• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সড়কে নতুন আইন : ৬ জেলায় বাস চলাচল বন্ধ 

  নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:২৯
বাস চলাচল বন্ধ
বাস চলাচল বন্ধ ( ছবি : দৈনিক অধিকার )

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়কে নতুন আইন কার্যকরের ঘোষণা দেন। মন্ত্রী জানান, সোমবার থেকে সড়কে এ নতুন আইন কার্যকর হবে। এরপর থেকে দেশের ৬ জেলায় চলছে বাস ধর্মঘট। শ্রমিক নেতারা বলছে এত ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকরা বাস চালাবে না।

দৈনিক অধিকারের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত।

খুলনা:

নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে খুলনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

শ্রমিক নেতারা বলছেন, দুর্ঘটনার মামলা জামিন যোগ্যসহ সড়ক আইনের কয়েকটি ধারায় সংশোধন চান চালকরা। তাদের দাবি, আইন সংশোধনের পরই এটি কার্যকর করা হোক। সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন।

খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সোনা বলেন, শ্রমিকরা ফাঁসি ও যাবজ্জীবন দণ্ডের ভয়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই তারা এসব করছে।

এ দিকে হঠাৎ করে খুলনা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে ভোরে ঈগল পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের বাস মহানগরীর রয়্যাল কাউন্টার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে সকাল ৯টার পর থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ঝিনাইদহ:

ঝিনাইদহে সদ্য কার্যকর হওয়া সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকেই শ্রমিকরা গাড়ি বন্ধ রেখে কর্মবিরতি শুরু করেন।

ঝিনাইদহ জেলা বাস-মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ওলিয়ার রহমান বলেন, কার্যকর হওয়া সড়ক পরিবহন আইন শ্রমিকদের স্বার্থ পরিপন্থি। দুর্ঘটনার সাজা ও জরিমানা অনেক বেশি। এত জরিমানা একজন শ্রমিক কোথায় পাবে। ঝুঁকি নিয়ে কোনো শ্রমিক গাড়ি চালাতে পারছে না।

সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবি, আইন সংশোধনের পর এটি বাস্তবায়ন করা হোক। এটা না করা পর্যন্ত আমাদের এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

এ দিকে হঠাৎ করেই সাতক্ষীরার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী। তারা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নছিমন, করিমন ও ইজিবাইকে করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

বাসচালকসহ মটর শ্রমিক নেতারা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে নতুন আইনে চালকদের মৃত্যুদণ্ড এবং আহত হলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আমাদের এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।

জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আবু আহমেদ জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। তারা চান, এটি সংশোধন করে পরে বাস্তবায়ন করা হোক।

যশোর:

সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে যশোরে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা। সোমবার সকালে বাস স্টেশন থেকে কোনো গাড়ি ছাড়েনি। এর আগে রবিবার (১৭ নভেম্বর) যশোর থেকে ১৮টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা হোসেন বলেন, নতুন সড়ক আইনের অনেক ধারার ব্যাপারে শ্রমিকদের আপত্তি রয়েছে, যা সংশোধন জরুরি। এ ব্যাপারে শুরু থেকে শ্রমিকরা আপত্তি জানিয়ে আসছে। তবে সরকার সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়ায় শ্রমিকরা রবিবার দুপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, পরিবহন ধর্মঘট যাতে স্থায়ী না হয় সেজন্য মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে সভা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি এই ধর্মঘট থাকবে না।

কুষ্টিয়া:

কুষ্টিয়ায় বাস শ্রমিকদের সংগঠন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, কঠিন আইনে বাস চালাবেন না চালকেরা।

সোমবার সকাল ১০টায় মজমপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু যাত্রী দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা গোলাম মোস্তফা বলেন, খুব ভোরে তার চিকিৎসার জন্য স্ত্রী ও শিশুসন্তান নিয়ে কষ্ট করে কুষ্টিয়ায় এসেছিলেন। ফিরবেন জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামে। কিন্তু যানবাহন না পাওয়ায় এক বছরের শিশুসন্তান নিয়ে বসে আছেন রাস্তায়।

চুয়াডাঙ্গা:

চুয়াডাঙ্গায় সকাল ১০টার দিকে অভ্যন্তরীণ এবং দুপুর ২টার পর থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম দাবি করেন, শ্রমিক ইউনিয়ন কোনো ধর্মঘট ডাকেনি। পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

ওডি/এসএএফ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড