অধিকার ডেস্ক
আগামী চার বছরের মধ্যে দেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সাত দিনব্যাপী পিকেএসএফ উন্নয়ন মেলা-২০১৯ এর উদ্বোধন করে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে আমরা ক্ষুধামুক্ত করেছি। এবার লক্ষ্য দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা। দেশের প্রতিটি পরিবারকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই। এ জন্য ‘আমার বাড়ি আমার খামার’সহ বেশকিছু কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের গৃহীত এসব কর্মসূচির ফলে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নেমে এসেছে। আগামীতে এটাকে ১৬ ভাগে নামিয়ে আনতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা ভূমিহীনদের ভূমি দিয়েছি। যারা গৃহহারা তাদের ঘর করে দিয়েছি এবং এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। মানুষ যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি পরিবারকে আমরা দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্ত করতে চাই। ‘আমার বাড়ি আমার খামার’-এর মাধ্যমে যেসব সদস্য ১০০ টাকা জমা করবে সরকার তাদের আরও ১০০ টাকা দিচ্ছে। এইভাবে একটা মানুষ দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি পায় সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। এছাড়া ভিক্ষুকমুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সরকার। ইতোমধ্যে বেশকিছু জেলা ভিক্ষুকমুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা শহরের বস্তিতে বসবাস করে তাদের জন্য ঘরে ফেরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন যেন বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সে নির্দেশনা তাদের দেওয়া হয়েছে। এখন তারা বহুমুখী কর্মসূচি পরিচালনা করছেন। যেমন- ঋণদান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উৎপাদন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ অনেক বিষয়ের ওপর কাজ করছে তারা।
তিনি বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। খাদ্যের পাশাপাশি এখন আমরা নজর দিয়েছি পুষ্টির দিকে। এ বিষয়ে পিকেএসএফ বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন দেশে গেলে আমাকে প্রশ্ন করা হয়- বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে কী ম্যাজিক রয়েছে? আমি তাদের বলি, আসলে কোনো ম্যাজিক নেই। দেশকে ভালোবাসা, দেশকে জানা এবং দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করা- এটাই হলো মূল ম্যাজিক।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলার চোখে দেখে না। বাংলাদেশ এখন অনেকের কাছেই বিস্ময়। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ। ২০০৮ সালের সঙ্গে বর্তমান অবস্থা তুলনা করলে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমরা আমাদের বাজেট ৭ গুণ বৃদ্ধি করেছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির সুফল এখন গ্রামের মানুষ পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে আর কেউ পিছনে টানতে পারবে না। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়ার উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ২০৭১ সালে যারা এ দেশের শতবর্ষ পালন করবে তারা তখন সত্যি সোনার বাংলা হিসেবে পালন করতে পারবে। একই সঙ্গে তারা পাবে সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ।
এর আগে সাত দিনব্যাপী পিকেএসএফ উন্নয়ন মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
দেশব্যাপী পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের উৎপাদিত পণ্যপ্রদর্শনী ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ উন্নয়ন মেলার আয়োজন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত মেলা চলবে।
সারাদেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ১৯০টি স্টল এ মেলায় স্থান পাবে।
জানা গেছে, নিত্য ব্যবহার্য পণ্য থেকে শুরু করে প্রান্তিক ক্ষুদ্র উৎপাদকদের উৎপাদিত বিষমুক্ত কৃষিপণ্য, খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী, প্রসিদ্ধ ও সমাদৃত হাজারও পণ্যের সমাহার নিয়ে বসছে এই উন্নয়ন মেলা। মেলার নির্বাচিত শিল্পীদের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের শিল্পীদের অংশগ্রহণে প্রতি সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকবে।
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের উন্নয়ন মেলায় প্রতিবারই এমন প্রদর্শনীর সঙ্গে থাকে উন্নয়ন বিষয়ে মূল্যবান সেমিনার। এবারও ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রতিদিন একটি করে সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন- বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, এমপি, সচিব, নীতিনির্ধারক, প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মী, সমাজকর্মী, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ওডি/এআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড