• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধারাবাহিক উপন্যাস : দ্যা গেম (১৪তম পর্ব)

  রোকেয়া আশা

১৭ নভেম্বর ২০১৯, ১২:০৩
গল্প
ছবি : প্রতীকী

- শিল্পা? ডাক শুনে চমকে ওঠে শিল্পা খুরানা। ফোন দ্রুত স্ক্রিনলক করে দেয়। আয়েশা এসে দাঁড়িয়েছে ওর পাশে। মেয়েটিকে শিল্পা দেখেছে আগেও। মুসলিম বোধহয়। - আমি আয়েশা। আয়েশা সিদ্দীকা। বাংলাদেশ থেকে। শিল্পা খুরানা হাসে বলে, ‘আমি শিল্পা খুরানা।’ আয়েশা হেসে বলে, ‘জানি।’ শিল্পা প্রশ্ন করতে গিয়েও চুপ হয়ে যায়। আগের দিন ইয়ুন দুয়োর ঘটনাটার পর থেকে অনেকেই ওর নাম জানে। - অভিনন্দন। হেসে মাথা ঝাঁকায় শিল্পা, আয়েশার কথার উত্তরে। যদিও বুঝতে পারছে এই অভিনন্দন জানানোটাই আয়েশার আসল উদ্দেশ্য না। - সন্ধ্যায় কাজ আছে তোমার? আয়েশা প্রশ্ন করে। - আপাতত না। - আমরা তাহলে একটু কথা বলতাম তোমার সাথে। শিল্পার খটকা লাগে কিছুটা। তাও সে সম্মতি দেয়। এই বাঙালীগুলো কি চাচ্ছে বোঝা দরকার। আয়েশা চলে গেলে ফোনের স্ক্রিনলকটা খোলে শিল্পা খুরানা। আইজ্যাক টেক্সট করেছে, ‘আপাতত ইউএসএর টিমটা আটকাও। কোরিয়ার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।’

ইভান সকোলভের অফিস রুম। কির অধোমুখে দাঁড়িয়ে আছে সামনে। ইভানই প্রথম মুখ খোলে, ‘জোশেফ তোমার বন্ধু ছিলো না?’ - হ্যাঁ। শুধু আমার না, মাশারও বন্ধু। ইভান চোখমুখ কঠিন করে ফেলে। তারপর বলে, ‘মাশা গতকাল ভোর চারটায় কবরস্থানে গেছিলো। এ ব্যাপারে কিছু বলেছে ও তোমাকে?’ কির চমকে ওঠে কথাটা শুনে। ভোর চারটায় কবরস্থানে যাওয়াটা হয়তো অস্বাভাবিক হলেও ভয়ংকর কিছু হতো না; যদি না ব্লু হোয়েল নামের কোন সাইবার রিয়েলিটি গেমের জন্ম হতো৷ কির বুঝতে পারে, জোশেফের প্রসঙ্গ কেন এসেছে। - আপনি যা ভাবছেন, তা নয়। জোশেফ ব্লু হোয়েলের ভিক্টিম ছিলো না। ইভান কঠিন গলায় বলে, - এত বিশ্রীভাবে অন্য কেউ আত্মহত্যা করে বলেও তো শুনিনি কির। কির ছোট্ট একটি শ্বাস ফেলে বলে, ‘আমি ছিলাম ওর শবপ্রস্তুতের সময়। ওর গায়ে কোন ছবি বা ট্যাটু ছিলো না। ব্লু হোয়েল ভিক্টিম হলে নিশ্চয়ই ওরকম কিছু থাকতো!’ - জোশেফ কি ছিলো আর কি ছিলো না সে ব্যাপারে আমার কোন আগ্রহ নেই। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত। আশা করি তুমি বুঝতে পারছো। সাবিনা মারা গেছে বহুবছর আগে; আমি দ্বিতীয় বিয়েও করিনি শুধুমাত্র আমার মেয়েটার জন্য। মাশা আমার জন্য সবচাইতে দামী। বলতে বলতে গলা ধরে আসে ইভানের। কির এক পা সামনে এগিয়ে গিয়ে ইভানের হাত চেপে ধরে। - আপনি জানেন, মাশা আমার কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিশ্চয়ই ওর খেয়াল রাখবো। ও যাতে ভুল কিছু না করে, আমরা নিশ্চয়ই খেয়াল রাখবো।

ফিউদর বের হয়ে আসে। ইভানের অফিসে আড়ি পেতে রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে সে। মাশা সকোলভা ব্লু হোয়েল গেম খেলছে সম্ভবত। এও সম্ভব? ব্যাপারটা কি হামাজিয়ান রামকে জানাবে ফিউদর? সে দেখা যাবে। রাতে তাকে হামাজিয়ান রাম ডেকেছে। অবশ্যই ডার্ক ওয়েবে।

বেশ তাড়াহুড়ো করেই বের হয়ে যায় ফিউদর। পার্কিং লটে গিয়ে ভ্যানটা বের করে। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা দাঁড়িয়ে আছে। মাশাও ওদের সাথে। চেহারা স্বাভাবিক। - কির কোথায়? ফিউদর মাশাকে জিজ্ঞেস করে। যদিও ভালো করেই সে জানে কির কোথায়। এবং কি করছে। - বাবার অফিসে। কাজ আছে নাকি। কাজই বটে, মনে মনে ভাবে ফিউদর। অবশ্য সরাসরি মুখে কিছু বলে না। - ওর জন্য অপেক্ষা করতে হবে? ফিউদরের প্রশ্নে মাশা এপাশ ওপাশ মাথা নাড়ে। - না। ওর দেরি হবে। আমরা বরং ওদের নিয়ে একটু মস্কো ঘুরে দেখাই৷ মিশু আর মাহিরা একসাথে চিৎকার করে ওঠে, ‘সত্যিইই? ঘুরতে যাবো?’ মাশা হেসে ফেলে। টিনেজাররা সবসময়ই ছটফটে হয়। - হ্যাঁ।

লাফাতে লাফাতে মিশু আর মাহিরা ভ্যানে উঠে বসে। পেছন পেছন অন্যরা। ফিউদর রিয়ারভিউ মিররে দীপ্তকে দেখে একবার। তারপর গাড়ি স্টার্ট দেয়। - র‍্যাংক থ্রি? অভিনন্দন। মাশা আন্তরিক গলায় বলে। " ধন্যবাদ মাশা। সুমন বলে। তারিকুল তখন দীপ্তের সাথে ফিসফিস করে কথা বলছে। - শিল্পা খুরানাকে বেশিই নরমাল মনে হলো না আজ? দীপ্ত সায় দিয়ে বলে ‘নরমাল হওয়াটা ভালো। তবে একটু অস্বাভাবিক। সবচেয়ে বড় কথা, শিল্পা বারবার ডিভাইস নিয়ে কিছু একটা করছিলো।’

ওদের কথাবার্তা বাংলায় হচ্ছে, তাও একদম নিচু গলায়। ইচ্ছে থাকলেও তাই কিছু বুঝতে পারছে না ফিউদর। হামাজিয়ান রাম ঠিকই বলেছিলো, এই ছেলে দুটো একটু বেশিই স্মার্ট। ফিউদরের আরেকটা মুখ মনে পড়ে। পাঞ্চালী মৈত্র। ইন্ডিয়ার টিমের সবচে বড় শক্তি৷ হামাজিয়ান রামকে এই মেয়েটার ব্যাপারেও জানানো লাগবে৷ মনে মনে ঠিক করে নেয় ফিউদর।

(চলবে...)

‘দ্যা গেম’-এর ১৩তম পর্ব- ধারাবাহিক গল্প : দ্যা গেম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড