নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে প্রেমিকার বাসা থেকে এক আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এআইইউবি) ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম আশিক এ এলাহী (২০)।
মঙ্গলবার (২১ মে) সকালে ভাটারার কুড়িল এলাকায় কুড়াতলি বাজারসংলগ্ন একটি বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আশিকের পরিবারের অভিযোগ, তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের বাড়ি ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলায়। বর্তমানে তার মরদেহ কুর্মিটোলা হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আল আমিন (২৫) সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার সকালে আশিকের সহপাঠীর (প্রেমিকা) ফোন পেয়ে তার বাসায় যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার ছোট ভাইকে মৃত অবস্থায় পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী তার এক বান্ধবীর সঙ্গে কুড়াতলির ওই বাসায় ভাড়া থাকেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নিহতের ভাইয়ের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে ডেকে হত্যা করে এখন তার প্রেমিকা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের ফোন পেয়ে পুলিশ কুড়িল পূর্বপাড়ার একটি বাড়ির দ্বিতীয়তলার ফ্ল্যাট থেকে আশিকের লাশ উদ্ধার করে। তার গলায় ফাঁস লাগানোর চিহ্ন থাকলেও লাশটি ফ্লোরে ছিল। দুই রুমের ওই ফ্ল্যাটে মেস বানিয়ে একটিতে আশিকের প্রেমিকা থাকেন। অন্যটিতে অপর একজন ছাত্রী থাকেন। আশিকের প্রেমিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, সহপাঠী আশিক ও তিনি বন্ধুর মতো চলাফেরা করতেন।
আশিক তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলেও তিনি তাকে বন্ধুর চোখেই দেখতেন। সম্প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে তার সম্মতি নিয়েই বিয়ে ঠিক করা হয়। আশিক এ খবর জানার পর থেকে তার সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। তাকে ক্যাম্পাসেও বিরক্ত করতে থাকেন।
ওই সহপাঠী আরও বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে আশিক তাকে কয়েক দফায় ফোন দিতে থাকেন। আশিক বাসায় এসে তার সঙ্গে কথা বলতে চান। তাকে নিষেধ করলে তিনি ভোরে বাসায় এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করতে থাকেন। একপর্যায়ে দরজা খুলে দিলে তার সঙ্গে গিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেন। তখন তিনি আশিককে বলেন, তার বিয়ে হয়ে গেলেও তারা সব সময়েই বন্ধু থাকবেন। একপর্যায়ে আশিক উল্টাপাল্টা আচরণ শুরু করলে তিনি নিজেকে রক্ষার জন্য পাশের কক্ষে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে ফিরে দেখেন, জানালার গ্রিলের সঙ্গে কোমরের বেল্টে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আশিক ঝুলছেন। ওই সময়ে তিনি চিৎকার দেন। প্রতিবেশীরা বঁটি দিয়ে বেল্ট কেটে তাকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে ভাটারা থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, প্রাথমিক আলামতে মনে হয়েছে, আশিক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তার শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। এরপরও মৃত্যুর কারণ জানতে মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। আশিকের বান্ধবী ও তার পাশের কক্ষের একজন ছাত্রীরও বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড