নাঈম আহসান
খুব ভোরে বেরিয়েছিলাম আমরা। শীতের সকাল। চারদিকে দুধের সরের মতো ঘন কুয়াশা। পথটা জনমানবশূন্য। তিথির হাত ধরে হাঁটছি। সারা দিন ঘুরব আজ আমরা। সামনে বেশ কয়েকটি খেজুরগাছ। এর কিছুটা নিচে দিয়ে বয়ে গেছে গ্রামের ছোট্ট খালটি। কুয়াশার দাপটে খালটা এখন অদৃশ্য। ‘এই যে রস খাবেন। আর আমাদের মনে রাখবেন’।
ভাবনার জগতে ছেদ পড়লো রস বিক্রেতার ডাকে। আচ্ছা চাচা তোমার কি শীত লাগে না? প্রশ্নটা শুনে চাচা কুয়াশার মতো একটা নির্মল হাসি দিলেন। তিথিকে বললাম, ‘রস খাবে’। -হুম খাওয়া যায়।
তিথি অতি সন্তর্পণে গ্লাসে চুমুক দিলো। লম্বা সময় নিয়ে রসটুকু খেলো তিথি। আমি যত্ন করে ওর রস খাওয়া দেখলাম। আহা! কি সুন্দর ছিলো সে দৃশ্য। তারপর সারা দিন অনেক ঘুরলাম আমরা। হাতে হাত রেখে অনেক পথ হাঁটলাম। সারাদিন কতো জায়গায় কত কি দেখলাম। তারপরও কেন জানি সেই সকালটা মনের মধ্যে গেঁথে রইলো ছবি হয়ে। হয়তো এখনো আছে। না হয় কি... থাক সব প্রকাশ করতে নেই।
কথা ছিলো পরের বৃহস্পতিবারের সকালে এই খেজুর তলায় দেখা হবে আমাদের। তারপর কেটে গেলো অনেকগুলো বৃহস্পতি, সে আসে না। আসেই না। আসলই না। সকালের রোদে মিলিয়ে যাওয়া শিশিরের মতো সেও হারিয়ে গেলো আমার জীবন থেকে। আজও শীত আসে।
শিশিরের শব্দ কানে বাজে। সেই রাস্তা, খাল, খেজুরগাছ, সব আছে। নেই শুধু আমার তিথিটা। শীতের সকালে শীতল রস এখনো দেখি, কিন্তু সেটা মুখে ওঠে না। খেতে গেলেই তিথির মুখটা ভেসে ওঠে মনের ভাঙা আয়নাতে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড