• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধারাবাহিক গল্প : এক পলকের একটু দেখায় (তৃতীয় পর্ব)

  সাবিকুন নাহার নিপা

৩০ অক্টোবর ২০১৯, ১৫:৫২
গল্প
ছবি : প্রতীকী

ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরতেই অনন্যা সিসিলিয়া কে বলল, ‘বলেছিলাম না আজ গেস্ট আসবে। সত্যিই এসেছে তবে সে তোমার কাছে আসেনি। উপরের ঘরে ভাড়া থাকবে বলে এসেছে।’ - ফ্যামিলি বুঝি? - না ব্যাচেলর। - বাহ তাহলে তো আঙ্কেলের চিন্তা কমলো। - হু। আরও একটা খবর আছে। - কি? - বাবা প্রতীককে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাবেন। এবং সেখানেই থাকবেন। সিসিলিয়ার মন খারাপ হয়ে গেল। অনন্যা একমনে কাজ করে যাচ্ছে। সিসিলিয়া জিজ্ঞেস করল, ‘প্রতীক ও কি সেখানে থাকবে?’ - হ্যাঁ। ওখানে থেকে জমি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে কাঠের ব্যবসা করবে। - এই সিদ্ধান্ত কি আঙ্কেলের? - হ্যাঁ। সিসিলিয়া কিছু বলল না। নিজের রুমের দিকে না গিয়ে আঙ্কেলের রুমের দিকে গেল।

রহমান সাহেব কাপড় ইস্ত্রি করছিলেন। সিসিলিয়াকে দেখে বললেন, ‘কিছু কি বলবে?’ - আঙ্কেল আপনি প্রতীককে নিয়ে যাবেন না প্লিজ। ওরা দু’জন দু’জনকে ছাড়া থাকতে পারবেন না। - ওদের ব্যাপারে চিন্তা করতে তোমাকে কে বলেছে? তুমি নিজের চরকায় তেল দাও। সিসিলিয়া চুপ করে থেকে বলল, ‘আঙ্কেল আমি চাকরির চেষ্টা করছি। সামনের মাস থেকে কিছু টাকা বাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। তবুও আপনি যাবেন না।’ রহমান সাহেব শান্ত গলায় বললেন, ‘আমাকে যেতে না বলার তুমি কে?’ সিসিলিয়া ভরকে গেল। রহমান সাহেব এতো শান্তভাবে কখনো কথা বলেন না। - শোনো মেয়ে তুমি তোমারটা ভাবো। আর আমাকে আমারটা ভাবতে দাও। আমার ছেলে কি করবে না করবে সেটা নিয়ে আমি ভাববো। সিসিলিয়া নিচু গলায় বলল, ‘অনন্যাও কারো না কারো মেয়ে আঙ্কেল।’ রহমান সাহেব গমগমে গলায় বললেন, - আমার চেয়ে বেশী তুমি এই দুনিয়া দেখনি মেয়ে। আর নিজের সীমার মধ্যে থাকো। দুই কলম লেখা পড়া শিখে আমাকে জ্ঞান দিতে আসবে না। সিসিলিয়া আর কিছু বলল না। চলে গেল সেখান থেকে।

প্রতীক সিসিলিয়ার ঘরের দরজায় নক করে বলল, ‘লিয়া আমি আজ চলে যাচ্ছি।’ - এতো সহজে কেনো হেরে যাচ্ছো প্রতীক ভাই? - হেরে যাচ্ছি না তো লিয়া। নিয়তি মেনে নিয়েছি। মেনে নিয়েছি যার একে হয় না তার একশ তেও হয়না। নাহলে দেখো ইউনিভার্সিটির টপ স্টুডেন্ট হয়েও আমি একটা সরকারি বেসরকারি চাকরী জোটাতে পারছি না। আর ব্যবসা যে করবো তার জন্য ক্যাপিটাল লাগবে সেটাও নেই। তারমধ্য আবার অনন্যাকে এনে কষ্ট দিচ্ছি। তারচেয়ে বরং বাবার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়াই ঠিক হবে।

সিসিলিয়া চুপ করে রইলো। প্রতীক আবারও বলল, ‘লিয়া অনুকে তোমার কাছে রেখে গেলাম তুমি ওকে দেখো। বেশীদিন তো ওখানে থাকবো না। এই ধরো মাস ছয়েক তারপর আবার চলে আসবো।’

রহমান সাহেব বের হওয়ার আগে সিসিলিয়াকে ডাকলেন। সিসিলিয়া কাছে যেতেই বললেন, ‘মাগো এখানে বসো।’

সিসিলিয়া বসতেই বলল, আমি মানুষটা খারাপ হতে পারি তাই বলে এতটাও খারাপ না। ছেলেটা প্রতিমাসে চাকরির পরীক্ষা দেয় আর ওই পরের ঘরের মেয়েটা আসায় থাকে যে এবার তার স্বামীর চাকরি হবে। চোখের সামনে আমি সেটা আর দেখতে পারছি না মাগো। আমার খুব কষ্ট হয়। এই বাড়ির দোতালা ভাড়া দিয়ে যা পাওয়া যায় সেটা কারেন্ট বিল, পানি বিল, আর গ্যাস বিলে যায়। তবুও প্রতিমাসে তুমি টাকা দাও বলে খেতে বসে একটু ভালো মন্দ খেতে পারি। কিন্তু সেদিন দেখলাম ওই ছোট মেয়েটা আগের দিনের বাসী শিমের তরকারি দিয়ে ভাত খাচ্ছে। আমি বাবা হয়ে সেটা কিভাবে সহ্য করি বলো! তাই পালিয়ে যাচ্ছি। জমিজমা বিক্রি করে কিছু টাকা যদি ছেলেটার হাতে দিতে পারি তবুও ছেলেটা ব্যবসার চেষ্টা করে দেখুক। আফসোস তো আর থাকবে না। আর আমি বরং ওখানেই থাকব। মরলে তোমার আন্টির পাশে কবর দিও তোমরা।

সিসিলিয়া রহমান সাহেবের হাত ধরল। ঠাণ্ডা হাত দু’টো শক্ত করে চেপে ধরে বলল, ‘আঙ্কেল আপনি একদম ভরসা হারাবেন না। আপনি আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনার ভাগ্যে ভালো কিছু রেখেছে।’

- আমি আর নিজের জন্য ভাবি না মাগো। আমি শুধু তোমার আর ওই মেয়েটার কথা ভাবি। আমার কোনো মেয়ে নেই। আল্লাহর কাছে খুব চেয়েছিলাম যেন একটা মেয়ে হয় কিন্তু আল্লাহ ছেলে দিলেন। সেই ছেলেদের মুখ দেখে মেয়েদের কথা ভুলে গেলাম। মেয়েদের বাবা যে কিরকম হতে হয় সেটা আমি জানিনা। আর জানিনা বলেই আমি তোমাদের সাথে এতো খারাপ ব্যবহার করি। আরও একটা কারণে করি যেন তোমরা আমাকে ঘৃণা করো। কিন্তু তোমরা দুজন তবুও আঁচল ভরে ভালোবাসা দিয়ে গেছো। সিসিলিয়া প্রাণপণে চেষ্টা করছে কান্না আটকানোর। না সে কাঁদবে না। এতদিন যখন কাঁদেনি তাহলে আজ কেন কাঁদবে! সিসিলিয়া ভাঙা গলায় বলল, ‘আঙ্কেল আপনি আসলে অন্য কারণে পালাতে চাইছেন তাই না?’ রহমান সাহেব চোখ নামিয়ে ফেলল। চুপ করে থেকে বলল, ‘তুমি চিন্তা করো না মা! আমি ভাঙতে ভাঙতে এতো শক্ত হয়ে গেছি যে কোনো শক্তিই আর আমাকে শেষ করতে পারবে না।’ সিসিলিয়া কিছু না বলে শক্ত করে হাত চেপে ধরে রাখল রহমান সাহেবের।

২ তাওসিফ তিনদিন ধরে সৈকতের কোনো খোঁজ পাচ্ছে না। না কোনো ফোন আর না কোনো মেসেজ। তাওসিফ বিরক্ত হয়ে শেষে সৈকত কে ফোন করা বন্ধ করে দিয়েছে। ও এখন বসে আছে বসুন্ধরার এক নামি দামি রেস্টুরেন্টে। প্রমার জন্য ওয়েট করছে। প্রমার সাথে ওর পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ক্রিয়েটিভ গ্রুপ থেকে। এরপর দুজনের ম্যাসেঞ্জারে কথা আর সেখান থেকেই বন্ধুত্ব। তাওসিফের যে ব্যাপার টা ভালো লেগেছে সেটা হলো প্রমা আটপৌরে মেয়েদের মতো না। যেটা সে গত দেড় বছরে টের পেয়েছে। প্রমার মধ্যে বাঙালি মেয়েদের মতো সংসার, বাচ্চা, কাচ্চা এসবের কোনো স্বপ্ন নেই। তার একমাত্র নেশা হচ্ছে দেশ বিদেশ ঘোরা আর ফটোগ্রাফি করা।

তাওসিফ দেখল প্রমা রেস্টুরেন্টে ঢুকেছে। প্রথম দর্শনেই প্রমাকে তার ভালো লাগলো। মেয়েটা একটা নরমাল টপ আর জিন্স পরেছে আর সাথে গলায় স্কার্ফ। চুলগুলো উপরে উঠিয়ে বাধা। কোনো রকম ভণিতা ছাড়াই প্রমা বলল, - স্যরি আমি আসলে কখনই ঠিক সময়ে আসতে পারি না।

তাওসিফ মুচকি হেসে বলল, নো প্রবলেম। আমার হাতে এখন অফুরন্ত সময়। প্রমা কিছু বলল না। তার নার্ভাস লাগছে। কিন্তু কেন! সবকিছুই তো আগে থেকে প্ল্যান করা। তবুও কেন নার্ভাস লাগছে! তাওসিফ জিজ্ঞেস করল, - তোমার জন্য কি অর্ডার করবো? প্রমা তখনও ঘেমে যাচ্ছে। এরকম কেন হচ্ছে তার? এর আগেও তো অনেক ছেলেদের সাথে মিশেছে তাদের সাথে তো কখনো এরকম হয়নি! - তুমি কি অসুস্থ প্রমা? - না আমি ঠিক আছি। এখানে কেমন দম বন্ধ লাগছে। - তাহলে চলো বাইরে যাই?

গাড়িতে উঠতেই তাওসিফের প্রথম প্রশ্ন ছিলো, - তুমি কি সবসময় নিজেই ড্রাইভ করো? - হ্যাঁ। - তোমাকে তো এর আগে চুপচাপ মনে হয়নি কখনো। প্রমা চুপ করে থাকল। তাওসিফ আবারও বলল, - আমরা কাশ্মীরে কবে যাচ্ছি প্রমা? - জানিনা। - জানিনা মানে? আমরা তো আগেই প্ল্যান করে রেখেছিলাম অক্টোবরের শেষে কাশ্মীরে যাব। - সবসময় কি আর সবকিছু প্ল্যান করে হয়? কখনো কখনো তো অনেক কিছু প্ল্যান ছাড়াই হয়। তাওসিফের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। এই মেয়েটার সাথে দুইবছর ধরে রাত জেগে কতশত কথা আর প্ল্যান করেছে অথচ মেয়েটা এখন এমন ভাব করছে যেন ওকে চেনেই না। তাওসিফের কপালের রগ টা রাগে ফুলে উঠছে। - আচ্ছা প্রমা তোমার সমস্যা টা কি বলবে? এমন তো নয় যে তুমি আমাকে চেনো না..... প্রমা অসহায় চোখে তাওসিফের দিকে তাকালো। তাওসিফ সে চোখ দেখে এক মুহুর্তেই মায়ায় পরে গেল। প্রমার হাত টা আলতো করে চেপে ধরে বলল, - কি সমস্যা প্রমা? প্রমা এবারে সবচেয়ে বড় মিথ্যে কথাটা বলল। কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, - বাবা তার স্ত্রীর কথামতো আমার বিয়ে ঠিক করেছে তাওসিফ। তাও আবার বয়স্ক লোকের সাথে। তাওসিফের মন টা খারাপ হয়ে গেল। প্রমার বাবা আর সৎ মায়ের ব্যাপার টা ও আগে থেকেই জানতো। তাওসিফ কি বলবে খুঁজে না পেয়ে প্রমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে রাখল। প্রমাকে তার কি বলা উচিত!

৩ সিসিলিয়া যে বাড়িটায় থাকে সেটা রহমান সাহেবের বাড়ি। নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে বাড়িটা আরও ভিতরে। দোতালার অর্ধেক অসম্পূর্ণ অবস্থায় এই বাড়িটা কিনেছিল রহমান সাহেব। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে দোতালার পুরোটা করা সম্ভব হয়নি। দোতালার দুই রুমে তিনদিন আগে ভাড়াটিয়া আসলেও তার সাথে এখনও সিসিলিয়ার দেখা হয়নি। লোকটা দরজা জানালাও খোলেনি। সিসিলিয়া কৌতূহলবশত অনন্যা কে জিজ্ঞেস করল, - যে লোকটা এসেছে তাকে কি তুমি দেখছো? অনন্যা তরকারি কাটা অবস্থায় ই বলল, - হ্যাঁ দেখেছি। - ওনাকে দেখে কি সন্দেহজনক কিছু মনে হয়েছে অনন্যা? - না তো! বরং ভালো মানুষ মনে হয়েছে। প্রথম দেখায় ই আমাকে বলল, ভাবী আমি কিন্তু চায়ে চিনি বেশী খাই। - আমার তো লোকটাকে সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। - কেন? - এই যে তিনদিন ধরে ওনার ঘরের দরজা জানালা বন্ধ আছে। একবারের জন্য বাইরেও বের হয়নি। অনন্যা একটু ভেবে বলল, - এমনও তো হতে পারে লোকটা বের হয়েছিল কিন্তু সেটা আমরা দেখিনি। সিসিলিয়া মাথা নাড়লো। হতে পারে। সিসিলিয়ার ক্লাস সপ্তাহে তিনদিন। দুদিন ধরে ও যে ব্যাপার টাকে খেয়াল করেছে সেটা আর অনন্যাকে বলেনি।

রাত ১০ টার মধ্যেই সিসিলিয়া শুয়ে পড়েছে। যদিও তার ঘুম হবে দেড়টার পর। শুয়ে একটু পর পর সময় দেখছে। সোয়া এগারো টার দিকে সেই ফোন টা আসবে। যেটা গতো সাড়ে তিন বছর ধরে প্রতিদিন রাত সোয়া ১১ টায় আসে। মাঝে মাঝে একটানা অনেক দিন আসেও না। এই যেমন গতো একমাস ধরে ফোন টা আসেনা। সিসিলিয়ার অস্বস্তি হয়। যদিও ও জানেনা যে ফোন কে করে তবুও ওর কেন যেন মনে হচ্ছে সেই লোক টা বিপদে আছে। এই লোকটা যে ছেলে সে ব্যাপারে সিসিলিয়ার সন্দেহ নেই। কিন্তু সন্দেহ হচ্ছে এই লোকটা কে হতে পারে! তিন বছর আগে কক্সবাজার ইউনিভার্সিটি থেকে ট্যুরে গেলে সেখান থেকে ফেরার দিন রাত থেকে ফোন টা আসে। সিসিলিয়া ভেবেছিল হয়তো ডিপার্ট্মেন্টের কেউ হবে। কিন্তু খোঁজ খবর করেও বের করতে পারেনি। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো যে ফোন করে সে কখনো একমিনিটের বেশী রাখেনা। এক মিনিট হয়ে গেলে কল কেটে দেয়। কিন্তু কোনো কথা বলেনা।

হঠাৎ দরজায় ধাক্কার শব্দ শুনে সিসিলিয়ার তন্দ্রা ভাব কেটে গেল। অনন্যাও রুম থেকে বেরিয়েছে। সদর দরজায় ক্রমাগত আওয়াজ চলছেই। সিসিলিয়া দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, - কে? - আমি পাশের বাসার। আপনাদের উপর তলায় কেউ কি থাকে? - হ্যাঁ নতুন ভাড়াটিয়া এসেছে। - ওনার ঘর থেকে দেখলাম ধোঁয়া বেরুচ্ছে। রান্নাঘরে কিছু পুড়ছে মনে হয়। মনে হলো জানানো দরকার। অনেকক্ষন ধরেই দেখছি। সিসিলিয়া দরজা না খুলেই লোকটার সাথে কথা বলল। লোকটাকে বিদায় দিয়ে অনন্যাকে নিয়ে দোতালায় গেল।

দোতালার বাইরের জানালা খোলা। সেখান থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ধোঁয়া বেরুচ্ছে। সিসিলিয়া বার দুয়েক ডাকল। অনন্যা ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, - এখন কি করবো লিয়া? সিসিলিয়ার মেজাজ খারাপ হলো রহমান সাহেবের উপর। বাড়িতে দুটো মেয়ে থাকতে রহমান সাহেব কিভাবে একটা ছেলেকে একা ভাড়া দেয়! সিসিলিয়া জিজ্ঞেস করল, - অনন্যা তুমি কি লোকটার নাম জানো? - সৈকত। সিসিলিয়া ডাকল আবারও। বার দুয়েক ডাকার পর সৈকত ভাঙা গলায় বলল, - কে? - সৈকত সাহেব আপনার ঘরের বিছানার চাদরে কয়েল পড়ে পুড়ে গিয়ে ধোঁয়া হচ্ছে। আপনি কি একবার দেখবেন।

জ্বরের ঘোরে সৈকত সিসিলিয়ার কথা বুঝতে পারল না। ওর মাথায় ও ঢুকলো না। ও কোনোভাবে হেলেদুলে দরজা খুলে দিলো। দরজা খুলতেই সিসিলিয়া আর অনন্যা ঘরে ঢুকলো। সৈকত অন্ধকারে কিছু দেখতে না পেয়ে লাইট জ্বালালো।

সিসিলিয়ার মেজাজ খারাপ হলো খুব। মানুষ এতো অগোছালো হয়! বাথরুমে পানি আনতে গিয়ে দেখতে পেলো বালতি ভর্তি করে জামা কাপড় ভেজানো যা থেকে ইতিমধ্যে গন্ধ বেরিয়েছে। জগ ভর্তি করে পানি এনে বিছানায় ঢেলেছে। আজব মানুষ বিছানা ছেড়ে ফ্লোরে ঘুমাচ্ছে। বিছানার কোনায় কয়েল জ্বালিয়ে রেখেছে যেখান থেকেই আগুন টা লেগেছে। বিছানার কোনায় ধোঁয়া দেখেই সিসিলিয়া বুঝে ফেলেছিল।

সবকিছু গুছিয়ে সিসিলিয়া ফিরে আসার সময় রাগী চোখে সৈকতের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘দয়া করে আপনি একটু সাবধানী হবেন। আজ যদি একটু দেরি হতো তাহলে আপনার সাথে সাথে হয়তো আমরাও কালকের নিউজে ব্রেকিং নিউজ হয়ে যেতাম। তাই হাতজোর করছি আপনাকে।’ সৈকত চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে বিরবির করে বলল, ‘এত রাগ করবেন না বিষন্নতা। রাগলে আপনার মাথার দুপাশে দুটো শিং দেখা যায় ‘ এটুকু বলতে না বলতেই সিসিলিয়ার গায়ের উপর নেতিয়ে পড়ল।

(চলবে...)

আরো পড়ুন দ্বিতীয় পর্ব- ধারাবাহিক গল্প : এক পলকের একটু দেখায়

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড