নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। দলীয় কার্যালয়ে বিস্ফোরক সামগ্রী রাখা, পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে এসব মামলা করবে। মামলার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিকে নয়াপল্টনে গতকাল বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সংঘর্ষের পর পুলিশি অভিযানে বিএনপির প্রায় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেখানে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের আটজন নেতা রয়েছেন।
পুলিশ বলছে, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হবে। তাছাড়া যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে তাদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির যেসব নেতাকর্মীকে আমরা গ্রেফতার করেছি তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আবার কারও কারও বিরুদ্ধে আগে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল, তাদেরও গ্রেফতার দেখানো হবে। তবে সবার নামেই নতুন করে মামলা হবে। তাছাড়া অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হবে।
বুধবারের পুলিশি অভিযানে আটক বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধেও মামলা হচ্ছে কি-না, জানতে চাইলে বিপ্লব কুমার বলেন, আইনে শীর্ষ নেতা বলে কিছু নেই। আইনি ভাষায় যারা অপরাধী তারা গ্রেফতার হবেন এবং মামলা হবে। বর্তমানে পৃথক মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিশেষ করে তাদের (বিএনপি) হামলায় আমাদের অনেক সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায়ও মামলা হবে।
বুধবার বিকালে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মী ও পুলিশের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আহত হন অনেকে।
এর আগে বুধবার সকাল থেকেই নয়াপল্টনের একপাশের সড়ক দখলে নেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। জড়ো হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে বিকেল তিনটার দিকে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। নেতাকর্মীরাও পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মারমুখী হয়ে ওঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যান চলাচলের বিঘ্ন ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের রাস্তা ছাড়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে তারা রাস্তা থেকে সরে না গিয়ে হঠাৎ করেই পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকা। মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে কাকরাইল, বিজয়নগর, পল্টন, মতিঝিল, শান্তিনগর এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবহার করা হয় রায়টকার ও জলকামান।
এ দিকে সংঘর্ষের সময় মকবুল হোসেন নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি বিএনপি কর্মীর ছিলেন বলে দলটির দাবি। এছাড়া আহত অবস্থায় দলটির প্রায় ২০ নেতাকর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। অভিযানে দলের সিনিয়র অনেক নেতাকে আটক করে পুলিশ।
এদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষের পর রাতে বিএনপি কার্যালয় থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড