• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাণ্ডুলিপির কবিতা

তান্ত্রিকের আখড়ায় আসর জমায় হুতুম পেঁচা

  হাসান রাব্বি

১২ জানুয়ারি ২০২০, ১০:০০
কবিতা
প্রচ্ছদ : কাব্যগ্রন্থ ‘পিউ কাঁহা’

জুনিপোকা

ধানক্ষেত পেরিয়ে তালগাছটার মাথায় বসে থাকা রূপালি কুঁপিটা ডুবে গেলে, তুমি ট্যালোপ্যাথিক তন্দ্রায় হা করে থাকো যে আচ্ছন্নতায়। তার গভীরে ক্লিওপেট্রা ঘুরে বেড়ায়। মদ আর মাংশের নেশায় তান্ত্রিকের আখড়ায় আসর জমায় হুতুম পেঁচা। হিংস্রতা আর লোভ; পাঁজরে লুকিয়ে রেখে - সঙ্গমে বিভোর হয় তারা। পৈচাশিকতার ধর্মগ্রন্থে পাপ শব্দটা উহ্য থাকে বলে: যে যার নিজস্ব বীর্যের ভেতরে ঘূর্ণি খায়। মরা কাটাল-ভরা কাটাল দাপিয়ে বেড়ায় মুন্ডুহীন শ্বেত ঘোড়া। ইভ’র পূর্ববর্তী ভ্রমান্ডে ভ্যাকুয়াম লালন করে তৃণ আর জুনিপোকা।

তারা বয়ে আনে আলো এবং ভোজনের পয়গাম।

সহজ যাপনের দিকে

যে চন্দ্রবিন্দু’র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সময়। তার আঙ্গিনায় ফুটে আছে রক্তজবা। যেন আগুন ঝরছে কোমল। হুইসেল বাজিয়ে যায় পাহাড়ী ট্রেন। চাকা করছে বিদ্রোহ পৃথিবীর নাভী’র বিরুদ্ধে।

যেন সময় খেলছে ঘেমে, হৃদয়ঘাতী কোমল কঠোরতা হয়ে।

এসো সাঙ্গ হোক দ্বিচারিতা। হেঁটে চলি আলপথ ধরে।

...... সহজ যাপন দিকে এখানে।

চক্রাকার অভিশাপ

এক শিশি কর্ড মাছের তেল - বায়বীয় মদের বোতল - রংচটা পবিত্র গ্রন্থ; এই হল সঙ্গী। প্রাচীন পৃথিবীর প্রবাল থেকে জন্ম নেয়া একগুচ্ছ ক্রোধ, রক্তের সাথে পান করছে সান্তনা। বিষুবীয়মন্ডলে জেগে আছে দীর্ঘতম রাত। এখানে চিৎকার করছে - অদৃশ্য এক শিশু। ভয়ার্ত মুহূর্ত ভারী হতে হতে উপাসনালয়ে প্রদীপ যায় নিভে।

এখন তুমি যাত্রা করো শুরু - তুর পাহাড়ের বুকে।

চেরিফল

সমস্ত মাংসপেশী শিথিল করে দেয়। যে আকর্ষনে; সৌন্দর্যে যার- বিদ্যুৎ খেলে যায় রক্তনালী বয়ে। চেরিফল- তোমার ঠোঁট জোড়া যেন চেরিফল।

ক্ষুধা-র সমীকরনে - পরস্পরের খিদে ভাগ করে বাঁচা। একজোড়া চেরিফলের বিনিময়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া। সমস্ত সত্তা জুড়ে নেশা ধরে যায়- আবেশে।

সহস্র আলোকবর্ষ কেটে যায় মোহে। চেরিফল- তোমার ঠোঁট জোড়া যেন চেরিফল।

দ্যা লাস্ট কনফেশন

দ্বিতীয় মৃত্যুর পর, নিঃসঙ্গতায় উন্মাদ চিত্তে নতজানু ঈশ্বরের আরশে -

লিপিকার মেলে ধরলেন বিগত জনমের ইশতেহার, একপ্রস্থ আয়ু পোড়ানোর ঘ্রাণ। দগদগে ক্ষত। যেন ভেসে বেড়াচ্ছে সমস্ত আরশ।

পাঁজর ভাঙ্গার স্তবক পাঠে কেঁপে কেঁপে উঠলেন শ্রোতামন্ডলী, ধাত্রী বিষ্ময়ে বারবার হাত দেখতে লাগলেন।

সবিশেষ, দ্যা লাস্ট কনফেশন - এক টুকরো জ্যোতি হরণের স্বীকারোক্তি।

হে ঈশ্বর, সেই প্রলয় রজনীর চূড়ান্ত ক্ষণে, যাত্রা ধ্বনি বেজে ওঠার প্রাক্কলে, যে জ্যোতি বহনের অভিযোগে নরক যাত্রী।

তুমি সাহারার মরুদ্যান খুঁড়ে দেখো। কালো পতাকাবাহীর হাতে, যাদের শিরচ্ছেদ হয়েছে। তাদের বুকে সে জ্যোতি জ্বলে।

যে শিশুরা মরেছে বোমার আঘাতে, হাসপাতালে অক্সিজেন মাস্কের অভাবে, সমুদ্রে নিরাপত্তাহীনতায় - তাদের পাঁজর খুলে দেখো সে জ্যোতি জ্বলে।

জ্যোতি হরনের অপরাধে পাপিষ্ঠ আমি। পাপবোধ নেই আজ। সেই সব কিশোরীর হাতে তুলে দিয়েছি জ্যোতি। যাদের বিকিয়েছে মীনা বাজারে,যৌনদাসী করে।

সৃষ্টির আদিতে তোমার নাম জপে। যারা নিরপরাধীর খুন মেখেছে হাতে। ভস্ম করেছি তাদের জ্যোতির্বলয়ে।

আরও পড়ুন- আগামী ভোরের আগে শেষ হবে গোরখনন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড