সুশান্ত হালদার
জীবন তরী
যৌবনের আঁচে যখন নেতিয়ে পড়া হৃদ-স্পন্দন এঁটে দিচ্ছে বেখেয়ালি জীবনের সেফটিপিন তখন নদীর বাঁকে অগণিত ঢেউয়ের কান্না শুনতে পাচ্ছি সেকি নারীত্বের গন্ধম প্রীতি নাকি উড়ন্ত পিপীলিকার যজ্ঞাহুতি?
হে প্রেম! মনে করো না যেনো সুখের সাগরে ভাসিয়েছি তরী মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, দমকা বাতাসে দেবো জীবন নদী পাড়ি যায় যদি যাক ডুবে বল্লমধারী অশ্বারোহী
বসন্ত ছাড়াই মেলেছে পাপড়ি কামিনী আশাহত জীবন যদি আশাতীত গড়তে চায় বসতি তবে জেনে রেখো প্রিয়তমা নারী গন্ধমই হোক জীবনের সারমেয় কাহিনী!
প্রেম
ইসাবেলা, ভেবেছিলে কী বুঝবে চোখের ভাষা তড়িৎ প্রবাহের মতো পড়ে ফেলবে শরৎচন্দ্রের দত্তা কম্পিত ঠোঁটে আটকে যাবে না বলা কথা তবুও হঠাৎ বৃষ্টির স্পর্শে জেগে উঠবে শিরা উপশিরা
মেঘেরাও সচল যদি অমল ভেবে করো চুম্বন প্রথম স্পর্শে কুমারী যোনির মতো কেঁপে ওঠে ছিলো দেহ-মন প্রখর রৌদ্রতাপে তবুও অমলের সেকি আস্ফালন লজ্জাবতী লতার মতো কামে সিক্ত বৃষ্টি ভেজা বন
আগুনের পরশ যদি মনে রাখে পুড়ে যাওয়া ক্ষত তবে মনে রেখো ইসাবেলা আমিও ছিলাম প্রথম প্রেমে তোমারই মতো ক্ষত বিক্ষত পুড়ে যাওয়া আমাজন!
শ্রাবণী
কত কিছুই তো বুঝিনি শ্রাবণী এই যেমন ভাষা, চোখের ইশারা, রক্তক্ষরণে হৃদয়ের কান্না চকিত দুর্ভেদ্য পথের ঠিকানা,অস্পষ্টতায় ভরা তোমার দৃষ্টিহীন সীমানা
কত কিছুই তো বুঝিনি বিরহ ব্যথায় বিষণ্ণ গোধূলি, উৎসুক রাতের শীৎকার ধ্বনি ভোরের কুয়াশায় সঙ্গম প্রশান্তি,উলঙ্গ বুকে নির্লিপ্ত আঙ্গুলের হামাগুড়ি
অথচ দেখো শ্রাবণী মৌন বাতাসে কাঁকনের ঝঙ্কারধ্বনি শাড়ির আঁচলে খুঁজছে সুখ অনাহারী প্রজাপতি, আষাঢ় এলেই বুঝতে পারি - জং ধরা শিকে পুরনো প্রেমিকের হাতছানি!
রঞ্জনা
আমার স্ত্রী, যাকে রঞ্জনা বলে ডাকি রক্তিম অধরোষ্ঠ পিঙ্গল গালে ফুটেছে গোলাপ কুন্তলে মধুমালতী আষাঢ় গগনে কালোমেঘের আস্তানা কপালে লালটিপ পাকাধানে সোনারঙ দিগন্ত জোড়া কাঁচলহীন অনাবৃত স্তন সাদামেঘে গুণ্ঠিত নীলাম্বর উলঙ্গ হাতে কাঁকনের দোলা পাহাড়ের বুকে প্রাণোচ্ছল ঝরনা কাজল কালো চোখ হতাশার মাঝে নিরাশা বেঁধেছে আশার বাসা
আমার স্ত্রী, যাকে রঞ্জনা বলে ডাকি সে এখন বৃষ্টি ভেঁজা সন্ধ্যাতারা ইশারায় ডেকে দিয়েছে বিমূর্ত ভালোবাসা রামধনু রঙে তাই রাঙিয়েছি দিনান্তে গোধূলি বেলা কাকচক্ষু জলে এখনো একাকার মূর্ছিত বৃষ্টির ফোঁটা!
জ্বালা
সব ছেড়েছুড়ে বসে আছি তিলোত্তমা নগরী জানতাম কি তোমার অন্তরে রেখেছো ভরে কালকেউটের বিষ? অনন্ত জ্বালা আমার সম্মুখে ঘুরে ফিরে কোঠরাগত চোখে দেখি ধোঁয়ায় ধূসরিত বিকাল তবুও ঘুরে ফিরে আসে রাত্রিবসানে ক্ষয়ে যাওয়া সকাল
লুণ্ঠিত বস্ত্রে আমার মেঘাচ্ছন্ন আকাশ কে বা কারা লুট করেছে পাঁজরে বাঁধা ইতিহাস কঙ্কালসার দেহটি ঘিরে এখনো হরদম উল্লাস মহাজনির খাতায় জননী আমার বিকিয়ে দিয়েছে যা ছিলো তার অভিলাষ তবুও কি মিটেছে আশা? নগ্নবুকে এখনো জারজ নারীর শরীরে বেঁধেছে বাসা!
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড