• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তানজিনা মাইশার তিনটি কবিতা

কালো অক্ষরের চিঠি

  তানজিনা মাইশা

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:২৭
কবিতা
ছবি : প্রতীকী

শূন্যতার অনুভূতি

আপনি আমাকে কখনো তুমি বলে ডাকার অনুমতি দেননি জনাব, তাই কখনো ‘এই শুনছো’ বলে ডাকতে পারিনি। আপনাকে তুমি করে ডাকতে গেলেই বলতেন, ‘উহু আপনি করেই বলুন প্রিয়তমা।’

কতবার বলেছি কেন এ কঠিন নিয়ম বলুন তো? আপনি বলতেন, আপনি থেকে ‘ই’ কার সরালে কি হয় বলুন তো? আমি বলেছিলাম, ‘আপন হয় জনাব!’

আর এটা বলেই আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম কি যে অবাক হয়েছিলাম আমি জানেন আপনি? কতটা গভীরভাবে ভাবেন আপনি বলুন তো?

আপনি আমায় কখনো রিক্সায় নিয়ে ঘুরেননি প্রতিদিন ২০মিনিট হেঁটে পাবলিক বাসে উঠতেন। কতবার বিরক্তি হয়ে বলেছিলাম আপনি কিপ্টে কেন? আমিই না হয় দিবো রিকশাভাড়া, চলুন না? আপনি বলতেন এই যে প্রিয়তমা শুনুন কি বলি- আপনি যখন ঐ মহিলা সিটটিতে বসেন, তখন আমি কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকি আপনি বারবার আপনার দৃষ্টিতে আমাকে খুঁজেন কোথাও একটা ভীরে হারিয়ে গেলেও ঠিকই ঐ চোখ আমার কাছেই পড়ে থাকে, আর হারানোর ভয় আপনাকে ভর করে, তা কি রিকশার পাশে বসে গেলে অনুভব করতে পারতাম বলুন? আমি ঠিক তখনো অবাক হয়েছিলাম জনাব আপনি কতটা দূর থেকেই আমায় স্পর্শ করে ফেলতেন অথচ আমি তা কখনো টেরই পেতাম না।

এই যে আপনি এখন আমায় ছেড়ে দূরে আছেন এইভাবেও কি ভালোবাসা যায় বলুন? তবুও এইভাবেই আপনাকে ভালোবেসে যাচ্ছি দূর থেকেই আপনি আমায় অনুভবে স্পর্শ করে যাচ্ছেন আমিও আপনায় ভেবে দিনরাত পার করছি, এতেই তৃপ্তি জনাব এতেই প্রশান্তি পাচ্ছি খুব এইভাবে দিনকে দিন ভালোবাসা কমছে না জনাব, বেড়েই যাচ্ছে অবিরত একটু একটু করে। আপনি কখনো ফিরবেন না জনাব, আমি চাই না আমার ভালোবাসা কখনো কমে যাক, আপনিও ফিরবেন না আর আমিও ফুরবো না, বেড়ে চলুক ভালোবাসা, ভারী হোক ঝুলি।

পুনরায় জন্ম তোমার আমার

যদি তুমি আমায়, তোমার প্রতিটি নিশ্বাসে অনুভব করে থাকো অর্ঘ্য, তাহলে জেনে নিও সত্যিই যদি সাতজনম বলে কিছু থেকে থাকে, তাহলে গত সবগুলো জন্মেই তোমার জন্য আমিই জন্মেছি!

হয়তো কোন এক যুগে তোমার মোনালিসা হয়ে, হয়তো এরপর জন্মেছিলাম তোমার বনলতা হয়ে, হয়তো জন্মেছিলাম চণ্ডীদাসের রজকিনী হয়ে, এবার বোধহয় জন্মেছি অর্ঘ্যের শঙ্খ হয়ে! আমি জন্মাতে চাই বারবার ভিন্ন রূপে তোমার হয়ে তুমিও জন্মাবে ভিন্ন রূপে বারবার আমার হয়ে!

কোন এক বিষণ্ণ সন্ধ্যায়, অথবা বাদুর ডাকা রাতে, একটা চিঠি রেখে যাবো তোমার জন্য, যেদিন তুমি নজরুলের মতো অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় চলে যাবে, অথবা হয়ে যাবে কোন এক ধ্রুবতারা, সেদিন ঈশ্বর তোমায় যদি কিছু দিতে চায় তুমি এই চিঠি দেখিয়ে আমায় চেয়ে নিও অর্ঘ্য!

আমি অপেক্ষা করবো খুব করে অপেক্ষা করবো তুমি আর আমি আবার ফিরে আসবো ভিন্ন নামে, ভিন্ন রূপে, দুজনের জন্য অর্ঘ্য।

কালো অক্ষরের চিঠি

তোমাকে যেদিন ভালোবাসি বলেছিলাম তুমি সুখে গা ভাসিয়ে দিয়ে বলেছিলে বলো প্রিয়তমা কি চাই তোমার?

আমি তোমার মুখপানে চেয়ে বলেছিলাম একটা চিঠি চাই আমার আকাশী রঙের পৃষ্ঠায় কালো কালো অক্ষরে আঁকাবাঁকা হাতের লিখায়।

তুমি মুখ ফিরিয়ে বলেছিলে এ কি বলো? চিঠি! এতো খুবই কঠিন কাজ প্রিন্ট মেশিনে টাইপ করে দিলেকি হবে না? আমি শুনে খুব ব্যথিত হয়েছিলাম। মনে মনে ভাবছিলাম এ কেমন তুমি? পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে তুমি যদি শুধু একটি বাক্যই লিখে যেতে, আমি সেটাই যত্ন করে তুলে রাখতাম। সেই বাক্যটি যদি হতো

আমি তোমাকে ভালোবাসি অথবা আমাকে ভুলে যাও।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড