানলাম বিভিন্ন গডফাদারদের ভয়ে সংবাদ করা হয়নি। কক্সবাজারে আমরা প্রথমে ১টা ক্যাম্প এবং রোহিঙ্গা আসার পর আরও একটা ক্যাম্প স্থাপন করেছি। সম্প্রতি মাদকের গডফাদারদের নির্মূল করতে আমরা মোট সাতটি ক্যাম্প স্থাপন করেছি। এখন যদি কোনো গডফাদার কাউকে হাত উঁচু করে ভয় দেখায়, তাহলে স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি সেই হাত কেটে ফেলব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমি এ কথার বিশ্বাস স্থাপন করব।’

কর্মশালায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি ডোপ টেস্টের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময়েও ডোপ টেস্টের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘প্রথানমন্ত্রীর কাছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে আরও ৬ হাজার ৭০০ জনবলের চাহিদা জানানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই তাদের জনবল সাড়ে আট হাজারে দাঁড়াবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। মাদকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ম্যাসেজ হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে মাদক শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। আমরা অভিযান চালিয়ে যাব। পাশাপাশি দেশে মাদকের চাহিদা নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি।’

কর্মশালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামালউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘অধিদপ্তর এ পর্যন্ত মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ে জড়িত মোট ১৩ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১২ হাজারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অধিদপ্তরের মোট ৫১টি গাড়ি রয়েছে। এগুলো দিয়ে আমরা নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও কাজ করে যাচ্ছি। টেকনাফের মতো একটি সংবেদনশীল জায়গায় আমাদের টহল দেওয়ার মতো কোনো গাড়ি নেই। মাত্র ১০ জন আনসার সদস্যকে নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে আমাদের। এ সমস্যা কেটে উঠতে আরও নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের অপরাধ বিভাগের ডিআইজি ব্যারিস্টার মাহবুব হোসেন, কর্নেল (অব.) আনিসুর রহমান, আনসার ভিডিপির উপ-পরিচালক দিলীপ কুমার বিশ্বাস, বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনিসুর রহমান, জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ দফতরের সদস্য অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড