কামরাঙ্গীরচরে কিশোরী গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার 

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে আলিফা আক্তার (১৬) নামে এক কিশোরী গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যৌতুকের জন্য নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ মধ্য ইসলাম নগর মজিবর ঘাট এলাকার ৭ নম্বর রোডের একটি বাড়ি থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের বাবা মো. নান্নু মিয়া অভিযোগ করে জানান, পাঁচ মাস আগে পারিবারিকভাবে আব্দুর রহিম নামে এক যুবকের সঙ্গে আলিফার বিয়ে দেওয়া হয়। রহিম ধানমন্ডি রাপা প্লাজায় একটি দোকানে চাকরি করেন। স্ত্রীকে নিয়ে মজিবর ঘাটের ৭ নম্বর গলির নিজেদের বাড়িতে থাকেন। আলিফার বাবা-মা থাকেন ব্যাটারিঘাট এলাকায়। বিয়ের সময় তার স্বামীর বাড়ির লোকজনের যৌতুকের কোনো দাবি ছিল না। তবে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী ও তার শাশুড়ি যৌতুকের জন্য কথা শোনাতে থাকেন। আব্দুর রহিমের অন্য ভাইদের বিয়ের সময় কয়েক লাখ টাকা করে তাদের শ্বশুরবাড়ি থেকে দিয়েছে বলে কথা শোনাতেন। বিভিন্নভাবে নির্যাতনও করা হতো তাকে। এসব কারণে দেড় মাস আগে রাগ করে আলিফা বাবার বাড়িতে চলে আসেন।

তিনি জানান, গত মঙ্গলবার (১৭ মে) আব্দুর রহিম তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে আবার তার বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবার ঝগড়া হয়। তখন তার মা সুবর্ণা ওই বাসায় গিয়ে তাদের মীমাংসা করে আসেন। তবে বিকাল থেকে আলিফাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আলিফার ছোট বোন ওই বাসায় গিয়ে দেখে, আলিফার শোবার ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। তখন জানালা দিয়ে সে দেখতে পায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে ঝুলছে আলিফা। পরে খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের কারণে তাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করা হতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছে।

কামরাঙ্গীরচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহমিদা ইয়াসমিন সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ১২টার মধ্যে যেকোনো সময় দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মৃত আলিফার গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদি উপজেলার নন্দির বাজার গ্রামে। তিন বোনের মধ্যে সবার বড় ছিল আলিফা।

ওডি/ইমা