অধিকার ডেস্ক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে জাতীয় সংসদে দেওয়া বিবৃতিতে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ভবিষ্যতে রেল দুর্ঘটনা এড়াতে তার মন্ত্রণালয় সতর্ক থাকবে। ওই দুর্ঘটনায় রেলওয়ের প্রায় ৪০ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ বিধিতে কসবার ট্রেন দুর্ঘটনার পর মন্ত্রণালয়ের নেওয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে বিবৃতি দেন তিনি।
রেলমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে সব ধরনের রেল দুর্ঘটনা এড়াতে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী সচেষ্ট থাকবেন। ওই দুর্ঘটনা তদন্তে চারটি কমিটি গঠন এবং তিন রেলকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনার বিবরণে রেলপথমন্ত্রী বলেন, রাত ২টা ৪৫ মিনিটে দুর্ঘটনা ঘটে। সিলেট থেকে চট্টগ্রামগ্রামী উদয়ন এক্সপ্রেস এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেন দুটিকে মন্দবাগ স্টেশনে ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা করা হলে উদয়ন এক্সপ্রেস ১৬টি কোচসহ মন্দবাগ স্টেশনের ৩ নম্বর লুপ লাইনে গমন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ট্রেনটি লাইনে প্রবেশ করছিল। ১৬টি কোচের মধ্যে ১২টি কোচ ওই লাইনে প্রবেশ করে।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকাগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ২ নম্বর মেইন লাইনের আউটার সিগন্যালে অপেক্ষায় থাকার কথা। সঙ্কেত দেওয়া হয়েছিল। তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসের লোকো মাস্টার ওই সঙ্কেত অমান্য করে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। ৩ নম্বর লাইনে প্রবেশরত উদয়ন এক্সপ্রেসের ১৩তম কোচে তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসটি আঘাত করলে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়। দুর্ঘটনায় মোট ১৬ জন নিহত এবং ৫৪ জন আহত হয়। হতাহতরা সবাই উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন।
নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, দুর্ঘটনার খবর ভোররাতে প্রধানমন্ত্রীকে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ভোর ৬টা নাগাদ দুর্ঘটনাস্থলে রওনা হন তিনি। তার আগে রাত ৪টার দিকে রেল সচিব, ডিজি ও কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রওনা হন।
রেলমন্ত্রী জানান, রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১০ জন, ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজন, কসবা হাসপাতালে তিনজন, ঢাকা সিএমএইচে সাতজন এবং সিলেট ওসমানী মেডিকেলে চারজন আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া রেলওয়ে থেকে নিহতদের পরিবারকে এক লাখ করে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তূর্ণার চালককে দায়ী করে সুজন বলেন, তূর্ণার লোকো মাস্টার সংকেত অমান্য করায় এ দুর্ঘটনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোররাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দভাগ স্টেশনে উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথার সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ ১৬ যাত্রী নিহত এবং অর্ধ শতাধিক আহত হয়। এই দুর্ঘটনার জন্য কর্তব্যরত তিনজনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন লোকোমাস্টার তাসির উদ্দিন, সহকারী অপু দে, ওয়ার্কিং গার্ড আব্দুর রহমান। ঘটনা তদন্তে বিভিন্ন পর্যায়ে চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড