সাহিত্য ডেস্ক
শ্রান্ত বরষা, অবেলার অবসরে, প্রাঙ্গণে মেলে দিয়েছে শ্যামল কায়া; স্বর্ণ সুযোগে লুকাচুরি-খেলা করে গগনে-গগনে পলাতক আলো-ছায়া। আগত শরৎ অগোচর প্রতিবেশে; হানে মৃদঙ্গ বাতাসে প্রতিধ্বনি: মূক প্রতীক্ষা সমাপ্ত অবশেষে, মাঠে, ঘাটে, বাটে আরব্ধ আগমনী। কুহেলীকলুষ, দীর্ঘ দিনের সীমা এখনই হারাবে কৌমুদীজাগরে যে; বিরহবিজন ধৈর্যের ধূসরিমা রঞ্জিত হবে দলিত শেফালি শেজে। মিলনোত্সবে সেও তো পড়েনি বাকী, নবান্নে তার আসন রয়েছে পাতা: পশ্চাতে চায় আমারই উদাস আঁখি; একবেণী হিয়া ছাড়ে না মলিন কাঁথা।
একদা এমনই বাদলশেষের রাতে— মনে হয় যেন শত জনমের আগে— সে এসে সহসা হাত রেখেছিল হাতে, চেয়েছিল মুখে সহজিয়া অনুরাগে; সে-দিনও এমনই ফসলবিলাসী হাওয়া মেতেছিল তার চিকুরের পাকা ধানে; অনাদি যুগের যত চাওয়া, যত পাওয়া খুঁজেছিল তার আনত দিঠির মানে। একটি কথার দ্বিধাথরথর চুড়ে ভর করেছিল সাতটি অমরাবতী; একটি নিমেষে দাঁড়ালো সরণী জুড়ে, থামিল কালের চিরচঞ্চল গতি; একটি পণের অমিত প্রগলভতা মর্ত্যে আনিল ধ্রুবতারকারে ধ’রে একটি স্মৃতির মানুষী দুর্বলতা প্রলয়ের পথ ছেড়ে দিল অকাতরে।
সন্ধিলগ্ন ফিরেছে সগৌরবে; অধরা আবার ডাকে সুধাসংকেতে, মদমুকুলিত তারই দেহসৌরভে অনামা কুসুম অজানায় ওঠে মেতে। ভরা নদী তার আবেগের প্রতিনিধি, অবাধ সাগরে উধাও অগাধ থেকে; অমল আকাশে মুকুরিত তার হৃদি স্বাতি মণিময় তারই প্রত্যভিষেকে। স্বপ্নালু নিশা নীল তার আঁখি-সম; সে-রোমরাজির কোমলতা ঘাসে-ঘাসে; পুনরাবৃত্ত রসনায় প্রিয়তম; কিন্তু সে আজ আর কারে ভালোবাসে। স্মৃতিপিপীলিকা তাই পুঞ্জিত করে আমার রন্ধ্রে মৃত মাধুরীর কণা: সে ভুলে ভুলুক, কোটি মন্বন্তরে আমি ভুলিব না, আমি কভু ভুলিব না।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড