অধিকার ডেস্ক
বাংলাদেশের মুদ্রা ব্যবস্থার ইতিহাসে নতুন এক যুগের সূচনা হলো সোমবার (১১ নভেম্বর)। এদিন লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে উদ্বোধন করা হয়েছে 'বাংলা বন্ডে'র। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের মুদ্রা ‘টাকা’র সঙ্গে যুক্ত এ ধরনের বন্ড এই প্রথম। খবর ‘বিবিসি’।
বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইএফসি (ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স কর্পোরেশন) বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে অর্থায়নের জন্য এক কোটি ডলারের সমপরিমাণ এই বন্ড ইস্যু করেছে।
২০১৫ সালে বিদেশে বাংলাদেশের মুদ্রা টাকায় বন্ড ছাড়ার অনুমতি পায় আইএফসি। তারই সূত্র ধরে অবশেষে চার বছর পর বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পুঁজি বাজারে সোমবার থেকে বাংলা বন্ডের লেনদেন শুরু হলো।
তিন বছর মেয়াদী বাংলা বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় এক কোটি ডলার। এই বন্ডে বিনিয়োগকারীরা প্রায় সাড়ে ছয় শতাংশ হারে সুদ পাবেন।
বাংলা বন্ডের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল। তিনিই উদ্বোধন করেন বাংলা বন্ডের। উদ্বোধনের পর তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিল্প-কারখানায় দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেওয়া ব্যাংকগুলোর পক্ষে ক্রমশ কষ্টকর হয়ে ওঠছে। তাই সরকার বিকল্প বিনিয়োগের রাস্তা খুঁজতে চায়। বাংলা বন্ড চালু করার পেছনে এটা একটা বড় কারণ।
তিনি আরও বলেন, প্রচুর পরিমাণ ঋণের টাকা অনাদায়ী পড়ে আছে। তাছাড়া ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য আমানত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দিতে হচ্ছে, যেটা তাদের পক্ষে খুবই কষ্টকর। বন্ড ছেড়ে বিনিয়োগ জোগাড় সারা বিশ্বে বহুল প্রচলিত একটি ব্যবস্থা। বাংলাদেশে এখন সেই পথে পা দিচ্ছে।
এ সময় আইএফসি আগামী এক বছরে ১০০ কোটি ডলার মূল্যমানের বন্ড ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল।
মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা এখন বেশ ভালো। বাংলাদেশে এখন জিডিপির তুলনায় ঋণের পরিমাণের মাত্রা ৩৪ শতাংশ, যেটা পুরো বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই ইতিবাচক দিকটাকে কাজে লাগিয়ে বিদেশে থেকে 'প্রতিযোগিতামূলক সুদে' বেসরকারি বিনিয়োগ জোগাড়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, শুরুটা এক কোটি ডলার দিয়ে হলো। বন্ড ছেড়ে বছরে ১০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বিনিয়োগ জোগাড়ের লক্ষ্যে কাজ চলছে। আইএফসি আমাদের কথা দিয়েছে।
জানা গেছে, প্রথম দিনে যে পরিমাণ অর্থের বন্ড ছাড়া হয়েছিল, কেনার আগ্রহ ছিল তার চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। কিনেছে বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
এ বিষয়ে আইএফসির সিনিয়র কর্মকর্তা কেশব গৌর জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উঁচু হারে মুনাফা পাওয়ার সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে। কোনো দেশের মুদ্রা যদি স্থিতিশীল হয়, তাহলে তা লোভনীয় হবেই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটাই দেখা যাচ্ছে। টাকা স্থিতিশীল, অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। এমন অবস্থা থাকলে যে কোনো বিনিয়োগকারী তার বিনিয়োগ থেকে ভালো মুনাফা পাবন। এখনকার বিশ্বে খুব কম জায়গাতেই বিনিয়োগ থেকে বড় মুনাফা আসে। সুতরাং ডলারে বিনিয়োগ না করে অনেক মানুষই টাকায় বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসবে।
ওডি/এসসা
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড