• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নকশা অমান্য করে মার্কেটে হাসপাতাল বানানোর অভিযোগ ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:২১
সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শপিংমলটির ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন
সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শপিংমলটির ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (ছবি : সংগৃহীত) 

কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমলের শতাধিক দোকান কিনে হাসপাতাল বানানোর অভিযোগ উঠেছে ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে। রাজউকের নকশা অমান্য করে মার্কেটে হাসপাতাল বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শপিংমলটির ব্যবসায়ীরা।

২০০২ সালে কনকর্ড আর্কেডিয়া চালুর পর একে একে এর শতাধিক দোকান কিনে নেয় ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ। কেনার পর মার্কেটের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় হাসপাতালের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করে এবং মার্কেটের বড় অংশ হাসপাতালে রূপান্তর এবং কিনে রাখা অনেক দোকান মাসের পর মাস বন্ধ রাখায় সেখানে কেনাকাটা করতে ক্রেতারা আগ্রহ হারাচ্ছেন। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। এভাবে ব্যবসায়ীদের বেকায়দায় ফেলে বাকি দোকানগুলো কিনে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমলের নিচ তলায় ল্যাবএইড হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বহিরাগতদের হামলা ভাঙচুর ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শপিংমলটির ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সানাউল হক নীরু।

সংবাদ সম্মেলনে সানাউল হক বলেন, রাজউকের লে-আউট প্ল্যান ও ডেভেলপারের ঘোষণা অনুযায়ী শপিংমলটির একটি বেইজমেন্ট, নিচতলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনড মার্কেট এবং ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা অফিসের জন্য বরাদ্দ ছিল। শপিংমল চালুর প্রাথমিক পর্যায়ে ২০৪টি দোকানের মধ্যে নিচতলার ৪১টি, দ্বিতীয় তলায় ২৪টি, ৩য় তলার ১২টি এবং ৪র্থ তলার ৩১টি দোকান এবং ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় অফিস, ডা. চেম্বার, কোচিং সেন্টার ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, হঠাৎ করে ২০০৫ সালে আমরা জানতে পারি মার্কেটের ৩য় তলার (৩০১-৩৫১) এবং ৪র্থ তলার (৪০১-৪৫১) মোট ১০২টি দোকান ও ৫ম তলার ৭০০০ বর্গফুট অফিস স্পেস কিনে নিয়েছে ল্যাবএইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা এ.এম. শামীম। দোকানগুলো কিনে নেওয়ার পর মার্কেটের ৩য়, ৪র্থ তলা ও ৫ম তলার ল্যাবএইডের পাশের অংশ ভেঙে হাসপাতালের সঙ্গে এক করে দেয়। এবং ওই ফ্লোরগুলোতে সাধারণ ক্রেতা ও মার্কেটের সংশ্লিষ্ট লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজউক চতুর্থ তলা পর্যন্ত মার্কেটের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু ল্যাবএইড জোর করে হাসপাতাল বানিয়ে ফেলছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দোকান কিনে জোর করে মার্কেটের অংশকে হাসপাতাল বানিয়ে ফেলার অভিযোগে ২০১১ সালের ২৮ আগস্ট ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি করে ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। এর আগে রাজউকের অনুমোদিত নকশার বহির্ভূত নির্মাণ কাজের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিং মল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর রাজউকের অনুমোদিত নকশার বিচ্যুতি ঘটানোর কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়। এরপর ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি চূড়ান্ত নোটিশের মাধ্যমে শপিং মলের ৩য় ও ৪র্থ তলার নকশা বহির্ভূত স্থাপনা ও সংযোগ ব্রিজ নিজ খরচে ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয় ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষকে। এরই মধ্যে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর মার্কেটের ভূমি মালিক ও ল্যাবএইডের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে কনকর্ড আর্কেডিয়া শপিংমল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। শুনানি শেষে ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন আদালত। মামলাটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

সানাউল হক নীরু আরও বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় শপিং মলটি পাঁচ দিন বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর দোকানের পেছনের অংশ ভেঙে ল্যাবএইডের সঙ্গে করিডোর নির্মাণ করে। সেখানে কলাপসিবল গেটও লাগানো হয়েছে। এভাবে একের পর এক মার্কেটের দোকান ল্যাবএইডের সঙ্গে এক করে ফেলায় শপিংমলটির সার্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

একের পর এক দোকান কিনে সেগুলো হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত করে মার্কেটটিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, প্রথমে একটি-দুটি করে দোকান কেনে ল্যাবএইড। সেগুলোতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না খুলে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখে। এরপর সুযোগ বুঝে তাদের ভবনের সঙ্গে দোকানের দেয়াল ভেঙে যুক্ত করে নেয়। এতে মার্কেটের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। দোকান কমে যাচ্ছে। ক্রেতারা আগের মতো মার্কেটে আসছেন না।

সানাউল হক নীরু দাবি করেন, ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষের কাছে গত ২০১২ সাল থেকে জানুয়ারি ২০২০ পর্যান্ত সার্ভিস চার্জ বাবদ বকেয়া রয়েছে পাঁচ কোটি তিরাশি লক্ষ নব্বই হাজার পাঁচশত চুরাশি টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— শপিংমলের সহ সভাপতি আল আমিন ও শাহীদ আহমেদ বাবু, সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ওয়াহিদুর রহমান, সদস্য ফরিদা রিফায়ার, সিরাজুল ইসলাম আকন্দ, মো. শাহীন ও খোরশেদ আলম প্রমুখ।

ওডি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড