• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাবাত রেজা নূরের তিনটি কবিতা

কবিতার কাছে হাঁটু মুড়ে বসি

  রাবাত রেজা নূর

১৮ জুলাই ২০১৯, ১১:২৪
কবিতা
ছবি : প্রতীকী

আবে হায়াত

রাতের কোলে ঘুমিয়ে পরে পৃথিবী আমি একা জেগে রই; নিঃসঙ্গ মুছে যায় বারোয়ারি জীবনের রূপ, রস, গন্ধ; আয়না খুলে দেখি সে এক অবাক পৃথিবী।

রাতের কোলে ঘুমিয়ে পরে রাত আমি একা চাঁদ হয়ে থাকি হেলাফেলা অবহেলা মুছে দিয়ে নীল রঙে মোহান্ধ জীবনের ছবি আঁকি

রাতের কোলে ঘুমিয়ে পরে প্রেম আমি একা দেবদাস হয়ে যাই; ছন্নছাড়া পরবাসী বাতাসের ঢেউ; উচ্ছৃঙ্খলাকে উসকে দিয়ে হঠাৎ লুকিয়ে পড়ে কেউ।

রাতের কোলে সঁপে দিয়ে মোহান্ধ জীবনের বারোয়ারি রঙ; অমৃতের পেয়ালা ভেবে পান করি আকণ্ঠ গরল বেমালুম ভুলে গিয়ে নিজ জাতপাত; চাঁদ তার জোসনার থালা উল্টালে দেখি হায়; বিষ নয়; পান করেছি আবে হায়াত।

মায়ানদী

যেদিকে তাকাই একটা বড়সড় নদী প্রবাহিত হতে দেখি; শুকনো খটখটে চারদিক; নদীটার তবুও ভরা যৌবন অক্টোপাসের মত আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে রেখেছে নদীটা। শূন্য মরুভূমির মধ্যেও নদীটা তুমুল সতেজ; গাঢ় কাকচক্ষু জলে মিটায় তিয়াস।

নদীটার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই; আদিবাসী শামুকের মত শক্ত খোলসে লুকানো জলতরঙ্গ পাথরের বুক চিরে বয়ে চলে নদীটার প্রেম।

কবে কোথায় নদীটার সাথে পরিচয় ; জানিনা সে না আমি, কিভাবে প্রণয়; বেমালুম ভুলে গেছি

সে এক অবাক নদী; তার প্রেমে কোনোদিন ডুবেনি; এমন পুরুষ নাই।

নদীটা উৎসারিত হয়েছে মানুষের কলব থেকে; সিনার ভেতরে তার রঙধনু রঙ নদীটা প্রবাহিত মানুষের মধ্য দিয়ে; পা থেকে মাথা অবধি, নদীটার আশ্রয়স্থল।

নদীটার নাম মায়ানদী।

কবিতার কাছে হাঁটু মুড়ে বসি

ফুরসত পেলেই কবিতার কাছে হাঁটু মুড়ে বসি অর্ঘ্য দেবার মত কিছুই নেই; একটা ডানপিটে বাল‍্য কাল; একটা তছনছিয়া কৈশোর; আর আসি আসি করা যৌবন এই তো সম্বল।

কবিতার কাছে হাঁটু মুড়ে বসি বাল্য কাল অর্ঘ্য দিয়ে বলি; ‘ভালোবাসি’ আদিবাসী শামুকের মত খোলস খুলে; নাও, চাইলে নিয়ে নিতে পার দু চারটে কাল বৈশাখী ঝড়; আমার শৈশব থেকে। সব চকচকে স্মৃতি যেন হরিণ ওয়ালা এক টাকার নোটের মত। কবিতা চোখ তুলে চায় না; সলজ্জ বধূর মত।

কবিতার কাছে হাঁটু মুড়ে বসি তছনছিয়া কৈশোরটা দিয়ে ফেলি; বলি ‘ভালোবাসি’ কাঠ ঠোকরার ঠক ঠক শব্দের মত। ঝড়ে বাধা জ্বর; বাবার পুরাণ পিরান; মায়ের দেয়া জলপট্টি; সব নিয়ে নাও এ আমার অর্ঘ্য। আজন্ম জমানো সুখ। সোনার দ্বীপের লাল কাঁকড়া যেমন নিমেষে উধাও তেমনি শব্দের কণ্ঠ শোনার সাথে নাই হয়ে যায় কবিতাও ।

কবিতার কাছে হাঁটু মুড়ে বসি শেষমেশ দিয়ে দেই আসি আসি করা যৌবনটাও আমার শেষ সম্বল; পাহাড়িয়া কন্যার মত সলজ্জ ভঙ্গিতে ঘোমটা খুলে কবিতা; বেণীতে গুজে ঘাসফুল; মুখে রহস্যময় খয়েরী হাসি। প্রসাদ টুকু নিয়ে; ফের আমি কবিতার কাছে হাঁটু মুড়ে বসি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড