• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাণ্ডুলিপির কবিতা

বিলুপ্ত নগরীর কোন অংশেই কি আমার অস্তিত্ব ছিলো না

  আরিফ জামান

১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১২:১১
প্রচ্ছদ
প্রচ্ছদ : কাব্যগ্রন্থ ‘মন খারাপের বারান্দা’

জলের খেলা

কতবার নিজেকে ধুয়ে দিলাম পবিত্র জলে সে কথা আমার স্রষ্টা জানে! তবে কেনো বারবার নিষিদ্ধ বেড়াজালে আটকে পড়ি? পা পিছলে কর্দমায় লেপটে যায় সারা শরীর। আবার জলের খেলায় নিজেকে শুদ্ধ করি। আমার অন্তিম যাত্রায় তোমরাই জল ছিটিয়ে দিও- আমি আর এ পথ কখনো মাড়াবো না।

জীবাশ্ম

আসহাবে কাহাফের মত ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে বহুকাল ধরে জীবাশ্মের মত পড়ে আছি পৃথিবীতে নেমে আসা ঘোর অন্ধকারে যেদিন হন্তারকের হাত ছুঁয়েছিলো আমার কণ্ঠস্বর আমি সেই থেকে শোকের উচ্চারণগুলি ভুলে গেছি যে রাতে চাঁদের নাভিমূলে কলঙ্কের ছাপ বসেছিলো সে রাতেই আমি ভালবাসার জন্য আত্মাহুতি দিয়েছি বুকের আগুণ তীব্র দহনে কতটা পুড়িয়েছে কেউ তা দ্যাখেনি কতটা রক্তক্ষরণ জমাট বেঁধে হয়েছে জীবাশ্ম কেউ তা বোঝেনি বিলুপ্ত নগরীর কোন অংশেই কি আমার অস্তিত্ব ছিলো না? আমি কি নির্লিপ্ত থেকেই সহস্র যুগ জীবাশ্মের মত পড়ে থাকবো! আমি কি ভুলে যাবো জীবাশ্ম নয়- একদিন আমিও মানুষের মত মানুষ ছিলাম।

কোন একদিন দেখা হোক

কোন একদিন দেখা হোক আমাদের ঋতু বৈচিত্র্যর পালাবদলের হাত ধরে বসন্তের কোন এক মধুর সন্ধ্যায় আমাদের শেষ হোক প্রতীক্ষার অবসান।

আলাপ না হোক তবু দেখা হোক চৌরাস্তার মোড়ে, শহরের অলি ও গলিতে পার্ক, রেস্তেরা,ওভারব্রিজ কিংবা ফুটপাতে শ্রাবণের ঝুম বৃষ্টিতে যাত্রাপথের ছাওনিতে।

হুট করে একদিন দেখা হয়ে যাক আমাদের ঠিক বৈশাখের হঠাৎ তুমুল ঝড়ের মতন যেনো তোমার ও চোখে আমি মুহূর্তে পড়তে পারি হেলেনের ট্রয় নগরী ধ্বংসের ইতিহাস!

একবার শুধু দেখা হয়ে যাক আমাদের নক্ষত্রের মত প্রজ্বলিত সবুজ দীপের কাছে তুমি পৌঁছে গেলে বুঝতে পারবে দেখার আশায় কতদিন ধরে আমি নক্ষত্রের মত জ্বলে আছি।

আর যদি কখনো না হয় দেখা আমাদের রাণী ক্লিওপেট্রার মতন তোমার সুন্দর চোখের সম্মোহনী সৌন্দর্যে আমি যদি না হারায় জানবে কি আমার দু’চোখে জমেছে কতটা মায়ার সাগর!

রূপালী আবাদ

দুর্বিনীত চোখের তারায় জমা অভিমান করতলে নীল বেদনায় বিষাদের ছায়া অকস্মাৎ যদি ভেসে আসে প্রণয়ের গান দীর্ঘ জল গড়িয়ে পাথর, খুঁজে ফিরে মায়া।

অবেলায় কেউ গেলে আর, সে কি ফেরে ঘরে! উদাসীন পথিক বোঝেনা প্রস্থানের মানে নিষ্পলক এই চেয়ে থাকা হারানোর পরে প্রিয়জন না ফেরার কষ্ট শুধু প্রিয়ই জানে।

স্বপ্নময় রঙিন আকাশ হলে বড় ফিকে পরাভূত সৈন্য খুলে ফেলে তার শিরস্ত্রাণ মায়াবতী যাদুর জাহজে কাফেলার দিকে সিনবাদ নাবিক কখন দেবে পরিত্রাণ।

একদিন জোসনার রং ছুঁয়ে ফুলে যাবে চাঁদ আকাশের গায়ে তারাদের হবে রূপালী আবাদ।

মন খারাপের বারান্দা

কোন এক বিষণ্ণ বিকালের ক্ষীণ আলোয় তুমি ঝাপসা চোখে দেখবে আমায় আমি ম্রিয়মাণ হয়ে যাচ্ছি গোধূলি সূর্যের মত অন্ধকারের নিগূঢ় রহস্যের মাঝে তোমার চোখের খুব কাছ থেকে তুমি দেখতে থাকবে সেই হারিয়ে যাওয়া কি অদ্ভুত! মায়ায় জড়াবে তখন তোমার সমস্ত শরীর ও মন অথচ তোমার কিছুই করার থাকবে না। আমি তোমার চোখের জন্য রেখে যাচ্ছি স্মৃতির জোয়ারে আনা সমুদ্রের নোনাজল তোমার রক্তজবা ওষ্ঠের জন্য রেখে যাচ্ছি অসমাপ্ত চুম্বনের এক মধুর যন্ত্রণা! এরপর বহুবছর পরে কোন এক বিষণ্ণ বিকালে তোমার ভীষণ মনখারাপের বারান্দায় আবার দাঁড়াবো তোমার শিয়রে শুধু এ কথা জানাতে স্রষ্টা সাক্ষী আমরা একে অপরকে কখনো ভুলিনি অথচ স্পর্শহীন কেটে গেলো আমাদের অনেক বছর!

আরও পড়ুন- লোডশেডিং এলেই; মনে পড়ে পাপ

ওডি/এসএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড